কলকাতা: বয়স তখন মাত্র ৫। মায়ের হাত ধরে এনটি ওয়ান স্টুডিওতে হাজির হয়েছিল একরত্তি মেয়েটি। চারপাশে তখন অনেক বাচ্চা, সেই সব দেখে একটু ঘাবড়েই গিয়েছিল মেয়েটি। তবে সেই মেয়ে ছোট থেকেই বেশ মিশুকে। গুটি গুটি পায়ে পৌঁছে গেল পরিচালকের ঘরে। তখনও বোঝার ক্ষমতা হয়নি কত বড় মাপের পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে যাচ্ছে সে।
ঘরে ঢুকেই তাঁর চুল ধরে পরিচালক বললেন, 'গ্রামের মেয়ের অভিনয় করবে, এত ছোট চুল!' সদ্য চুল কাটা হয়েছিল সেই সময়ে মেয়েটির। শেষে পরিচালক বললেন, 'ভালো করে হাসো, চকোলেট দেব।' ব্যাস চকোলেট প্রেমী মেয়ে খিলখিল।
পরেরবার দেখা হল বোলপুরে। শ্যুটিং সেটে। পরিচালক তখন স্বমহিমায়... লাইটস, ক্যামেরা, অ্যাকশন। তখন বুঝলেন, সত্যিই জীবনের প্রথম শ্যুটিংটা করছেন তিনি। বোলপুরের একটা সাঁওতালি গ্রামে শ্যুটিং চলছে। চড়া রোদ, তার মধ্যেই গাছের সঙ্গে মোড়া দড়ি দিয়ে টিনের দোলনা বাঁধা হয়েছে। সেখানে দুলতে হবে মেয়েটিকে। শট শুরু.. হাতে রীতিমতো ছ্যাঁকা লাগছে। মেয়েটি কিন্তু পাকা অভিনেত্রীর মতোই শট দিচ্ছে। কেবল পরিচালক বুঝলেন, একরত্তির হাসিটা মেকি। বার বার শ্যুটিং থামিয়ে একরত্তিকে এসে জল খাওয়াচ্ছিলেন পরিচালক। পরম মমতায় হাতে ক্রিম লাগিয়ে দিচ্ছিলেন..
আরও পড়ুন: Bonny and Koushani in Antarjaal: থ্রিলার ছবিতে 'অন্তর্জাল' বুনছেন নায়িকা কৌশানি, সঙ্গে বনিও
শান্তিনিকেতনে শ্যুটিং, একসঙ্গে থাকা, খাওয়া দাওয়া সবই ছবির মতো পরিষ্কার মনে আছে অভিনেত্রী অঙ্গনা রায়ের (Angana Roy)। জীবনের প্রথম পরিচালক তরুণ মজুমদারের (Tarun Majumdar) মৃত্যু তাঁকে যেন এক ঝটকায় ফিরিয়ে দিয়েছিল ছোটবেলার সেই সব স্মৃতিতে। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে, বাড়ির অমতেও পেশা হিসেবে বেছেছেন যে অভিনয়কে, সেই অভিনয়ের বীজ তাঁর ভিতরে প্রথম বপন করেছিলেন তরুণ মজুমদার স্বয়ং।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স বেড়েছে অভিনেত্রীর। শুধু টলিউড নয়, কাজ করেছেন একাধিক বলিউড অভিনেতা অভিনেত্রীদের সঙ্গেও। সামনেই একাধিক ছবি ও ওয়েব সিরিজের মুক্তি রয়েছে অঙ্গনার। বাঙালি অঙ্গনা বেশি কাজ করতে চান টলিউডেই। কিন্তু পাশাপাশি বলিউডেও কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে অভিনেত্রীর। তবে তাঁর কথায়, 'আমার কোনও তাড়া নেই। প্রত্যেকটা মানুষের নিজস্ব সময় থাকে। আমি নিজের মতো কাজ করছি।'