কলকাতা: অভিনেত্রী বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় প্রয়াত। মঙ্গলবার নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন অভিনেত্রী। ক্য়ান্সার বাসা বেঁধেছিল তাঁর শরীরে। পাশাপাশি, পেসমেকার বসানো ছিল বুকে। কিডনির সমস্যাও ছিল। বাসন্তীদেবী বেশ কয়েক মাস ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। চিকিৎসকদের কথা মতোই বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। অভিনেত্রীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Basanti Chatterjee Dies)

শেষবার 'গীতা এলএলবি' ছবিতে দেখা গিয়েছিল বাসন্তীদেবী। দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছিলই, সেই সঙ্গেই শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ রোগ। বেশ কয়েক মাস হাসপাতালের ICCU-তে ভর্তি ছিলেন তিনি। চিকিৎসকরাই তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলেন। বাড়িতে নার্সের তত্ত্বাবধানে রাখতে বলা হয় তাঁকে। সেই অবস্থাতেই মঙ্গলবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল মোশন পিকচার আর্টিস্ট'স ফোরাম তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছে। (Tollywood News)

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাসন্তীদেবীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, 'প্রবীণ টেলিভিশন অভিনেত্রী বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে আমি গভীর ভাবে শোকাহত। তাঁর মৃত্যুতে আমাদের শিল্প ও বিনোদন জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল'। জানা গিয়েছে, বাড়িতে এক গৃহসহায়িকার সঙ্গেই থাকতেন বাসন্তীদেবী। তাঁর চিকিৎসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অর্থসাহায্য়ের আবেদনও জানানো হয়েছিল। 

দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বাসন্তীদেবী। ১০০-রও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। 'ঠগিনী', 'মঞ্জরী অপেরা', 'আলো', 'সুজন-সখী', 'কেঁচো খুঁড়তে কেউটে'র মতো ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসা কুড়োয়। পাশাপাশি, একাধিক টিভি সিরিয়ালেও চুটিয়ে অভিনয় করেছেন। সেই তালিকায় রয়েছে, 'ভুতু', 'বরণ', 'দুর্গা দুর্গেশ্বরী', 'গীতা এলএলবি'। 'গীতা এলএলবি'তে অভিনয় করার সময়ই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। 

ছবি, সিরিয়ালের পাশাপাশি, নিয়মিত নাটকও করে গিয়েছেন বাসন্তীদেবী। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন সহ-অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, শেষ দিকে কষ্ট পাচ্ছিলেন বাসন্তীদেবী। যন্ত্রণা আরও বাড়ছিল। বার্ধক্যের পাশাপাশি, অসুস্থতা কাবু করে ফেলে তাঁকে। কিন্তু তার পরও অভিনয় করতে গিয়ে নিজের সেরাটাই বের করে আনতেন। একটি সাক্ষাৎকারে বাসন্তীদেবী জানান, অভিনয় তাঁর পেশা নয়, নেশার মতো। বিকেলে চা খাওয়ার নেশা থাকে যেমন কারও কারও, অভিনয়ও তাঁর কাছে তেমনই। সকাল হলেই শ্যুটিংয়ে যাওয়ার জন্য মন আকুল হয়ে ওঠে। শ্যুটিংয়ে যেতে পারলে মনও ভাল থাকে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু শ্যুটিং, সেচ সবই পড়ে রইল, চলে গেলেন বাসন্তীদেবী।