মুম্বই: সালটা ১৯৭৬। আরডি বর্মন ও লক্ষ্মীকান্ত-প্যায়ারেলালদের মতো প্রতিষ্ঠিত সুরকারদের তখন দম ফেলবার ফুরসৎ নেই কাজের চাপে। তাই চলতে চলতে সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনার কাজ থেকে সরে দাঁড়ান তাঁরা। সে জন্য সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনার সুযোগ আসে বাপি লাহিড়ির কাছে।  আর সেই সুযোগকেই দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছিলেন প্রতিভাবান সঙ্গীতশিল্পী বাপি লাহিড়ি। আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। এ কথা জানিয়েছেন বিশিষ্ঠ গীতিকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিত খন্না।


সুরেন্দর দার পরিচালিত এই সিনেমা এখনও দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয় বাপি লাহিড়ির সুরে টাইটুলার গান চলতে চলতে মেরে ইয়ে গীত-এর সৌজন্যে। গানটির কথা লিখেছিলেন খন্না। আর গেয়েছিলেন কিশোর কুমার। বাপি লাহিড়ি-কিশোর কুমার যুগলবন্দি শ্রোতাদের মন কেড়ে নিয়েছিল।


চলতে চলতে-র জন্য জুটি বাঁধার এক সপ্তাহ আগে বাপি লাহিড়ির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের স্মৃতিচারণা করলেন খন্না। নভকেতন ফিল্মসের অফিসে হয়েছিল সেই সাক্ষাৎ। ওই প্রোডাকশন হাউস চালু করেছিলেন দেব আনন্দ ও তাঁর দাদা চেতন আনন্দ।


খন্না বলেছেন, তুমি কিছু গান বাজিয়ে শোনাও। আমি দেখব, কীভাবে তোমাকে সুযোগ করে দেওয়া যায়। আমার খুব ভালো লেগেছিল ওই তরুণকে। বয়স তখন কতই বা হবে, ২১-২২। আমার কথায় ও ওর বাবা-মাকে নিয়ে এসেছিল। এরপর থেকে ও আমার সঙ্গে দেখা করত।


খন্না জানিয়েছেন, ওই সময়ই দেব আনন্দের ভাইপো বিশাল আনন্দ, যিনি অভিনেতাও, তাঁর প্রথম সিনেমা প্রযোজনা করতে যাচ্ছিলেন। ওই সিনেমায় বিশাল সিমি গারওয়ালের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন।


খন্না জানিয়েছেন, আরডি ও লক্ষ্মীকান্ত প্যায়ারেলাল সময় দিতে না পারায় তিনি বাপি লাহিড়ির নাম প্রস্তাব করেছিলেন। খন্না বলেছেন, একদিন বিশাম বলল যে, সে পঞ্চমদার বাড়ি থেকে আসছে এবং তিনি সিনেমার জন্য কাজ করবেন বলেছিলেন। কিন্তু এখন ব্যস্ততার কারণে তাঁর দেরি হচ্ছে। এর আগে একই ঘটনা ঘটেছিল লক্ষ্মীকান্ত প্য়ায়ারেলালের ক্ষেত্রেও। তখন আমি ওদের বললাম, কলকাতা থেকে একটা নতুন ছেলে এসেছে। ও খুবই প্রতিভাবান। তাঁরা আমাকে ওকে ডাকতে বললেন। তখন বাপি বাবা-মায়ের সঙ্গে ছোট একটা বাড়িতে থাকত। ও এল, কিছু সুর শোনাল। আমাদের সবার পছন্দ হল।


সিনেমার নায়ক-নায়িকার অতীত প্রেমের ফ্ল্য়াসব্যাক ফুটে উঠেছিল চলতে চলতে গানে। বাপি সুর শোনাল। আমি কয়েক মিনিটের মধ্যেই কথা লিখলাম।


খন্না জানিয়েছেন, সেদিন রাতে বিশালের বাড়িতে গিয়ে গানের সুর শোনানো হল। বিশালের তা খুবই পছন্দ হল। এক সপ্তাহের মধ্যে রেকর্ডও হল।


খন্না আরও বলেছেন, যখন গানটি রেকর্ড করা হল, তখন আমার মনে আছে, কিশোর কুমার বলেছিলেন, গত কয়েক বছরে যত গান তিনি গেয়েছেন, এই গানটি সবচেয়ে সেরা। গানটি গেয়ে তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন।