নয়াদিল্লি: জ্ঞান হওয়া থেকেই যেন তাঁর জীবন জড়িয়ে গিয়েছিল সঙ্গীতের সঙ্গে। বাবা ছিলেন তামিল সঙ্গীত পরিচালক। মাত্র ৪ বছর বয়স থেকেই বাবার স্টুডিওতে কী বোর্ড বাজাতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু বাবার কাছে বেশি শিক্ষা নেওয়ার সময় পেলেন না তিনি। মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে বদলে যায় তাঁর জীবন। সংসারে আর্থিক অনটন, বাবার বাদ্যযন্ত্র ভাড়া দিয়েই পেট চলত তখন। কিছুদিন পর থেকে, সংসার চালাতে নিজেই কাজ শুরু করেন তিনি, কিন্তু এর চূড়ান্ত প্রভাব পড়ে পড়াশোনায়।


স্কুল কামাই হতে থাকে, ক্ষতি হতে থাকে পড়াশোনারও। শেষমেষ পরীক্ষায় অনুতীর্ণ। স্কুল থেকে তাঁর মাকে ডেকে বলা হয়, বাড়ির কাজ নয়, কিশোরের মন দেওয়া উচিত পড়াশোনায়। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর মাকে বলা হয়েছিল তাঁকে যেন স্কুলে না পাঠিয়ে রাস্তায় ভিক্ষা করতে পাঠানো হয়। এরপরে স্কুল পরিবর্তন করে নেন তিনি। 


নতুন স্কুলে পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে অন্য খাতে বইতে শুরু করে তাঁর জীবন। সঙ্গীত তাঁকে ছেড়ে যায়নি কখনও। বন্ধুদের সঙ্গে মিলে একটি ব্যান্ড তৈরী করেন তিনি। এরপরে মায়ের সঙ্গে পরামর্শ করেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেন, ডুব দেন সুরের জগতে। প্রথমে কী বোর্ড বাজানো দিয়েই শুরু হয়েছিল তাঁর কেরিয়ার। বিভিন্ন ব্যান্ডের সঙ্গে পিয়ানো বাজাতেন তিনি। ধীরে ধীরে একাধিক বাদ্যযন্ত্রে দক্ষ হয়ে ওঠেন। 


আরও পড়ুন: Anjan Dutt: গোয়েন্দার সঙ্গে প্রেম করছেন তনুশ্রী? অঞ্জন দত্তের পরিচালনায় নায়ক সুপ্রভাত


মাস্টার ধনরাজের কাছে সঙ্গীতশিক্ষা শুরু করেন তিনি। ১১ বছর বয়সে অর্কেস্ট্রায় যোগদান করেন তিনি। ভারতীয় টেলিভিশনের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে জিঙ্গল তৈরি করে নিজের কেরিয়ার শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি করতে থাকেন ছোট ছোট সঙ্গীত পরিচালনার কাজও। ১৯৯২ সালে মণি রত্নমের ছবি 'রোজা'-তে সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্ব পান তিনি। আর তারপরেই ম্যাজিক। এই ছবির গান প্রত্যেক দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। সুরের আকাশে ঝলমল করে ওঠে এক নতুন প্রতিভার নাম, এ আর রহমান ( A R Rehman)। 


এরপর ঝুলিতে এসেছে একাধিক পুরস্কার। তাঁর সুর মূর্ছনায় মজেছেন আট থেকে আশি। আজ সেই সুরের যাদুকরের জন্মদিন। সাফল্যে শিখরে পৌঁছনোর সফরটা নেহাত সহজ ছিল না তাঁর জন্য। আজ তিনি অনেক মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা। এবিপি লাইভের তরফ থেকে 'মোজার্ট অফ মাদ্রাজ' ('Mozart of Madras')-কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।