নিবেদিতা দে
খরস্রোতা এক নদীর নাম বাবুল— এভাবেও বর্ণনা করা যায় তাঁকে। এতটাই রঙিন, গতিময় তাঁর জীবন ও জীবনযাপন। আর সেই জীবনে, যাপনে যে বিষয়টিকে তিনি সর্বোচ্চ আসনে মর্যাদা দিয়েছেন তার নাম— আবেগ!
আজ থেকে প্রায় পঁচিশ বছর আগে, তিনি যখন কলকাতা থেকে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্কের চাকরি ছেড়ে মুম্বই পাড়ি দেন, যখন নিশ্চিত নিরাপত্তা ছেড়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন অজানা জগতের টানে, গায়ক হওয়ার উদগ্র বাসনায় তখনও যেমন তাঁর জীবনে আবেগই প্রধান ভূমিকায় ছিল, আজও তেমনই। প্যাশনই তাঁকে পরিচিতি দিয়েছে গায়ক এবং একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ভারীশিল্প প্রতিমন্ত্রীর ভূমিকায়।
আবেগের বশে তিনি যেমন শান্তিবনে গাঁধীজিকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুরোধে, রবীন্দ্রসংগীত ‘ধায়ে যেন মোর সকল ভালবাসা’ মুখস্থ গেয়ে ফেলেন, তেমনই ঠিক করে ফেলেন, নাহ্ একটাই জীবন একটাই সুযোগ ...মেয়েটিকে প্লেনেই সেমি প্রপোজ করে নম্বর নিতে হবে।
বিমানের মৃদু আলোয় তাঁর দেখা হয় তাঁর হবু স্ত্রী রচনার সঙ্গে। উজ্জ্বল গভীর চোখ। বিদ্যুৎ খেলে যায়। তার পর হোয়াটসঅ্যাপে রোজ গান পাঠিয়ে পাঠিয়ে সম্পর্ক আরও জোরালো করেন।
গাঢ় হতে থাকে প্রেম। দু’ বছর প্রেমের শেষে গত বছর পরিণয়।
বিয়ের পরে নিজেই দিল্লি থেকে ড্রাইভ করে স্ত্রীকে দেখাতে নিয়ে চলেন ‘তাজমহল’। মন্ত্রী মশাই চলেছেন, স্বভাবতই তার সঙ্গে যাবে সিকিওরিটি। কিন্তু তাতে কী, তার মাঝেই বাবুল তাঁর টিপিক্যাল হিরোইজম নিয়ে উপস্থিত। গানে, খুনসুটিতে মাতিয়ে রাখেন বউকে।
সুইৎজারল্যান্ডে হানিমুনে গেলেন। সেই সময়ে ঠাট্টার ছলে বলেছিলেন, ‘‘একেবারে হিন্দি ছবির মতো হানিমুন হবে, বুঝলেন।’’
সত্যিই হিন্দি ছবির মতো হয়ে গেল বাবুলের জীবন!
উত্তরপাড়ার গঙ্গার ধারের সংগীত পরিবারের সন্তান হয়ে যেভাবে মুম্বইয়ের আলোয় ঝাঁপ দিয়ে পেয়েছিলেন ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’-এর সুযোগ, তেমনই যেন প্যাশনে আস্থা রেখে পেয়ে গেলেন মন্ত্রিত্বের পরিচিতি। এর মাঝে বেশ কিছু ছবিতে নায়কের চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন।
আর আজ সেই জীবনে নতুন রং। দ্বিতীয় বারের জন্য বাবা হতে চলেছেন তিনি।
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘পোস্ত’ ছবির একটি চরিত্রে অভিনয় করছেন বলে শুক্রবারই স্ত্রীকে নিয়ে প্রিমিয়ারে আসবেন বাবুল। সকলেই জেনে যাবে এই সুখবর! তাই আনন্দ প্লাসের তরফ থেকে আগাম শুভেচ্ছা!