তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা: দোল যেমন রঙের উৎসব, তেমন তো প্রেমেরও। বসন্তে রং তো রঙিন করে তোলে মনকেও.. কখনও আবার ফিরিয়ে দেয় কত রঙিন স্মৃতিকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়তো আর রং খেলা হয় না.. তবে দোল মনে করিয়ে দিয়ে যায়, ফেলে আসা বসন্তের স্মৃতি। অভাবে সংসারে রং খেলার বিলাসিতা ছিল না। কেবল একবারই লাল আবির নিয়ে সাহস করে গিয়েছিলেন প্রেমিকার বাড়ি। তারপরে? দোলের রঙিন স্মৃতি ফিরে দেখলেন প্রবীণ অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Paran Banerjee)। 


কোনোদিনও দোল খেলার প্রচলন ছিল না তেমন.. স্বচ্ছলতাও ছিল না। রাস্তায় নেমে বন্ধুদের সঙ্গে দোল খেলা হত না। তবে ব্যতিক্রম হয়েছিল একবার। ফেলে আসা স্মৃতিতে ডুব দিয়ে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, 'মাকে হারিয়েছি অনেক ছোটবেলায়। শৈশব কেটেছে বেশ অভাবেই। পরনির্ভরশীল ছিলাম, তাই দোল খেলাটাকেও মনে হত বিলাসিতা। সেই সামান্য স্বচ্ছলতাও ছিল না। তবে ব্যতিক্রম হয়েছিল একবারই। তখন স্কুল পাশ করেছি সদ্য সদ্য। বুঝতে পারছি.. মনের মধ্যে কী যেন একটা গোলমাল হয়ে গিয়েছে। ভাল লেগেছিল একজনকে, বলা যায় প্রেমেই পরেছিলাম। সেও আমারই কলেজে পরত। একবার দোলের দিন, খুব সাহস করে লাল আবির নিয়ে তার বাড়ি পৌঁছলাম। একেবারে রাস্তার ওপরেই ওদের বাড়ি ছিল। দরজা খোলা, সাহস সঞ্চয় করে ঢুকেই পড়লাম। বড়দের পায়ে আবির দিয়ে প্রণাম করলাম, তবে সেটা অজুহাত মাত্র।  তারপরে পৌঁছে গেলাম সেই ভালবাসার মানুষটার কাছে। মুখে আবির দিলাম। তারপরে হঠাৎ কি মনে হল, লাল আবির লাগা বুড়ো আঙুলটা খুব সাহস করে টেনে দিলাম সিঁথি দিয়ে। বললাম, 'এটা যেন থাকে।' আমার দিকে তাকিয়ে, চোখ বড় বড় করে বলল.. 'বদমাইশ'!


সত্যিই ছিল সেই আবির। সিঁদুর হয়েই। একটু বিরতি নিয়ে পরাণ বললেন, 'আমার সেই প্রেমিকাই ছিলেন আমার ৫২ বছরের জীবনসঙ্গী। ২০১৯ সালে স্ত্রীকে হারিয়েছি। এখন মনে পড়ে, স্ত্রীকে বহুবার বলেছি, আমাদের একে অপরকে কখনও বলা হল না, 'তোমায় আমি ভালবাসি'। স্ত্রী হেসে বলতেন, 'থাক আর বলতে হবে না'।


আরও পড়ুন: Soumitrisha Exclusive: ছোটবেলায় অনুমতি ছিল না বাড়ি থেকে বেরনোর, বড়পর্দায় পা রাখার পরে দোলে কী পরিকল্পনা সৌমিতৃষার?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।