কলকাতা: এবার পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি পরিচালনায় রূপসা গুহ (Rupsha Guha)। 'হাউ আর ইউ ফিরোজ' নামের একটি সিনেমা পরিচালনা করছেন তিনি। সিনেমাটিতে অভিনয় করছেন, আরিয়ান ভৌমিক (Aryann Bhowmik), রতশ্রী দত্ত (Ratasree Dutta), খেয়া চট্টোপাধ্যায় (Kheya Chattopadhyay), অনুষা বিশ্বনাথন (Anusha Viswanathan), অশোক বিশ্বনাথন (Ashoke Viswanathan), রানা বসু ঠাকুর (Rana Basu Thakur), বিদ্যুৎ দাস (Bidyut Das) ও অন্যান্যরা।
ফিরোজ একজন প্রাচীন শিল্পকর্ম বিক্রেতা। তাঁর জন্য প্রতিটি শিল্পকর্ম শুধু বস্তু নয়, তারা যেন অতীতের প্রতিধ্বনি, হৃদয়ের একান্ত স্পর্শ। ফিরোজ অনুভব করে প্রতিটি জিনিসের ভিতরে বাস করা গল্প, যা তাঁর নিজের জীবনের মতোই স্বতন্ত্র, অপূর্ণ ও অন্তরঙ্গ। কৈশোরে ফিরোজ ভালোবাসত তাঁর বাবা-মাকে, এবং সেই কিশোরীকে, যার সঙ্গে তাঁর দিন কেটেছিল খেলার ছলে, স্বপ্নের ছায়ায়। কিন্তু সময় ক্রমে সেইসব প্রিয় মুখকে স্মৃতির স্তরে টেনে নিয়ে যায়। সবাই হারিয়ে যায় তাঁর জীবন থেকে। এই শূন্যতা ফিরোজকে চিঠির পাতায় ফিরিয়ে আনে। ভুলে যাওয়া হাতে লেখা শব্দে সে খুঁজে পায় আপনজনের গন্ধ, পুরনো দিনের ধ্বনি। শিল্পকর্মের মাঝে, সে দেখতে পায় সম্পর্কের রঙ, সময়ের ছাপ। তাদের বিক্রি করতে গিয়ে সে অনুভব করে যেন প্রতিটি বিচ্ছেদে নিজেরই একটি অংশ হারিয়ে যাচ্ছে। এই বিচ্ছেদের মধ্যেই জন্ম নেয় এক নিঃশব্দ সংলাপ, নিজের সঙ্গে, অতীতের সঙ্গে, সেইসব ভালোবাসার সঙ্গে যা এখন কেবল জড়বস্তুর ভেতরেই বেঁচে আছে। সে খুঁজে ফেরে প্রতিস্পন্দন। কেউ যেন ফিরে তাকায়, বুঝে ফেলে তার নীরবতা। অবশেষে, ফিরোজ শিল্পকর্মের মধ্যেই আশ্রয় নেয়। খুলে যায় নিঃশব্দ এক মুক্তির পথ। ওই বস্তু গুলোর মাঝে ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যেতে থাকে সে। কিন্তু এই বিলীনতাই হয়তো তাঁকে নিয়ে যায় নতুন এক উপলব্ধির দিকে। এই গল্প আমার, তোমার, আমাদের। এই গল্প একজন নিঃসঙ্গ শিল্পপ্রেমীর, যে ভালোবেসেছিল শুধুই জিনিস নয়, তাদের ভেতরের আত্মাকে, এবং সেই নিঃশব্দ ভাষাকে, যা সময়ের ভেতর হারিয়ে গিয়েও একদিন আবার ফিরে আসে —একটি শিল্পকর্মের ছায়ায়, একটি চিঠির ভাঁজে।
এই সিনেমা সম্পর্কে পরিচালক বলছেন, 'আমার দেখা কলকাতায় সব রকমের ভাষা রয়েছে। আমার ছবির মুখ্যচরিত্রে রয়েছেন একজন পার্সি ভদ্রলোক। আমার মনে হয়েছিল আমার সিনেমাটা যেন শুধু বাঙালিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। আবেগের কোনও ভাষা হয় না।' এই সিনেমার মুখ্য়চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিয়ান। তিনি এই ছবিতে কাজ সম্পর্কে বলছেন, 'আমার চরিত্রের নাম ফিরোজ। ফিরোজের একটা অতীত রয়েছে। আমি ফিরোজের অল্পবয়সের চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলেছি। খুব ভাল একটা অভিজ্ঞতা, শব্দে বোঝানো হয়তো খুব মুশকিল। যাঁরা এই সিনেমাটা দেখছেন, তাঁরাই বলছেন যে সিনেমাটা কবিতার মতোই।'