কলকাতা: কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে এসে তাঁর মুখে বাংলার কথা, সোনালি সময়ের কথা। ২৯তম চলচ্চিত্র উৎসবে এসে প্রথমেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)-কে তিনি ধন্যবাদ জানালেন তাঁকে চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। তারপরে কখনও আবেগপ্রবণ হলেন, কখনও ফিরে দেখলেন সোনালি সময়কে। মঞ্চে উঠে, কয়েক মিনিটেই দর্শকদের মন ছুঁলেন অনিল কপূর (Anik kapoor)।
এদিন সবাইকে প্রণাম জানিয়ে অনিল কপূর বলেন, 'এই চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে, আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে সম্মানিত বোধ করছি। কলকাতা আমার কাছে কেবল একটা শহর নয়। একটা সফর.. যেখান থেকে আমার সিনেমার প্রতি ভালবাসার শুরু।' এরপরে ভাঙা ভাঙা বাংলায় অনিল বলেন, 'আপনারা জানতে আশ্চর্য্য হবেন.. আমার সিনেমার সফর কিন্তু শুরু হয়েছিল এই কলকাতা থেকেই। ৪২ বছর আগে আমি মুম্বই থেকে হাওড়া স্টেশনে এসেছিলাম ট্রেন ধরে। তারপরে বাস ধরে বালিগঞ্জের একটা গেস্ট হাউসে। লিড কাস্ট হিসেবে আমার প্রথম ছবি, 'কাঁহা কাঁহা সে গুজর গ্যায়া'-র ফান্ডিং করেছিল তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের সরকার। জানি না, বাংলার সেই ফান্ডিং ছাড়া আমার সিনেমার কেরিয়ার কখনও শুরু হত কি না। হাওড়া আসার পরের ৪৫ দিন আমার বাড়ি ছিল বালিগঞ্জের সেই গেস্টহাউজ আর কলকাতার পথঘাট ছিল আমার খেলার মাঠ। সেই সময় থেকেই কলকাতা আমার মনে নিজের জায়গা তৈরি করে নেয়।'
এরপরে অনিল কপূর সেই সমস্ত তারকাদের নাম করেন, যাঁদের শিকড় বাংলায় হলেও যাঁরা গোটা বিনোদন দুনিয়ায় রেখে গিয়েছেন নিজেদের পায়ের ছাপ। বিনোদন দুনিয়াকে নিয়ে গিয়েছেন অন্য উচ্চতায়। তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন অনিল। অনিল বলেন, 'বাংলা থেকে বিনোদন দুনিয়ায় তারকা আসার এই প্রথা এখনও জারি রয়েছে। আজ আমি সম্মান জানাতে চাই এক কিংবদন্তিকে। তিনি উত্তমকুমার। আমার একটা ছবি আছে 'নায়ক' বলে। আপনারা সবাই সেই ছবিকে সুপারহিট করে তুলেছিলেন। তবে পরে আমি জানতে পারি, এই একই নামে বাংলায় একটা ছবি রয়েছে। 'নায়ক', পরিচালনা করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। আমি পরে সেই ছবিটি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। এতদিন আগে ছবিটি তৈরি হওয়া সত্ত্বেও, সেটি আজও একইরকমভাবে প্রাসঙ্গিক। আজ, এই মঞ্চ থেকে এক 'নায়ক' এক 'মহানায়ক'-কে এবং চিরকালের সেরা পরিচালক সত্যজিৎ রায়কে সম্মান জানাতে চাই। এই শহর আমার কেরিয়ারের একেবারে শুরু থেকে আমার সঙ্গে থেকেছে, আমায় ভালবেসেছে।'
আরও পড়ুন: Salman on Mamata: এত ছোট বাড়িতে থাকেন মমতা? কালীঘাটে গিয়ে সলমন দেখেছিলেন...