মুম্বই: বলিউডের নামী পরিচালক অনুরাগ বসু (Anurag Basu)। 'মার্ডার', 'বরফি', 'জগ্গা জাসুস' এবং আরও অনেক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শককে। ২০০৪ সালে তাঁর রক্তে ক্যানসার (Blood Cancer) ধরা পড়ে। সেই সময়কার এবং পরবর্তীতে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়ের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা জানালেন তিনি।
ক্যানসারের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুললেন অনুরাগ বসু-
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অনুরাগ বসু জানালেন যে, ২০০৪ সালে তিনি যখন জানতে পারেন যে তিনি লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত, সেই সময় তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। এমনকি সেই সময় চিকিৎসকেরাও জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি আর সপ্তাহ দুয়েক বাঁচবেন। 'সায়া' এবং 'মার্ডার' পরিচালনার পর পরবর্তী ছবির কাজ শুরু করার মুখেই অনুরাগ বসু তাঁর অসুস্থতার কথা জানতে পারেন। তাঁর রক্তে ক্যানসার ধরা পড়ে। তিনি বলছেন, 'সেই সন্ধ্যেটার কথা মনে আছে, যখন মুকেশ ভট্ট আমাকে শ্যুটিং প্যাক আপ করার কথা বলেন। যে মুকেশ ভট্টর কাছ থেকে কেউ এমন কথা কেউ কখনও শোনেননি। আমি যখন হাসপাতালে যাই, আমার বাবা-মায়ের মুখটা দেখেই আন্দাজ করেছিলাম যে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে।'
আরও পড়ুন - Shah Rukh Khan: 'যেন আমরা কত বড় অপরাধী', আরিয়ানের গ্রেফতারির পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে শাহরুখের মন্তব্য ভাইরাল
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সামান্য মাথার যন্ত্রণা এবং দুর্বলতা ছিল। এরইমধ্যে ইমরান হাসমি ও অন্যান্যদের সঙ্গে গল্পগুজবে মেতে যান অনুরাগ বসু। ভয়ঙ্কর দিনগুলোর অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলছেন, 'পরিস্থিতি এত দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে যে কোনও ওষুধ কাজ করছিল না। আমার বাবা-মাও আমার সঙ্গে দেখা করা বন্ধ করে দেন। কারণ তাঁরা আমার মুখোমুখি হতে পারছিলেন না। আমার শরীরের ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে এত পরিমাণ রক্তপাত হচ্ছিল যে বহু মানুষকে আমায় রক্ত দিতে হয়েছিল। মহেশ ভট্ট স্যর এসেছিলেন আমার সঙ্গে দেখা করতে। আমার কপালে হাত রেখেছিলেন। কিন্তু ওঁর হাত কাঁপছিল। এমনিতে উনি খুবই শান্ত প্রকৃতির মানুষ। অনুপম খের এসেছিলেন দেখা করতে। ওঁদের দেখে আমি অনুভব করেছিলাম, বড় কোনও সমস্যা হয়েছে। আমার মুখ ফুলে গিয়েছিল। আমার আমার শ্বাস প্রশ্বাসও অনুভব করতে পারছিলাম না। আমার আশেপাশের মানুষেরা একটাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন. কারণ, কোনও চিকিৎসাই কাজ করছিল না।'
স্ত্রী জানতেন না অসুস্থতার কথা-
'বরফি' পরিচালক জানাচ্ছেন যে, তাঁর স্ত্রী জানতেন না তাঁর অসুস্থতার কথা। অনুরাগ বসুর ক্যানসারের খবর তাঁর স্ত্রী পান নিউজ চ্যানেল থেকে। তিনি বলছেন, 'টাটা হাসপাতালে ভর্তির সঙ্গে সঙ্গে আমাকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। আমি কোনও বেড পাইনি। সুনীল দত্ত আমার জন্য বেডের ব্যবস্থা করে দেন। টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে যে আমাকে চিনত, সবাই তাদের পরিচিতদের ফোন মেসেজ করে আমাকে বাঁচানোর জন্য রক্ত দেওয়ার আবেদন করেছিল। এমনকি আমি জানিও না আমাকে কত কত মানুষ রক্ত দিয়েছেন। আমার শিরায় শিরায় কার কার রক্ত বইছে।'