কলকাতা: ২৫ বছরের কেরিয়ারে ২০ বছর ছোটপর্দায় কাজ করেছেন তিনি। টেলিভিশনই তাঁকে পরিচিতি দিয়েছে, জনপ্রিয়তা দিয়েছে, ভালোবাসা দিয়েছে। তাই পুজোর আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ছোটপর্দায় ফেরার। কেবল অপেক্ষা ছিল পছন্দের চরিত্র আর গল্পের। ধারাবাহিক 'লক্ষ্মী কাকিমা সুপারস্টার'-এর গল্প শুনে মনে হয়েছিল, এই চরিত্র ছুঁয়ে যাবে টেলিভিশনের দর্শকদের। তাই লাল পেড়ে হলুদ শাড়ি পরে, মাথায় এক থোকা রঙ্গন গুঁজে টেলিভিশনের পর্দায় 'লক্ষ্মী' হয়ে ফিরছেন অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita Adhya)।


চার বছর পরে হঠাৎ ছোটপর্দায় ফেরার সিদ্ধান্ত কেন? এবিপি লাইভের প্রশ্নের উত্তরে অপরাজিতা বলছেন, 'আমি যেমন ছবিতে কাজ করি, সেই ধরণের ছবি কম হচ্ছে। আর আমি খুব বেছে ছবি করছি। তাই ছবির সংখ্যাও বেশ কম। সেইজন্য পুজোর আগে থেকেই ভেবেছিলাম ছোটপর্দায় ফিরব। আমার একটা বড়সংখ্যক দর্শক রয়েছেন যাঁরা সিনেমাহলে গিয়ে ছবি দেখতে পারেন না। তাঁদের মধ্যে যেমন বয়স্করা রয়েছেন আবার অনেকে গ্রামের দিকে থাকেন। সেখানে কাছাকাছি সিনেমাহল নেই। অনেকেই আমার ছবি দেখার পর আমার প্রশংসা করেছেন, আর তারপরেই প্রশ্ন করেছেন, 'তোমায় টেলিভিশনে আবার কবে দেখব?' বুঝতে পারতাম, মানুষ আমায় ছোটপর্দায় দেখতে চাইছেন। তাছাড়া আমার তো নিজস্ব আবেগও রয়েছে ছোটপর্দার ওপর। আমায় পরিচিতি, মানুষের ভালোবাসা এনে দিয়েছে টেলিভিশনই।'


আরও পড়ুন: 'বন্ধু যীশুকে শুভেচ্ছা', 'বাবা বেবি ও..' ছবির ট্রেলার শেয়ার করে লিখলেন দক্ষিণী তারকা চিরঞ্জীবী


প্রোমোয় ধারাবাহিকের গল্পের ঝলক দর্শকদের বেশ নাড়া দিয়েছে। লক্ষ্মীর চরিত্রটা ঠিক কেমন? অপরাজিতা বলছেন, '২০২২ সালে এসে কেউ হাত গুটিয়ে বসে নেই। গ্রামের দিকে আমার জা'য়েরা থাকেন। তাঁরাও প্রত্যেকে সংসার চালানোর পাশাপাশি সংসারকে সাহায্য করার জন্য কিছু না কিছু করছেন। কেউ শাড়ির ব্যবসা, কেউ শিক্ষকতা। লক্ষ্মীও ঠিক এমনই একটা ঘরোয়া চরিত্র। সে মুদির দোকান চালায়। আবার সেইসঙ্গে দশভূজা হয়ে সংসারও সামলায়। দু পয়সা বেশি রোজগার হবে বলে ঘুগনি নিয়ে মেলায় চলে যেতেও দু'বার ভাবে না। চরিত্রটার প্রস্তাব আসার পরে আমার স্বামী আমায় বলেছিলেন, 'তোমার যা ব্যক্তিত্ব তাতে এই ধরণের চরিত্রে অভিনয় করবে?' আমি বলেছিলাম, করব। কারণ আমি নিজেও এইরকম। কখনও বসে থাকতে পারি না। শ্যুটিং না থাকলে খেলনা বানাই, রান্না করি, আরও কত কি! পর্দায় লক্ষ্মীর কাছে মুদির দোকানটা কেবল দায়িত্ব নয়, সে কাজটাকে ভীষণভাবে ভালোবাসে। অনেকেই তার দোকানে আসে জিনিস কিনতে নয়, পরামর্শ নিতে। লক্ষ্মী তাদের কথা শোনে। ঘরে কোথাও না কোথাও তার একটা দুঃখ লুকনো আছে। লক্ষ্মী যেন হালকা হয়, ভালো থাকে ওই দোকানকে ঘিরেই।'


অপরাজিতার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করছেন দেবশঙ্কর হালদার। ১১ বছর পরে ধারাবাহিকে ফিরছেন তিনিও। বিপরীতে দেবশঙ্কর হালদার অভিনয় করবেন জেনে কেমন লেগেছিল? অপরাজিতা বলছেন, 'আমি চ্যানেলকে বলেছিলাম, আমার বিপরীতে কে অভিনয় করছেন জানাতে। লুক সেটের দিন জানলাম দেবুদা। উনি আমার খুব পছন্দের অভিনেতা। একরকম ওনার ভক্তই আমি। থিয়েটারের মঞ্চে দেবুদা আমার কাছে ঈশ্বর। ওনার সঙ্গে কাজ করা একটা অন্যরকম ভালোলাগা।' প্রোমো শ্যুটে গিয়ে দুই অভিনেতার কী কথা হল? অপরাজিতা হেসে ফেললেন। তারপর বললেন, 'একদম সময় পাওয়া যায় না শ্যুটিংয়ে কথা বলার। আর দেবুদা খুব কম কথার মানুষ। আমিও কাজের সময় কম কথা বলি। কেবল দেবুদা আমায় বললেন, 'থিয়েটারটা বন্ধ, অনেক ভেবেই ১১ বছর পর টেলিভিশনে অভিনয় করার কথা ভাবলাম। কিন্তু আমার বেশ ভয় করছে।' আমি খালি বললাম, তুমি কি বলছো দেবুদা, ভয় তো আমারও করছে..'