তোর্ষা ভট্টাচার্য্য, কলকাতা: বারাসাতে জন্ম তাঁর, বড় হয়ে ওঠাও সেখানেই। শহরতলিতে বসেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন সুরের জগতে কাজ করার, মায়ানগরীতে পা রাখার। এরপরে গান শেখা, গান শোনা, চর্চা, অডিশন... যখন তিনি সোনু নিগমের (Sonu Nigam) বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছিলেন গানের চুক্তি পাকা করে, তখনও যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। 'মা কালী' (Maa Kali) ছবিটির মুখ্যভূমিকায় দেখা যাবে রাইমা সেন (Raima Sen) ও অভিষেক সিংহ (Abhishek Sinha)-কে। তবে বলিউডের এই ছবির রয়েছে আরও একটি বাংলা-যোগ। এই ছবিতে সুরকার ও গায়ক হিসেবে কাজ করেছেন অনুরাগ হালদার (Anurag Halder)। তাঁর সুরেই গান গেয়েছেন সোনু নিগম ও কৈলাশ খের (Kailash Kher)। ছবি মুক্তির আগে সেই অভিজ্ঞতাই এবিপি লাইভকে (ABP Live) শোনালেন অনুরাগ। 


গানের প্রতি অনুরাগের অনুরাগ এক্কেবারে ছোটবেলা থেকেই। সঙ্গীতশিল্পী বলছেন, 'বারাসাত থেকে মুম্বইতে যাওয়া, সেখানকার মানুষদের সঙ্গে কাজ করা, গোটা সফরটা সহজ ছিল না। তবে আমি এটাকে কখনোই স্ট্রাগল বলতে চাই না। ছোটবেলা থেকেই এই সমস্ত শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছি আমি। এই গানের সফরে যে মানুষদের গান শুনে বড় হয়েছি, সেই মানুষগুলো আমার সুরে গান গেয়েছেন এর থেকে বড় আর কিছু হতে পারে না। এই ছবিতে আমরা 'ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায়' রবীন্দ্রসঙ্গীতটাকে নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এই গানটির মধ্যের একটি অংশ আমার সুর দেওয়া। লিখেছেন কুণাল ভার্মা। সেই গানটিই গেয়েছেন সোনু নিগম। প্রথম যেদিন কথা বলতে গেলাম সোনু নিগমের সঙ্গে, এখনও সেই দিনটা মনে আছে। তার আগে ফোনে ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। কাজটা করতে উনি রাজি হয়ে গিয়েছিলেন তখনই। এরপরেই ওঁর বাড়িতে কথা বলতে যাই। মনে আছে, আমরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার সময় উনি রাস্তা পর্যন্ত এসেছিলেন আমাদের এগিয়ে দিতে। গাড়ি চলে না যাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়েও ছিলেন। কিংবদন্তিরা বোধহয় এমনই হন, মাটির কাছাকাছি। কেবল গায়ক সোনু নিগম নন, ওঁর জীবনধারা, মূল্যবোধও দাগ কেটে গিয়েছে আমার মনে।'


কেবল সোনু নিগম নয়, কৈলাস খেরের সঙ্গেও কাজ করেছেন অনুরাগ। বলছেন, 'ছোটবেলায় মামার বাড়িতে যেতাম, সেখানে একটা অ্যালবাম খুব চলত। সেটা কৈলাস খেরের। ওঁর গান শুনেই আমি বড় হয়েছি। শুনেছিলাম, উনি কাজ পছন্দ না হলে রাজি হন না গান গাইতে। তবে আমার সঙ্গে উনি একেবারেই কাজ করতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। শুনেছিলাম, উনি আমার এক সহযোগীকে আমার সম্পর্কে উনি বলেছিলেন, 'এই ছেলেটা অনেক দূর যাবে, ওকে ছেড়ো না।' এই কথাগুলো আমি যখন শুনছি, নিজেরই বিশ্বাস হচ্ছিল না। এই অভিজ্ঞতাগুলো চিরকালের।'


আরও পড়ুন: Arijit Singh: যেন পাড়ার ছেলে... স্ত্রীকে নিয়ে জিয়াগঞ্জে নিজের ভোটকেন্দ্রে ভোট দিলেন অরিজিৎ