কলকাতা: লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় যেন অসহ্য হয়ে উঠেছিল তাঁর পরিচালক সত্তা। আর তাই অতিমারির প্রকোপ একটু কমতেই একসঙ্গে চারটি ছবি নিয়ে কাজ করছেন তিনি। তবে চারটি ছবি প্রায় চার গোলার্ধের। একে অপরের থেকে একেবারেই আলাদা। শুধু তাই নয়, পরিচালনার সঙ্গে সঙ্গে সাহিত্যচর্চাও করতে হচ্ছে তাঁকে। তিনি অরিন্দম শীল (Arindam Sil)। টলিউডের প্রথম সারির এই পরিচালক আপাতত ব্যস্ত ব্যোমকেশ (Byomkesh), 'মহানন্দা (Mahananda)', 'খেলা যখন (Khela Jokhon)' ও শবরদের নিয়ে।
সদ্য ঘোষণা হয়েছে তাঁর দুটি ছবির মুক্তির দিন। ব্যোমকেশ ও 'খেলা যখন'। 'মহানন্দা'-র মুক্তির দিন ঘোষণা হয়েছে আগেই। 'খেলা যখন'-এর গল্প এখন এডিট টেবিলে। আর ব্যোমকেশের শ্যুটিং নিয়ে পরিকল্পনা করছেন পরিচালক। এবিপি লাইভকে অরিন্দম বললেন, 'বিশুপাল বধ' গল্পটা নিয়ে এবারে ব্যোমকেশের ছবি। এর আগে আমি যে তিনটি ব্যোমকেশ করেছি, তাদের প্রেক্ষাপট ছিল বাইরে। এই প্রথম ব্যোমকেশের গোটা শ্যুটিংটাই হবে কলকাতায়। গল্পটা শুরু একটা নাটকের মঞ্চ থেকে। থিয়েটার পাড়ায় শ্যুটিং হবে। তবে এবার আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল বিশুপাল বধ অসম্পূর্ণ গল্প। খুনিকে খুঁজে বের করতে হবে আমাকেই। তবে এত ব্যোমকেশ পড়ার পর, ছবি নিয়ে কাজ করার পর, আমার চরিত্রটার সঙ্গে একটা অদ্ভুত সম্পর্ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। গল্পটা অসম্পূর্ণ হলেও, শুরুতেই লেখক আভাস দিয়েছেন কে খুনি হতে পারে। আমি চিত্রনাট্যে যাকে খুনি করেছি, আমার মনে হয়, গল্পটা শেষ করলে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাই করতেন। রাজনৈতিক অস্থিরতা যে সাংস্কৃতিক অবক্ষয়ের কারণ হয়, সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করব ছবিতে। ব্যোমকেশ কেবল গোয়েন্দা গল্প নয়, তৎকালীন সমাজকেও তুলে ধরার চেষ্টা করে। নকশাল আন্দোলনের অস্থিরতা যে বাংলার থিয়েটারের অবক্ষয় এনেছিল সেটা তুলে ধরার চেষ্টা করব।'
এবার অরিন্দমের ছবিতে নতুন অজিত সুহত্র মুখোপাধ্যায়। এই বদলের কারণ? পরিচালক বলেন, 'সুহত্র অত্যন্ত প্রতিভাবান অভিনেতা। ওকে আমার অজিত অজিত লাগে। এখন ব্যোমকেশের যে পর্যায়, তাতে তার একটু বয়স বেড়েছে। অজিত, সত্যবতীর সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ আরও গাঢ় হয়েছে। আমার মনে হয় সুহত্র সবটা সার্থকভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারবে।'
আর 'খেলা যখন'? অরিন্দম বললেন, 'আমি এখনও পর্যন্ত যা যা প্রোজেক্ট করেছি, 'খেলা যখন' সবচেয়ে বড়মাপের কাজ। অনেকদিন ধরেই এই কাজটা আমি করতে চেয়েছিলাম। 'খেলা যখন' নিয়ে আমার প্রত্যাশা অনেক। আশা করি দর্শকদের এই সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ভালো লাগবে। বাংলা ছবির সমস্যাগুলোকে কাটিয়ে ছবিটাকে জাতীয় কাজ হিসেবে করার চেষ্টা করেছি। আর সব বাংলা ছবির থেকে 'খেলা যখন' আলাদা হবে। ছবিটা বাংলার বাইরেও অনেক মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে।'