মুম্বই: অতিমারি কাটিয়ে মঞ্চে ফেরা। যেন কয়েক যুগ পর স্বাভাবিক জীবনের ছোঁয়া। আবু ধাবির ইয়াস দ্বীপেই দীর্ঘদিনের উপোস ভাঙবেন বাংলার গায়ক, অরিজিৎ সিংহ। অতিমারী পরিস্থিতির পর এই প্রথম, আগামী ১৯ নভেম্বর, আবু ধাবির মঞ্চে অনুষ্ঠান করবেন অরিজিৎ। 


করোনা পরিস্থিতিতে আড়ালে থেকেও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন অরিজিৎ। অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে তা পৌঁছে দিয়েছেন অনুরাগীদের কাছে। অতিমারী পেরিয়ে এবার মঞ্চে ফেরার পালা। সংস্কৃতি এবং পর্যটন বিভাগ থেকে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে গান গাইবেন তিনি। পাঁচ বছর পর আবু ধাবিতে অনুষ্ঠান করবেন অরিজিৎ। একটি সাক্ষাৎকারে অরিজিৎ সিংহ বলছেন, 'অতিমারী পরিস্থিতির পর এটা প্রথম আমার লাইভ পারফরম্যান্স হতে চলেছে। এই শো-এর অংশীদার হতে পেরে আমি সত্যিই ভীষণ খুশি।'


অরিজিৎ আরও বলেন, 'কঠিন সময়ে নিজেকে মানসিকভাবে শক্ত রাখার একমাত্র উপায় হয়েছিল আমার গান। ইউএই-র মানুষদের উষ্ণ অভ্যর্থনা সবসময় আমায় মুগ্ধ করে। ওখানে অনুষ্ঠান করতে আমার সবসময় ভালো লাগে। পাঁচ বছর পর ওখানে অনুষ্ঠান করব ভেবেই ভালো লাগছে।'


এই অনুষ্ঠানের টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে আজ থেকেই। লাইভ অনুষ্ঠান হলেও, সেখানে কড়াভাবে মানা হবে নিয়ন্ত্রণবিধি। 


প্রসঙ্গত, মে মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন সঙ্গীতশিল্পীর মা।  করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। শরীরে অন্যান্য সমস্যাও ছিল। ইকমো সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাঁকে। কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসা সত্ত্বেও বাঁচানো যায়নি ৫২ বছরের অদিতি সিংহকে।


হাসপাতালে থাকাকালীন রক্তের প্রয়োজন হয়েছিল অরিজিৎ-এর মায়ের। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দেখে রক্ত সংগ্রহে এগিয়ে এসেছিলেন কলকাতার মানুষরাই। রক্ত পাওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে অনুরাগীদের ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন গায়ক। সেসময়ে কলকাতার বাইরে ছিলেন তিনি। অরিজিতের সেই পোস্টে তাঁর মায়ের সুস্থতা কামনা করে কমেন্ট করেছিলেন অনুরাগীরা। সেখানে অরিজিৎ লিখেছিলেন, 'যাঁরা আমায় সাহায্য করতে চাইছেন, তাঁদের অনেক ধন্যবাদ। তবে আমার যশ বা খ্যাতির জন্য কিছু করতে যাবেন না। এখন খুব জরুরি মানুষ হিসাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। কারও একার পাশে নয়।'


সোশ্যাল মিডিয়ায় সচরাচর নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করেন না অরিজিৎ। তবে এই কঠিন সময়ে তাঁর মাকে সাহায্য করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি গায়ক। তার সঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন, সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা। কিছুদিন আগেই একটি পোস্টে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের জন্য প্লাজমা দানের অনুরোধ করেছেন গায়ক।