কলকাতা: অভিনেত্রীর রহস্যমৃত্যুতে নয়া মোড়। এক আয়কর আধিকারিকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু পরিবারের। খতিয়ে দেখা হচ্ছে অভিনেত্রীর মোবাইল ফোনের কললিস্ট, আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ। খোঁজ চলছে অভিযুক্ত ব্যক্তির।
অভিনেত্রীর পরিবার ও প্রতিবেশীদের দাবি, আড়াই মাস আগে এক আয়কর আধিকারিকের সঙ্গে বিতস্তার সম্পর্কের কথা জানতে পারেন বাড়ির লোকেরা। আপত্তি করায় গড়ফা থানার পি মজুমদার রোডের বাড়ি ছেড়ে বাইপাস লাগোয়া অভিজাত আবাসনে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে চলে আসেন বিতস্তা।
পুলিশ জানতে পেরেছে, বাড়ি ছেড়ে চলে এলেও মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বিতস্তার। ৮-৯দিন ছাড়া ফোনে কথা হত দু’দজনের। সরস্বতী পুজোর পরের দিন শেষ কথা হয়। পরিবারের দাবি, বেশ কয়েকদিন বিতস্তার ফোন পাননি। ফোন করলেও বেজে গিয়েছে। কসবায় যে জায়গায় বিতস্তা ড্রাইভিং শিখতেন, সেখানেও যাচ্ছিলেন না।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ির লোকেরা বিতস্তার ফ্ল্যাটে আসেন। কিন্তু দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় সন্দেহ হয়। খবর দেন প্রতিবেশীদের। ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে পরিবার ও প্রতিবেশীরা খবর দেন পুলিশে। সন্ধ্যায় গড়ফা থানার পুলিশ এসে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে ঝুলন্ত দেহ।
কিন্তু যাঁর জন্য পরিবার-পরিজনকে ছড়ে চলে আসার সিদ্ধান্ত নিতেও পিছ পা হননি ২৮ বছরের অভিনেত্রী, কী এমন ঘটল, যে পরিণতি হল এমন মর্মান্তিক? পরিজনদের দাবি, ওই আয়কর আধিকারিক বিবাহিত ছিলেন। তাই সম্প্রতি সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন বিতস্তা। কিন্তু সম্পর্ক রাখার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন, উত্যক্ত করছিলেন ওই ব্যক্তি। তার জেরেই এই পরিণতি।
আত্মহত্যার প্রয়োচনা দেওয়ার অভিযোগে বুধবার গড়ফা থানায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, বিতস্তার বাঁ হাতের শিরা কাটা ছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, হাতের শিরা কাটার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতেই গলায় দড়ি দেন অভিনেত্রী। ঘর থেকে একটি ব্লেড উদ্ধার হলেও পুলিশের দাবি, উদ্ধার হয়নি কোনও সুইসাইড নোট। পুলিশ জানতে পেরেছে, বর্ধমানের বাসিন্দা ওই আয়কর আধিকারিক কলকাতায় থাকতেন। তাঁর খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।
পাশাপাশি, খতিয়ে দেখা হচ্ছে, বিতস্তার ফোনের কললিস্ট, ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট, আবাসনের সিসিটভি ক্যামেরার ফুটেজ ও ভিজিটরস রেজিস্টার। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলেই স্পষ্ট হবে মৃত্যুর কারণ।