মুম্বই: সারা বিশ্বেই ত্রাসের সঞ্চার করেছে করোনাভাইরাস। ভারতেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তর সংখ্যা। আতঙ্ক ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। প্রভাব পড়েছে সিনেমা জগতেও। বন্ধ হয়ে গিয়েছে শ্যুটিং।সারা দেশের বহু সিনেমা হলও বন্ধ রাখা হয়েছে। পিছিয়ে গিয়েছে অনেক সিনেমার মুক্তিও। এরফলে বিশেষ করে বড় বাজেটের সিনেমাগুলি বড়সড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে। করোনাভাইরাস অতিমারির এই মারে বলিউড প্রায় ৬০০-৯০০ কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন চলচ্চিত্র সমালোচক তথা ব্যবসা সংক্রান্ত বিশ্লেষক তরণ আদর্শ।


সোমবার ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৪। দেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রূপোলি পর্দায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে সিনেমার প্রদর্শন। অতিমারির প্রভাব পড়েছে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বাগী ৩ সিনেমার ব্যবসার ক্ষেত্রেও। গত ৬ মার্চ মুক্তিপ্রাপ্ত টাইগার শ্রফ অভিনীত বাগী ৩-কে সবচেয়ে বেশি ঠোক্কর খেতে হয়েছে। করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়েছে সিনেমার দর্শকদের মধ্যে। ফলে মুক্তির প্রথম সপ্তাহ থেকেই ধাক্কা খেতে হয়েছে এই সিনেমাকে। তরণ আদর্শ বলেছেন, এক্ষেত্রে ১৫ -২০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে, বিশেষ কর দ্বিতীয় সপ্তাহে যখন সিনেমা হলগুলি বন্ধ হতে শুরু করে। প্রথম সপ্তাহে সিনেমাটি দারুণ ব্যবসা করেছে। ত্রাসের পরিবেশ না থাকলেও চূড়ান্ত সংখ্যা অন্যরকম হতে পারত।
প্রযোজক থেকে শুরু করে ডিস্ট্রিবিউটর, অভিনেতা-অভিনেত্রী এবং যাঁরা সিনেমা ও টেলিভিশনের সেটে দৈনিক মজুরের ভিত্তিতে কাজ করেন- তাঁদের সবাইকেই ধাক্কা গিয়েছে করোনা আতঙ্ক।
তরণ আদর্শ বলেছেন, সবচেয়ে চিন্তার বিষয়টি হল, এই অতিমারি পরিস্থিতির শেষ কবে, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সিনেমা হল, শ্যুটিং বন্ধ থাকবে। কিন্তু তারপরও যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই মার্চে করোনাভাইরাস বলিউডে জোরাল ধাক্কা দিয়েছে।
করোনার প্রাদুর্ভাব বহু প্রতিক্ষিত সিনেমাগুলি নির্মাতাদেরও কপালে ভাঁজ ফেলেছে। অক্ষয় কুমার ও ক্যাটরিনা কাইফের সূর্যবংশী সিনেমার মুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গিয়েছে। কবির খান পরিচালিত রণবীর সিংহর '৮৩' সিনেমার মুক্তিও পিছিয়ে গিয়েছে। ওই সিনেমার আগামী ১০ এপ্রিল মুক্তির কথা ছিল।
তরণ আদর্শ বলেছেন, প্রোডাকশন, ডিস্ট্রিবিউশন ও প্রদর্শন সংক্রান্ত এই সিনেমাগুলির যাবতীয় কর্মকাণ্ড থমকে গিয়েছে। এক্ষেত্রে লোকসানের পরিমাণ কয়েকশ কোটি দাঁড়াতে পারে।
তিনি বলেছেন, স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে সময় লাগবে বলেই মনে হচ্ছে। আগামী মাসগুলিতে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেই যে লোকজন সিনেমা হলগুলি ভিড় জমাবেন, এমন আশা করা ঠিক নয়। প্রত্যেকেই এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। কাজেই সিনেমাপ্রেমীদের হলগুলিতে গিয়ে সিনেমা দেখার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে আরও কিছু সময় লাগবে।
তরণ আদর্শ বলেছেন, যে আন্তর্জাতিক বাজারগুলিতে ভারতীয় সিনেমা ভালো ব্যবসা করে, সেখানকার করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতি এখানকার তুলনায় আরও খারাপ।