কলকাতা: বঙ্গ। বাঙালি। দুর্গা পুজো। একেবারে হলমার্ক বসানো তিন শব্দবন্ধ, যার ওপর বঙ্গজাতির কপিরাইট ছিল, আছে এবং থাকবে। সময়ের সঙ্গে তার ভোল বদলেছে ঠিকই, তবে ভাঁটা আসেনি। এবারও তার নড়চড় হবে না। করোনাকালে বিধি নিষেধ থাকবে, তবে পুজো হবে।
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়া। সেদিন জলসায় সম্প্রচারিত হবে নতুন চিত্রনাট্য ‘অকাল বোধন’। রামায়ণ-কে আধার করে রাবণ বধের আগে রামের হাতে মহাময়ার অকাল বোধনই এবারের গল্প। উপস্থাপনায় সব থেকে বড় চমক মিমি চক্রবর্তী। ‘তিনিই দুর্গা’। সহ অভিনেতা, অভিনেত্রীদের মধ্যে থাকছেন মধুমিতা সরকার, জিতু কমল, রাজেশ রায়। মধুমিতা অভিনয় করবেন সীতার চরিত্রে। জিতু ও রাজেশ যথাক্রমে অভিনয় করবেন রাম ও রাবণের চরিত্রে। অতীতে মহালয়ায় বিশেষ উপস্থাপনায় কাজ করেছেন মধুমিতা। জিতুকে রূপোলি পর্দায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে শিবের চরিত্রে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে মিমিই ‘নতুন’।
দেখুন: মিমি ‘মা দুর্গা’, ‘সীতা’ মধুমিতা, মহালয়ায় আর কোন চরিত্রে রয়েছেন কে কে
এখন প্রশ্ন, মিমিকেই কেন বেছে নেওয়া হল দুর্গার চরিত্রে? অতীতে সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন ধ্রুপদী নাচে পটিয়সী শিল্পী এই ধরনের চরিত্রে বাঙালির মন জয় করেছেন। ১৯৯৪ থেকে ২০১৪, সর্বাধিকবার দুরদর্শনে দুর্গা হয়েছেন তিনি। পরে ইন্দ্রাণী হালদার, দেবশ্রী রায়, কোয়েল মল্লিক, শ্রাবন্তী, শুভশ্রীর মতো বাজার সফল নায়িকারাও মহালয়া করেছেন। তবে মননশীল বাঙালির মনে আঁচড় কাটতে পারেননি। এখন প্রতিযোগিতা আরও বেড়েছে। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাঁদের টিআরপি অনুযায়ী চরিত্র বেছে উপস্থাপনা তৈরি করে। আর সেকারণেই ‘জলসার বেস্ট চয়েস মিমি’।
পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “মানুষ দুর্গার মধ্যে লার্জার দ্যান লাইফ কাউকে দেখতে চান। সেক্ষেত্রে সিলভার স্ক্রিনের অভিনেতা, অভিনেত্রীরা যেহেতু সেই অতিবাস্তব জীবনের প্রত্যাশাকে তুষ্ট করেন সেকারণেই নামকরা মুখ থাকলে সুবিধাই হয়।”
এক্ষেত্রে চরিত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বাজার কতটা অগ্রাধিকার পায়? কোনও রকম দ্বিধাদ্বন্দ্ব না রেখেই পরিচালক সাফ জানান,
(অকাল বোধন-এর পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়)
এই সময়ে টিআরপির মতো মানদণ্ডে বিচার করেই যে সিংহভাগ ক্ষেত্রে চরিত্র বাছাই করা হয়, এ নিয়ে কোনও সংশয় নেই পরিচালকের। অতীতে শ্রাবন্তী, শুভশ্রী, কোয়েলের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে, এখন মিমির ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। তবে হ্যাঁ, যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ যে চূড়ান্ত পেশাদার, সেকাথাও অবলীলায় জানিয়েছেন পরিচালক। ‘অকাল বোধন’, সম্পূর্ণ ‘নতুন একটা স্ক্রিপট’। এখানে নাচ, অভিনয়ের থেকেও বেশি প্রাধান্য পেয়েছে গল্প বলা। তবে মিমি এই কাজেও যে নিঁখুত পেশাদারিত্ব রেখেছন তা কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের কথায় ‘প্রশংসনীয়’।