নয়াদিল্লি: সময়ের সঙ্গে বদলেছে জীবন এবং জীবিকার ধরন। চাকুরিজীবী বলতে স্কুল শিক্ষক বা ব্যাঙ্ক অথবা রেলকর্মীকে বোঝায় না আজকাল। কর্পোরেট সংস্থা, বিজ্ঞাপনী সংস্থা এবং প্রযুক্তি সংস্থায় চাকুরিজীবীদের সংখ্যা বেড়েছে। ৯টা-৫টার চাকরির দিনও প্রায় উঠে যাওয়ার জোগাড়। সেই আবহেই বাজারে নয়া আমদানি 'ভুতুড়ে চাকরি'। ইংরেজিতে এই 'ভুতুড়ে চাকরি'র নাম 'Ghosh Job'. (Ghost Jobs)


চাকরির যে সমস্ত ওয়েবসাইট রয়েছে বা সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে যে সমস্ত জব বোর্ডের হদিশ মেলে, সেখানে প্রায়শই এমন 'Ghost Job'-এর বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। লোভনীয় বেতন, হাজারো রকমের সুযোগ-সুবিধারও উল্লেখ থাকে। নামের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এই চাকরিকে আজগুবিই বলা যায়। কারণ চাকরির ওয়েবসাইট, জববোর্ড এমনকি সংশ্লিষ্ট সংস্থার ওয়েবসাইটে শূন্যপদ পূরণের বিজ্ঞাপন থাকলেও, বাস্তবে ওই শূন্যপদের অস্তিত্বই থাকে না আসলে। (Job Search Tips)


এ নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। জানা গিয়েছে, সংস্থার তরফে হঠাৎই একদিন ডাকা হয় তাঁকে। বলা হয়, শূন্যপদ পূরণে চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ পর্ব চালিয়ে যেতে হবে। কোন পদের জন্য ইন্টারভিউ নিতে হবে জানতে চাইলে, 'Ghost Job'-এর কথা বলা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংস্থায় নতুন করে নিয়োগের কোনও নির্দেশই নেই। কিন্তু সেকথা বলতে গেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানান, আগামী দিনে শূন্যপদ তৈরি হতে পারে, তার জন্যই ইন্টারভিউ নেওয়া চালিয়ে যেতে হবে। কখন প্রয়োজন পড়বে বলা যায় না। সে ক্ষেত্রে হাতের কাছে প্রতিভাবান চাকরিপ্রার্থী থাকলে, তাঁদের নিয়োগে সুবিধা হবে। 


আরও পড়ুন: Success Story: ডাক্তারি ছেড়ে সিভিল সার্ভিসে, একবারেই UPSC-তে পঞ্চম স্থান ! প্রেরণার নাম ময়ূর হাজারিকা


কিন্তু ভবিষ্যতে আদৌ ওই পদ খালি হবে কি না, বার বার  ইন্টারভিউ দেওয়া ব্যক্তিকে আদৌ ওই চাকরি দেওয়া হবে কি না, সেব্যাপারে কোনও গ্যারান্টি নেই যদিও। অর্থাৎ খাতায় কলমে 'Ghost Job' আসলে আজগুবিই। শূন্যপদ পূরণের বিজ্ঞাপন দিলেও, নিয়োগের কোনও পরিকল্পনাই থাকে না সংস্থাগুলির। বাজারে যোগ্য চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন কি না, তা যাচাই করতেই কখনও কখনও এই ধরনের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীরা বিষয়টি বুঝতে পারেন না। তাই ইন্টারভিউ দেওয়ার পর সুখবরের আশায় বসে থাকেন। ইন্টারভিউ হয়ে যাওয়ার পর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ধরনের সংস্থা থেকে সাড়াশব্দ মেলে না।


এ নিয়ে হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের তরফে একটি গবেষণা চালানো হয়। ওই গবেষণায় দেখা যায়, করোনা অতিমারির সময় বহু মানুষই চাকরি ছেড়ে দেন, চাকরি চলেও যায় অনেকের। সংস্থাগুলিতেও অর্থনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়, অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। ভবিষ্যতেরনতুন লোক নিয়োগ নিয়েও অনিশ্চয়তায় ভোগে সংস্থাগুলি। সেই থেকেই 'Ghost Job'-এর রমরমা বলে মত গবেষকদের। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও, কী চাকরি, কাজের ধরন কী, কিছুরই উল্লেখ থাকে না। বরং কিছু সুযোগ-সুবিধার উল্লেখ থাকে, যা দেখে আকৃষ্ট হবেন চাকরিপ্রার্থীরা। 


কিন্তু চাকরির বিজ্ঞাপন আসল না নকল, সাধারণ চাকরি প্রার্থীরা ফারাক বুঝবেন কী করে, তারও উপায় বাতলে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লোক নিয়োগের প্রয়োজন থাকলে চাকরির বিজ্ঞাপনে খুঁটিনাটি সবকিছুর উল্লেখ থাকে। চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতা, দায়-দায়িত্ব লেখা থাকে বিশদে। তার উল্টোটা যদি হয়, বুঝতে হবে ভুয়ো বিজ্ঞাপন। কোনও সংস্থার বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করলেন হয়তো, তার পর কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস কেটে গেলেও জবাব এল না। বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেগুলিও ভুয়ো চাকরি বলে দেখা গিয়েছে। একই পদে লোক চেয়ে বা বার, বহু দিন ধরে বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও, সন্দেহের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তাই চাকরি খুঁজতে গিয়ে এই 'Ghosht Job'-এর ফাঁদ এড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI