কলকাতা: তাঁর জন্ম হয়েছিল সে পরিবারে, আগে থেকেই সেই পরিবারের যোগসূত্র বাঁধা সুরের সঙ্গে। মহারাষ্ট্রের মঙ্গশকর পরিবারের সুর সফর শুরু হয়েছিল আগেই। দীননাথ মঙ্গেশকরের হাত ধরে। তিনি ছিলেন একজন মারাঠি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতজ্ঞ। কিন্তু বেশিদিন সেই বাবার সান্নিধ্য পাননি তিনি। যে বয়সে তাঁর বাবার কাছে গানের তালিম নেওযার কথা ছিল, সেই বয়সেই বাবাকে হারান তিনি। তখনও কন্ঠস্বরও পরিপূর্ণতা পায়নি তাঁর, হারমোনিয়াম ধরার জন্যও যখন যথেষ্ট বড় নন তিনি, সেই বয়স থেকে পরিবারের মাথার ওপর তেকে ছাদ সরে যায়।
বাবা চলে যাওয়ায় মহারাষ্টের পাট চুকিয়ে ফেলে পরিবার। দুই বোন ও মা পুণে থেকে প্রথমে আসেন কোলাপুর ও অবশেষে মুম্বইতে। তখনও সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা বোঝেননি, পরিবারকে আর্থিক সাহায্য় করতেই গানকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন দুই বোন। আশা ভোঁসলে (Asha Bhosle) ও লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)
প্রথম একটি মারাঠি ছবিতে গান গাওয়ার সুযোগ আসে আশার। 'মাঝা বল' ছবির 'চলা চলা নভ বালা' গানটি দিয়েই তথাকথিত রূপোলি পর্দার জগতে প্রবেশ আশার। দিদি ততদিনে খ্যাতি অর্জন করেছেন যথেষ্ট। 'চুনরিয়া' ছবিতে 'সাওন আয়া' গানটি গেয়ে বলিউডে পা রাখেন আশা। 'রাত কি রানি' ছবিতে প্রথম হিন্দি গান এককভাবে গান আশা। মাত্র ১৬ বছর বয়সে বাড়ির অমতে বিবাহ করেন আশা।
কিন্তু ফুলে মোড়া ছিল না আশার যাত্রা। সঙ্গীতের আকাশে তখন গীতা দত্ত, লতা মঙ্গেশকরের মতো তারকারা ঝলমল করছেন। তাঁরা যে যে কাজ বাতিল করে দিতেন, সেই গানগুলি গাওয়ার জন্য ডাক পড়ত আশার। অথবা ছবির বাজেট কম হলে সেখানে কাজ পেতেন আশা। নায়িকা নয় বরং খলনায়িকার গলাতেই গান গাওয়ার জন্য ডাক পড়ত তাঁরা।
আশা এই সময় একের পর এক লো বাজেট ছবিতে গান গান, কিন্তু তাঁর বেশিরভাগ গানই তাঁকে জনপ্রিয়তা এনে দিতে পারেনি। ১৯৫২ সালে 'সঙদিল' ছবিতে গান গেয়ে ফের সবার নজরে আসেন আশা। এরপর তাঁকে 'পরিণীতা' ছবিতে কাজের সুযোগ দেন বিমল রায়। এরপর রাজ কপূরের ছবি (Raj Kapoor) 'নহ্নে মুন্নে বচ্চে' ছবিতে গান গান আশা। মহম্মদ রফির সঙ্গে 'ভূত পুলিশ' কাজ করেন আশা।
এরপর চড়াই উৎরাই পার হয়েই এগিয়েছে তাঁর সঙ্গীত জীবন। ব্যক্তিগত জীবনেও ঝড় এসেছে আশার। ১৯৬০ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় আশার। ১৯৮০ সালে রাহুল দেব বর্মণের (RD Barman) সঙ্গে ফের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় আশা।
আজ এই কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পীর জন্মদিন। তাঁর জন্মদিনে এবিপি লাইভের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।