কলকাতা:  চারিদিকে নির্বাচনী প্রচারের হিড়িক। টেলিভিশনের পর্দা থেকে শুরু করে পাড়ার মাইক, প্রায় সব জায়গাতেই কবজা করছে ভোটের তরজা। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সব দলেরই এখন পাখির চোখ বাংলা। নেতা-নেত্রীদের মুখে বাংলার উন্নয়নের কথা, ভাষা নিয়ে কাজ করার কথা। কিন্তু এতে কতটা প্রভাবিত হচ্ছে বাংলা?


‘বঙ্গ সংস্কৃতি নিয়ে যাঁরা চর্চা করছেন, তাঁদের এইসব নিয়ে কথা বলার কোনও অধিকার নেই’ বলছেন নাট্যকার বিভাস চক্রবর্তী। নির্বাচনী প্রচারে অনবরত ব্যবহৃত হচ্ছে ভুল বাংলা, পোস্টার জুড়ে ভুল বানান। বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তার ছাপ বিভাসের গলায়। বললেন, ‘যাঁরা বাংলা ভাষার উন্নয়নের জন্য মঞ্চে গলা ফাটাচ্ছেন, তাঁরা নিজেরা বাংলার জন্য কতটা করেছেন? বাংলা ভাষার প্রতি আরও অনেক যত্নশীল হওয়া উচিত ছিল। সবাই মুখে বলেছেন, বাংলার মত মণিমুক্ত যে ভাষায় আছে, তার এত অবহেলা প্রাপ্য নয়।’


সোমবার সাহাগঞ্জের ডানলপ ময়দানে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই সভা থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে তিনি উদ্বোধন করেন দক্ষিনেশ্বর-নোয়াপাড়া মেট্রোর। এই লাইনের সুবাদে জুড়ে গেল দুই তীর্থক্ষেত্র, দক্ষিণেশ্বর ও কালীঘাট। সেই সভায় এসেও বাংলায় কথা বলেন নরেন্দ্র মোদি। এর আগে বিশ্বভারতীর সমাবর্তন সহ একাধিক জায়গায় বাংলা বলতে শোনা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে। বিভাস বলছেন, ‘বাংলা ভাষা নিয়ে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের কথা বলার অধিকার নেই সে ভূমিপুত্রই হোক আর বহিরাগত। আমি বলব সমস্ত রাজনৈতিক খবর বা নেতাদের বক্তব্য রাত্রের দিকে দেখানো উচিত। যে সময় বাচ্চারা সাধারণত টিভি দেখে না। রাজনৈতিক বক্তৃতায় যে সমস্ত ভাষা প্রয়োগ করা হয় তা যে কোনও শিশুর রুচিকে নষ্ট করতে পারে।’


‘বাঙালি আত্মবিস্মৃত জাতি। সমস্ত সংস্কৃতির মান রাখতে গিয়ে বাংলা সংস্কৃতি পাঁচমিশালি সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। বাংলা ভাষা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে। তাতে এসে মিশেছে বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রভাব। তাকে দূরে সরিয়ে চলবার কথা বলছি না। কিন্তু বাংলা ভাষা এখন ঘেঁটে গিয়েছে। বাঙালিরা যত্নশীল না হলে ভবিষ্যৎ বিপদের মুখে,’ বলছেন বিভাস চক্রবর্তী।