কলকাতা: বর্তমানে তিনি ছোটপর্দা ও বড়পর্দার জনপ্রিয় মুখ। একাধিক বিনোদনের মাধ্যমে কাজ করেছেন তিনি। তবে এত সহজ ছিল না তাঁর জীবনটা। একটা সময়ে নেশামুক্তির জন্য রিহ্যাবে যেতে হত তাঁকে। দিনের পর দিন সেখানে থাকতে হত। ২৩ জানুয়ারি নাকি তাঁর নেশামুক্তির ১৭ বছর পূর্তি। আর সেই উপলক্ষ্যেই পুরনো বছরগুলো ফিরে দেখলেন অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা একটু পোস্ট করে, সেই সফরের দিনগুলি, কঠিন সময়ের কথা ভাগ করে নিয়েছেন অভিনেতা।
অভিনেতার আসল জন্মদিন ২৯ ডিসেম্বর। কিন্তু ২৩ জানুয়ারি দিনটি ভীষণ বিশেষ অভিনেতার কাছে। অনিন্দ্যর কথায়, 'আমার কাছে এখনও জলের মতো স্পষ্ট ২০০৮ সালে আজকের এই দিনটা । আর দেখতে পাই বলেই হয়তো আজকে এটা লিখতে পারছি । ব্যাঙ্কসাল কোর্টে হাজিরা দিয়ে আমাকে রিহ্যাবে ফিরতেই হত । ৯ টার বনগাঁ লোকাল আর আমাকে যেতে হত হাবড়া । সঙ্গে ছিল শেষবারের মতন নেশা করব বলে একটু ব্রাউন সুগার, পাতি বাংলায় কয়েকটা পাতা আর একটা সিরিঞ্জ, একটু তুলো একটা চামচ । হাবড়া স্টেশনে নেমে একটু এগোলেই সেই রিহ্যাব যেখান থেকে আমার ভালো থাকার লড়াই শুরু হয়েছিল।' গল্পের শেষটা এত সহজ নয়, একের পর এক রিহ্যাবেও কাজ হয়নি অভিনেতার। যেদিন রিহ্যাব থেকে ছাড়া পেতেন, সেদিনই আবার নেশা করতেন। কিছুতেই নিজেকে শুধরোতে পারতেন না। মায়ের গয়না, বাবার সমস্ত সঞ্চয় শেষ। মধ্যবিত্ত পরিবারের সম্বল শেষ হয়ে গেলেও ফিরিয়ে আনা যায়নি অনিন্দ্যকে। তবে চোখের সামনে চারজন সঙ্গীকে মরতে দেখে ভয় পেয়েছিলেন অভিনেতা। তবু তাঁর নেশা ছাড়তে সময় লেগেছিল ৬-৭ বছর। বর্তমানে অবশ্য স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন অভিনেতা।
অনিন্দ্যর কথায়, 'আজ যখন রাস্তায় লোকে সেলফি তুলতে চায় , অটোগ্রাফ চায় , ভালোবাসা দেয় তখন আমি নিজেকে দেখি আর পুরোটাই কেমন স্বপ্নের মতন লাগে । আদৌ এটা সত্যি হচ্ছে তো ? কোথায় সেই ছেলেটা আর কোথায় আজকের আমি । হয়তো আরও কিছু করতে পারতাম । হয়তো আরও একটু জীবনটা গোছাতে পারতাম , পারিনি কিন্তু সেটা নিয়ে আমার কোনো খারাপ লাগা নেই । যা আছে , যেটুকু সম্মান আর ভালোবাসা আমাকে সমাজ ফিরিয়ে দিয়েছে আমি সেটা নিয়েই খুশি।'
সোশ্যাল মিডিয়ায় খোলা চিঠি লিখেছেন অনিন্দ্য, আর সেই চিঠিতে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন: Saif Ali Khan News: সেফকে মারতে মারতে ৩ টুকরো হয়ে গিয়েছিল ছুরি! খোঁজ মিলল সেই ভাঙা অংশের