কলকাতা: পুরুলিয়ার শ্যুটিং শেষ। আপাতত জোরকদমে কাজ চলছে কলকাতায়। কিন্তু এখনও ঘোর কাটেনি লাল মাটির দেশের দৃশ্যপটের। গৌতম ঘোষের সঙ্গে কাজ করা স্বপ্ন ছিল তাঁর। সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়াতে এখন ‘ভীষণ ভীষণ খুশি’ গার্গী রায়চৌধুরী।
গৌতম ঘোষের স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘সময়ের স্মৃতিমালা’-র মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন গার্গী। পর্দায় তাঁর চরিত্রের নাম সুমিতা। একজন স্কুল শিক্ষিকার ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে। লকডাউনে বদলে যাওয়া জীবন, পরিস্থিতিকেই তুলে ধরা হবে ২৫ মিনিটের এই ছবিতে। গার্গী বলছেন, ‘আমার চরিত্রটা খুব সাধারণ। সবাই খুব মিল খুঁজে পাবে। সুমিতা একজন শিক্ষিকা। নিউ নর্মালে সেও অনলাইন ক্লাসের সঙ্গে অভ্যস্ত হচ্ছে। ছবির অনেকটা অংশের শ্যুটিং পুরুলিয়ায়। লাল মাটির দেশে গিয়ে সেও যেন প্রাণ খুলে বাঁচতে চাইছে।’
গৌতম ঘোষের সঙ্গে এই প্রথম কাজ করেছেন গার্গী রায়চৌধুরী। কাজটা তাই তাঁর কাছে খুব স্পেশাল। গার্গী বলছেন, ‘গৌতমদার সঙ্গে কাজ করা আমার স্বপ্ন ছিল। ভীষণ ভীষণ খুশি আমি। গৌতমদা এত সুন্দর করে চরিত্রগুলো বুঝিয়ে দেন, অনায়াসেই সেগুলোকে আত্মস্থ করে ফেলা যায়। আলাদা করে অভিনয় করতে হয় না। আমার তো মনে হত আমিই সুমিতা।’
‘সময়ের স্মৃতিমালা’-র সৌজন্যেই প্রথম পুরুলিয়ায় পা রাখলেন গার্গী। অভিনেত্রী বলছেন, ‘ওখানে এখন ৩৮ ডিগ্রি টেম্পারেচার। কিন্তু কাজের উদ্দীপনায় সব কষ্ট ফিকে হয়ে যেত। এই কাজের সুযোগটাও আসে হঠাৎ করেই। গৌতমদা হঠাৎ একদিন ফোন করে আমায় বললেন, ‘চল গার্গী নতুন কিছু একটা কাজ করা যাক।’ আপাতত ছোট ছবি, পরে আরও বড় কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
গৌতম ঘোষের সঙ্গে প্রথম কাজের অভিজ্ঞতাকে চিরকাল মনে রাখতে চান গার্গী। বলছেন, ‘গৌতমদা আমাকে নটি বলেন। বলেন, আমি নাচ করতে পারি, অভিনয় করতে পারি, গানও পারি। এই ছবিতে আমার গাওয়া ২ টি রবীন্দ্রসঙ্গীত রয়েছে। সেটা ঠিক গান নয়, অভিনয়। এটাই আমার প্রথম প্লেব্যাক। সেটাও গৌতমদার হাত ধরেই হল। ‘এই কাজটা করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখলাম। আমার কাছে যেন হাজারদুয়ারির দরজা খুলে গেল।’
শ্যুটিং এর একটা ঘটনা খুব মনে পড়ে গার্গীর। বলছেন, ‘আমরা রোজই যখন শ্যুটিং করতে যেতাম, দেখতাম একটি অল্পবয়সী ছেলে গৌতমদার সঙ্গে এসে কাজ করত, হেল্প করত। শ্যুটিং এর একেবারে শেষদিনে দেখলাম, ছেলেটি গৌতমদার টেন্ট থেকেই বেরিয়ে আসছে। তখন জানলাম, উনি ঈশান ঘোষ, গৌতমদার ছেলে।‘
নির্বাচনের আগে টলিউড জুড়ে এখন রাজনৈতিক দলে যোগদান বা দলবদলের হিড়িক। যদিও এই সমস্ত কিছু থেকে নিজেকে সযত্নে দূরে সরিয়ে রেখেছেন গার্গী। স্মিত হেসে বললেন, ‘আমি কর্মনীতিতে বিশ্বাসী। কারোও সম্পর্কে আমি কোনও বক্তব্য রাখব না। প্রত্যেকেই স্বাধীনভাবে নিজেদের সিদ্ধান্ত নেবেন।‘
কী কী কাজে ব্যস্ত রয়েছেন গার্গী? বললেন, মহাশ্বেতা দেবীর জীবন আধারিত ছবি ‘মহানন্দা’-র মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছি আমি। আমার কাছে এটাও একটা স্বপ্নের কাজ। খুব তাড়াতাড়ি ‘হামি-২’- এর কাজ শুরু হবে। ছোটদের নিয়ে আবার একটা কাজ, অপেক্ষায় আছি। অরিন্দম শীল, ও শুভেন্দু দাসমুনসী সঙ্গে কাজ করছি। একটা ওয়েব সিরিজ নিয়ে প্রাথমিক কথা চলছে। এতদিন আমি কোনও ওয়েব সিরিজ করিনি কারণ চিত্রনাট্যে প্রয়োজন নেই, এমন কোনও দৃশ্য আমি করতে চাই না। আমি এই বিষয়ে নিজের ইচ্ছেকে সম্পূর্ণ প্রাধান্য দিই। কথা পাকা হলে অবশ্যই জানাব।‘