মুম্বই: কেরিয়ারের শুরুতেই 'সাহসিনী' তকমা জুড়ে গিয়েছিল নামের পাশে। তাতে একসময় বিপুল জনপ্রিয়তা পেলেও, আকর্ষণীয় চেহারার সামনে অভিনেত্রী পরিচয় ফিকে হতে শুরু করেছিল। বিস্মৃত হতে হতে অবশেষে বড়পর্দায় ফিরে এসেছেন মল্লিকা শেরাওয়াত। রাজকুমার রাও এবং তৃপ্তি দিমরির সঙ্গে 'ভিকি অউর বিদ্যা কি ওহ্ ওয়ালা ভিডিও' ছবিতে রয়েছেন। আর সেই ছবির প্রচারে দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন মল্লিকা। (Mallika Sherawat)


দক্ষিণ ভারতীয় ছবিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন মল্লিকা। জানান, এক পরিচালক অদ্ভুত দাবি নিয়ে তাঁর কাছে আসেন। মল্লিকা বলেন, "একটি দক্ষিণ ভারতীয় ছবির শ্যুটিং করছিলাম। হঠাৎ পরিচালক আমার কাছে এলেন। বললেন, 'ম্যাডাম, আপনি কত আকর্ষণীয়, তা পর্দায় তুলে ধরতে চাই আমরা'। আর পাঁচটা ছবিতে যেমন গানের দৃশ্য থাকে, তেমনই কিছু হবে ভেবে আমিও হ্যাঁ বলে দিই। কিন্তু উনি বলেন, 'ওই দৃশ্যে ছবির নায়ক আপনার পেটের উপর রুটি সেঁকবেন'।" (Bollywood Updates)


এই অভিজ্ঞতার কথা শোনাতে গিয়ে মুখে যদিও হাসি ধরে রেখেছিলেন মল্লিকা। কিন্তু গোটা ঘটনায় তিনি স্তম্ভিত হয়ে যান বলে জানান নায়িকা। মল্লিকা জানান, পরিচালক এই দাবি জানানোর পরই না বলে দেন তিনি। তিনি যে পরিচালকের দাবি মানতে পারবেন না, স্পষ্ট জানিয়ে দেন। দক্ষিণে কাজ করতে গেলে কী পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, তা তুলে ধরতেই বিষয়টি নিয়ে এতদিন পর মুখ খুললেন বলে জানান মল্লিকা।


খোলামেলা পোশাক পরতেন, সোজাসাপটা কথার জবাব গিতেন বলে তাঁকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে বলেও মল্লিকা জানান। মল্লিকার দাবি, ইন্ডাস্ট্রিতে যৌনতা নিয়ে দ্বিচারিতা চলে। দশকের পর দশক মেয়েদের স্রেফ যৌন আবেদনের জন্য ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি তাঁর।  গাড়ি, সাবান, ওয়াশিং মেশিন এমনকি টুথপেস্টের বিজ্ঞাপনেও মেয়েদের যৌন আবেদন ব্যবহার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। মল্লিকার দাবি, এতকিছুর পর তিনি যখন যৌন আবেদন তুলে ধরতে নিজেই এগিয়ে আসেন, সেই সময় তাঁকে সমালোচনা শুনতে হয়। 


মল্লিকার কথায়, "২০০৪ সালে 'মার্ডার' ছবিতে অভিনয় করি। বক্স অফিসে অফিসের কথা মাথায় রেখে ছবিতে যৌনতা ব্যবহার করা হয়। বক্স অফিস আসলে কী? সেও তো এক ধরনের উত্তেজনা? কিন্তু লোকজন রেগে কাঁই হয়ে গেলেন। আমার কুশপুতুল পোড়ানো হল। একদিকে, নারীর যৌন আবেদনকে বাজার ধরতে ব্যবহার করা হচ্ছে, অন্য দিকে একই জিনিস করতে গেলে গালি শুনতে হচ্ছে আমাকে।"


তাঁকে যে 'সেক্স সিম্বল' বলা হতো, তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন মল্লিকা। তাঁর কথায়, "সেক্স সিম্বল আবার কী? আমি নারী। এর অর্থ কী? হ্যাঁ আমি নারী, নারী হওয়াকে উপভোগ করি। তার মানেই কি আমি সেক্স সিম্বল? সত্যিই জানতে চাই এসব কী?" মল্লিকা জানিয়েছেন, পরিচালক যেভাবে চেয়েছেন, সেভাবেই পর্দায় মেলে ধরেছেন নিজেকে। ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাননি কখনও। এতে তাঁর শিল্পীসত্ত্বাই প্রমাণিত হয়।