কলকাতা: একের পর এক ছুরিকাঘাত। ৩ টুকরো হয়ে গিয়েছিল ধারাল ছুরি। সেফ আলি খানের (Saif Ali Khan) ওপর হামলার ঘটনায় এবার মিলল তাঁর ওপর যে ছুরি দিয়ে হামলা করা হয়েছিল, তার তৃতীয় টুকরোটি। গত ১৬ জানুয়ারি নিজের বাড়িতেই হামলার শিকার হন অভিনেতা সেফ আলি খান। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে মহম্মদ শরিফুল নামে এক ব্যক্তিকে। অভিযোগ, এই ব্যক্তিই ছুরি দিয়ে হামলা চালিয়েছিল সেফ আলি খানের ওপর। যে ছুরি দিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল, তার একটি অংশ ভেঙে ঢুকে গিয়েছিল সেফের পিঠে। আরও একটি অংশ জিজ্ঞাসাবাদের সময় মিলেছিল সেফ ও করিনা কপূর খান (Kareena Kapoor Khan)-এর বাড়ি 'সদগুরু শরণ' থেকে। আর এবার উদ্ধার হল ছুরির তৃতীয় অংশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেফের বাড়ি থেকে প্রায় ১.৪ কিলোমিটার দূরে পাওয়া গিয়েছে ছুরির তৃতীয় অংশটি। ওই এলাকা ফরেন্সিক পরীক্ষা করে দেখেন বিশেষজ্ঞেরা।


গত ১৬ জানুয়ারি সেফ আলি খানের বাড়িতেই তাঁর ওপর হামলা চালান মহম্মদ শরিফুল ইসলাম। জানা গিয়েছিল, সেফের ছোট ছেলে জেহ-র ঘরের সঙ্গে লাগোয়া যে শৌচাগার রয়েছে, সেখানেই লুকিয়ে ছিল ওই আততায়ী। প্রথম তাকে দেখতে পান জেহ-র পরিচারিকা। তিনি ভয় পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন ও বেল বাজিয়ে দেন। সেই বেলের আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন সেফ। এরপরেই তাঁকে ছুরি দিয়ে হামলা করে মহম্মদ শরিফুল ইসলাম। আজ এই হামলার ঘটনায় সামনে এসেছে আরও বিভিন্ন সব চমকপ্রদ ঘটনা। 


সেফ আলি খানের অ্যাপার্টমেন্টে ঢোকার আগে নাকি আরও ৩টে অ্যাপার্টমেন্টে ঢোকার চেষ্টা করেছিল মহম্মদ শরিফুল ইসলাম। তবে কোথাওই সুবিধা করে উঠতে পারেনি। সদগুরু শরণ, অর্থাৎ যে বিল্ডিংয়ে সেফ করিনার বাড়ি, সেখানে ঢোকার সময়ে মহম্মদ শরিফুল ইসলাম দেখে, মাত্র ৩জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। সবাই নাকি ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন। সেই সুযোগে, পাঁচিল টপকে বিল্ডিংয়ে ঢোকে মহম্মদ শরিফুল ইসলাম। যাতে কোনও আওয়াজ না হয়, সেই কারণেই নিজের জুতো খুবে ব্যাগে নিয়ে নিয়েছিল সে। বিল্ডিংয়ের করিডোরে কোনও সিসিটিভি ছিল না। ফলে সে খুব সহজেই পৌঁছে যায় সেফ আলি খানের বাড়িতে। 


এর আগেই শরিফুলকে নিয়ে সেফ আলি খানের বাড়িতে যান মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখার তদন্তকারী আধিকারিকেরা। গত সোমবার ঘটনার পুননির্মাণ করা হয় ইতিমধ্যেই। গত ২২ জানুয়ারি বুধবার বান্দ্রা পুলিশ শরিফুলকে নিয়ে বান্দ্রা তালাও এলাকায় গিয়েছিল। বান্দ্রা স্টেশনের কাছাকাছি একটি জায়গা থেকে সেই ছুরির তৃতীয় অংশটি উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও এর আগে আঙুলের ছাপ, অভিযুক্তের ব্যবহৃত টুপি, মোবাইল ফোন, ইয়ারফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।


সেফ আলি খানের বাড়িতে ঢোকার পরে, জেহ-র শৌচাগারে লুকিয়েছিল মহম্মদ শরিফুল ইসলাম। তবে সে নাকি জানত না, ওই বাড়িটি সেফ আলি খানের। অভিনেতার হঠাৎ এসে পড়া তার কাছে ভীষণ অপ্রাত্যাশিত ছিল। সেই কারণেই সে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। ছুরি দিয়ে বারে বারে আঘাত করতে থাকে অভিনেতাকে। সেফ পড়ে গেলে সে পালিয়ে যায়। সেই সময়ে তাকে ধরা যায়নি। ঘটনায় ৩ দিনের মাথায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।


আরও পড়ুন: Saif Ali Khan: ধৃত শরিফুলের সচিত্র পরিচয়পত্র হাতে এল পুলিশের, কী কী জানা গেল সেফের ওপর হামলাকারী সম্পর্কে?