কলকাতা: ২০২১ সালে মুক্তি পায় প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য (Pradipta Bhattacharyya) পরিচালিত ইউটিউব সিরিজ (YouTube) 'বিরহী'র (Birohi) প্রথম সিজন। 'উরিবাবা'র ইউটিউব চ্যানেলে প্রথম সিজনের অভাবনীয় সাফল্যের পর ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে মুক্তি পেতে শুরু করেছে 'বিরহী'র দ্বিতীয় সিজন (Birohi 2)। সেই আবহে এবিপি লাইভের সঙ্গে কথা বললেন সিরিজের মুখ্য তিন অভিনেতা সায়ন ঘোষ (Sayan Ghosh), শতাক্ষী নন্দি (Satakshi Nandi) ও শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য (Shrabanti Bhattacharyya), সঙ্গে অবশ্যই সিরিজের স্রষ্টা পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য।
এবিপি লাইভ: প্রথম সিজনের পর দ্বিতীয় সিজনের জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করলে?
সায়ন ঘোষ: বারবার স্ক্রিপ্ট পড়েছি। গোঁফ রেখেছি (হাসি)। বাড়তি প্রস্তুতি যে খুব বেশি নিতে হয়েছে তা নয়। বারবার চিত্রনাট্যটা পড়েছি। এমনিতেও যে আমরা কোন দৃশ্যে কী করব, সেটার প্রচণ্ড রিহার্সাল করে শ্যুট করি এমনটা নয়। কোনও দৃশ্যের গভীরতা বুঝে সেই মুহূর্তে যে অভিব্যক্তিগুলো স্বাভাবিকভাবে বের হয় আমার মনে হয় সেটাই শ্রেষ্ঠ। খুব বেশি প্রস্তুতি নিলে অনেক সময় দেখা যায় সেটাই রিপিট হয়ে গেল। সেটা কোনওভাবেই কাম্য নয়।
শতাক্ষী নন্দি: প্রদীপ্ত দা যখন চিত্রনাট্য সাজাচ্ছিলেন তখন থেকেই আমাদের সঙ্গে গল্পটা শেয়ার করতে থাকেন। প্রত্যেকটা চরিত্র, তাঁদের সফরটা কেমন হবে, রাধা কৃষ্ণের নিজেদের মধ্যে ও সম্পর্কের মধ্যে কীরকম পরিবর্তন ঘটবে, সবটাই আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে করতে গিয়েছিলেন। ওটাই প্রধান প্রস্তুতি বলা যায়।
বাড়তি প্রস্তুতি আলাদা করে নিইনি কারণ, প্রদীপ্ত দা যেভাবে লেখেন এবং ওই আলোচনা ও চিন্তাভাবনার জায়গাটা যেভাবে দেন, সেই অনুযায়ী একটা ধারণা তৈরি হয়েই যায়। তারপরে তো আমরা ফ্লোরে একসঙ্গে পুরো কাজটা করার সময় এক্সপ্লোর করতে করতে গিয়েছি।
শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য: দ্বিতীয় সিজনে জমিদারের চরিত্রটা কেমন হতে পারে, তাঁর গ্রাফ কেমন যেতে পারে সেটা বলেন প্রদীপ্ত দা। ভাবনাচিন্তা করলাম, চিত্রনাট্য দেখলাম। মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম যে স্পটে গিয়ে ইম্প্রোভাইজেশন হতে পারে।
প্রশ্ন: কোনও ওয়ার্কশপ করতে হয়েছিল?
সায়ন: আমরা আড্ডা দিই। আমাদের ওয়ার্কশপ মানে আড্ডা দেওয়া, একসঙ্গে বসা, আলোচনা করা। ওটাই করেছি বারবার। যখন আমরা স্পটে পৌঁছই তখন চেষ্টা করি সেই জায়গাটার সঙ্গে একাত্ম হওয়ার। কারণ আমরা তো একেবারে একটা পরিবেশে জীবন যাপন করি, তার থেকে একেবারে একটা অচেনা পরিবেশে গিয়ে কাজটা করি।
শতাক্ষী: প্রথম সিজনের পর এটা দ্বিতীয় সিজন। প্রায় এক থেকে দেড় বছর একসঙ্গে কাটানো, প্রত্যেকের, সেটাই ওয়ার্কশপ ধরে নিতে পারেন। 'বিরহী ১' শ্যুট করলাম, তারপরও যোগাযোগে ছিলাম। তারপরে 'বিরহী ২' নিয়ে আলোচনা, এই গোটা সময়টা একসঙ্গে থাকতে থাকতে একটা কমফোর্ট জোন তো তৈরি হয়েই গেছে।
শ্রাবন্তী: আমরা সকলে মিলে কোনও ওয়ার্কশপ করিনি। বলা চলে ওয়ার্কশপটা আমাদের অন সেট হয়। সেখানে আলোচনা হয়। আর প্রদীপ্ত দার সঙ্গে কাজ করতে গেলে, স্পটে যাওয়া আর সেখান থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত এই যে একসঙ্গে থাকা, খাওয়া, শেয়ার করা, নিজেদের মধ্যে চিন্তাভাবনার আদানপ্রদান করা, হাসিঠাট্টা হওয়া, সেটাই একটা ওয়ার্কশপের পদ্ধতি বলা যেতে পারে। সেটাই পরে চরিত্রটাকে আরও উন্নত করতে আর শট দিতে খুব কাজে লাগে।
প্রশ্ন: কোনও বড় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নয়, ইউটিউব চ্যানেলে সিরিজ মুক্তি। তারপর তার অভাবনীয় সাফল্য। দ্বিতীয় সিরিজ তৈরির সময় বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছিল?
প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য: না একেবারেই তা হয়নি। কারণ দ্বিতীয় সিজনকে আমি একেবারেই আলাদা সিরিজ হিসেবে ধরেছি। আগেরটায় যা হয়ে গেছে, হয়ে গেছে। দ্বিতীয় সিজন আমার কাছে একেবারে নতুন কাজ। ফলে আলাদা কোনও চাপ না নিয়ে যেভাবে সিনেমা করি সেভাবেই করেছি। ছবি আমি আনন্দ থেকে করি। ভয় থেকে বা সাফল্য ধরে রাখতে করি না। ফলে ছবি যেভাবে করি, সেভাবেই আগের কিছু চরিত্র নিয়ে নতুন সিরিজ হিসেবে ভেবে এই কাজটা করেছি। ফলে কোনও ভয় কাজ করেনি।
প্রশ্ন: এই সিজন থেকে দর্শক নতুন কী কী আশা করতে পারেন?
প্রদীপ্ত: দ্বিতীয় সিজনে দর্শক সম্পূর্ণ নতুন একটা দৃষ্টিভঙ্গি পাবেন। প্রত্যেক চরিত্রের খুব বিস্তারিত, গভীর পর্যালোচনা মিলবে। চরিত্র, ঘটনাপ্রবাহ সবটাই নতুন। অনেক বেশি মানুষের আবেগ ও তাঁদের জটিলতা এগুলো দেখতে পাবেন।
প্রসঙ্গত, 'উরিবাবা' ইউটিউব চ্যানেলে ইতিমধ্যেই 'বিরহী ২'-এর দুই পর্ব মুক্তি পেয়েছে। কাল আসবে তৃতীয় পর্ব।