কলকাতা: 'আজকের মেনুটা কী? আলুপোস্ত থাকছে তো?'... দুই বন্ধুর মধ্যে সহজ কথোপকথন যেন। এক বন্ধুর জন্মদিনে অপরজনের অকপট প্রশ্ন। এই দুই বন্ধুর একজন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অন্যজন ঋতুপর্ণ ঘোষ! বাংলা চলচ্চিত্রে নিজস্ব ধারায় অবলীলায় গল্প বুনে যেতেন যিনি, আজ তাঁর জন্মদিন। লাইটস, ক্যামেরা, অ্যাকশানের বাইরেও প্রগাঢ় বন্ধুত্ব ছিল ঋতুপর্ণ-প্রসেনজিতের। আজ বন্ধুর জন্মদিনে এক রাশ মনখারাপ নিয়ে কলম ধরলেন আরেক বন্ধু। লিখেও ফেললেন একটা ঝরঝরে চিঠি। তবে, পাঠাতে পারলেন না। ৮ বছর আগে কোনও এক অচিনপুরে পাড়ি দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ। ঠিকানা রেখে জাননি প্রিয় বন্ধু প্রসেনজিতের কাছেও।
ইনস্টাগ্রামে ছোট্ট রিল ভিডিওর আকারে মনের সব কথা যেন উজাড় করে দিলেন অভিনেতা। কেবল লিখলেনই না, সেই লেখা পড়েও ফেললেন নায়ক। নিজের কন্ঠস্বর আর ভিডিওর সঙ্গতে বানিয়ে ফেললেন আবেগ মেশানো কোলাজ। একদিনে ফুটে উঠছে দুই বন্ধুর একসঙ্গে কাটানো সুসময়ের ছবি, আর অন্যদিকে কালো কালির আঁচড়। প্রসেনজিৎ লিখছেন,
'প্রিয় ঋতু,
তুই তো জানিসই সেভাবে কখনও কাউকে চিঠি লেখা হয়ে ওঠেনি আমার। তোর মত ভালো লিখতেও পারি না। তবে আজকের দিনে চেষ্টা করলাম একটু। ভুল হলে রাগ করিস না কিন্তু।
তোর সৃজনশীলতার রঙে তুই অন্যভাবে রাঙিয়েছিলি চলচ্চিত্র জগৎকে এবং অবশ্যই তোর নিজের সৃষ্টিকে। আর আমার জীবনে তোর যে অবদান, কয়েকটা শব্দে তা বোঝানো সম্ভব নয়.. কিন্তু বন্ধু, তুই তো জানিসই। বুঝিসই তুই।
আজকের মেনুটা কী? আলুপোস্ত থাকছে তো? আর নতুন স্ক্রিপ্টটা কতদূর? শেষ হলে শোনাস কিন্তু। অপেক্ষায় থাকব। ভালো থাকিস। শুভ জন্মদিন।
ইতি, বুম্বা'
গোটা চিঠিটাই পড়ে শোনালেন প্রসেনজিৎ। কমেন্টবক্সে চোখ রাখতে দেখা গেল, অনুরাগীদেরও মন ছুঁয়েছে এই লেখা। অনেকেই স্মরণ করে নিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষকে। অনেকে আবার প্রসেনজিতের জন্য উপচে দিলেন ভালোবাসা। ভিডিওর ক্যাপশানে ছোট্ট ৩ শব্দ লিখলেন প্রসেনজিৎ। 'শুভ জন্মদিন ঋতু।'
সব বলেও যেন চিঠির পরতে পরতে জমে রইল হাজার না বলা কথা, অভিযোগ, অভিমান, ভালোবাসা। প্রিয় বন্ধুর কাছে সবটা উজাড় করে বলে দিলেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা যায় না যে..