তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা: তাঁর সাক্ষাৎকারে বারে বারে উঠে আসে বাবা-মায়ের কথা, আবেগে ভাসেন, স্মৃতি হাতড়ান। ছবি আর ব্যক্তিগত জীবন হামেশাই কথা বলতে বলতে মিশে যায়। আসলে ক্যামেরার সামনে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করাই যাঁদের কাজ, ক্যামেরার পিছনে সেই মানুষগুলো মাঝে মাঝেই বলেন এমন অনেক কথা, যেখানে ফুটে ওঠে তাঁর ব্যক্তিত্ব, চিন্তাভাবনা, দর্শন। নতুন ছবি 'বিজয়ার পরে' নিয়ে কথা বলতে গিয়ে, এবিপি লাইভ (ABP Live) যেন খুঁজে পেল এক অন্য স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)-কে।


১২ জানুয়ারি মুক্তি পাবে অভিজিৎ শ্রীদাস পরিচালিত ছবি 'বিজয়ার পরে'। সেই ছবিতে মমতাশঙ্কর (Mamata Shankar) ও দীপঙ্কর দে (Dipankar Dey)-র মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করবেন স্বস্তিকা। বড়পর্দায় মুক্তি পাওয়ার আগে এই ছবি প্রদর্শিত হয়েছিল কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে। প্রশংসিতও হয়েছিল। এবার বড়পর্দায় সাধারণ দর্শকদের জন্য আসবে এই সিনেমা। কতটা প্রত্যাশা রয়েছে স্বস্তিকার? অভিনেত্রী বলছেন, 'কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি দেখার জন্য প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ হয়েছিল। আশা করি মানুষের ভাল লাগবে, কারণ এই গল্পটা আমাদের সবার। ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে পড়াশোনার কারণে বা কাজের জন্য বাড়ির বাইরে চলে যাবে, এটা এখন রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা তা মেনেও নিয়েছি। আমরা একা হয়ে যাওয়াটার সঙ্গেই অভ্যস্থ হয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বাবা-মায়ের যে ঠিক কতটা একা লাগে.. সেই নিয়েই গল্প বলবে এই ছবি।'


নতুন পরিচালক, ছবি পছন্দের সময় স্বস্তিকার কাছে কি সবচেয়ে প্রাধান্য পায় চিত্রনাট্য? অভিনেত্রী বলছেন, 'আমি সবসময়েই নতুন পরিচালককে সুযোগ দিতে চাই। তবে এই ছবিতে কাজ করার অন্যতম কারণ হল মমপিসি (মমতাশঙ্কর) ও দীপঙ্কর জেঠুর (দীপঙ্কর দে)- সঙ্গে কাজ করার সুযোগ। আসলে আমাদের বাবার প্রজন্মের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা যেন ধীরে ধীরে সংখ্যায় কমে আসছেন। বাবা চলে গিয়েছেন ৪ বছর হল। ওঁদের কাছে থাকলে যেন মনে হয় বাবার মতো। দেখতে, গলা স্বর সবটাই যেন বাবার মতোই। আমার বাবা-মা নেই। এখন মনে হয়, একটা বয়সের পরে সবার বাবা-মাকেই দেখতে একরকম লাগে। ছোট থেকেই ওঁদের দেখে বড় হয়েছি বলে সম্পর্কটা কেবল কাজের নয়, পারিবারিকও। সবাইকেই জেঠু, পিসি, কাকি বলে ডাকি। কিন্তু ওঁদের সঙ্গে খুব কম কাজ করা হয়। শ্যুটিংয়ের সময় ওঁদের সান্নিধ্যে থাকাটাই তো আমার কাছে ভীষণ বড় পাওয়া।'


দীর্ঘদিন অভিনয় করছেন স্বস্তিকা, তবে তিনি চিরকালই আবেগপ্রবণ। ব্যক্তিগত কথা বলতে গিয়ে বারে বারেই তাঁর মুখে বাবা-মায়ের কথা শোনা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়াল জুড়েও ভেসে ওঠে মনখারাপের সব কথা। পর্দায় বাবা-মা ডাকতে গিয়ে কখনও গলা ধরে আসে? স্বস্তিকা বলছেন, 'এই ছবিটার শ্যুটিংয়ের সময় ভীষণ আবেগপ্রবণ হয়েছিলাম আমি। আসলে এখন তো আর সিনেমা ছাড়া ব্যক্তিগত জীবনে বাবা-মা বলতে পারি না। তাই ওই অভিনয় করার সময়টুকু মনে হয়.. আমার ও অভিভাবক আছে, মাথায় বড়দের হাত আছে। যে না পাওয়াটা নিজের জীবনে রয়েছে, সেটা কাজের মধ্যে, ছবির মধ্যে দিয়ে যদি অল্পবিস্তর মিটিয়ে নেওয়া যায়...। আসলে আমাদের বাবাদের প্রজন্মে এই ধারা ছিল না যে একসঙ্গে কাজ না করলে মুখ দেখাদেখিই হবে না আর। বড়দের সঙ্গে ভীষণ পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। বাবা, সৌমিত্রজ্যেঠু আরও যে যে মানুষগুলোর সঙ্গে ছবির বাইরেও সম্পর্ক ছিল.. তাঁরা চলে যেতে ইন্ডাস্ট্রিতে ভীষণ অভিভাবকহীন মনে হয়েছে।'


 






আরও পড়ুন: Aryan Khan: 'শটস' হাতে নববর্ষকে স্বাগত আরিয়ান খানের, জমকালো পার্টির ভিডিও ভাইরাল


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।