কলকাতা: সঙ্গীত জগতে একের পর এক অপূরণীয় ক্ষতি। কাল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের পর আজ সকালে বাপি লাহিডির মৃত্যুতে শোকের ছায়া সঙ্গীত জগতে। বিনোদন জগতেও বড় ধাক্কা। টলিউডের অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বাপি লাহিড়ির স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন রীতিমতো। তিনি বলেন, ''বাপিদা আমার পরিবারের মতো ছিলেন। আমি কি বলব বুঝতে পারছি না। বড় দাদার মতো ছিলেন আমার। আমি খুব ভেঙে পড়েছি এই ঘটনায়। এরকমটা কখনওই ভাবতে পারিনি। পুরো বিশ্বের কাছে একজন অনুপ্রেরণা বাপি লাহিড়ি। কেউ ওঁনার অবদান ভুলবে না। বাপিদা সবসময় আমাদের সঙ্গে ছিলেন, থাকবেনও।''


সুরজগতে নক্ষত্রপতন। বুধবার নশ্বর থেকে অবিনশ্বর দেহে যাত্রা করলেন বাপি লাহিড়ি। বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। অকস্মাৎ জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পীর এই মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে সঙ্গীতজগতে। ১৯৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে জন্ম বাপি লাহিড়ির। আসল নাম অলকেশ লাহিড়ি। কিন্তু এরপর ধীরে ধীরে তিনি পরিচিত হতে শুরু করেন বাপি লাহিড়ি নামে। বাবা অপরেশ লাহিড়ি ও মা বাঁশরী লাহিড়ি দু’ জনেই ছিলেন গানের জগতের মানুষ। অন্যদিকে কিশোর কুমার ছিলেন সম্পর্কে বাপির মামা। ফলে ছোট থেকে সাঙ্গীতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন বাপি লাহিড়ি। 


শুরু হয়েছিল ৩ বছর বয়স থেকেই। গান নয়, বরং তবলা বাজানো দিয়ে সঙ্গীতজগতে পথ চলা শুরু। ১৯৭৫ সালে হিন্দি ছবি জখমি দিয়ে কেরিয়ার শুরু। এরপর ১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বাপি লাহিড়ি। একের পর এক সুপারহিট গান উপহার দিয়েছেন ভারতীয় সঙ্গীতের ডিস্কো কিং। ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘ডান্স ডান্স’, ‘হিম্মতওয়ালা’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, ‘সত্যমেব জয়তে’, ‘কম্যান্ডো’, ‘শোলা অউর শবনম’-এর মতো ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন একাধিক গান। ২০২০ সালে তাঁর শেষ গান ‘বাগি থ্রি’-র জন্য। বাংলায় ‘অমর সঙ্গী’, ‘আশা ও ভালবাসা’, ‘আমার তুমি’, ‘অমর প্রেম’-সহ একাধিক ছবিতে সুর দিয়েছেন। গায়কীর নিজস্বতা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছিল।