কলকাতা: উর্দু অকাদেমির অনুষ্ঠানে জাভেদ আখতারকে আমন্ত্রণ জানানোয় তৈরি হয় বিতর্ক। এই আবহেই তিনদিনের এই অনুষ্ঠান স্থগিত করল উর্দু অকাদেমি। যদিও অনুষ্ঠান স্থগিতের কারণ জানানো হয়নি। এদিকে, এই ঘটনাকে সামনে রেখে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।

দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত কলকাতা! সেখানেই উর্দু অকাদেমির অনুষ্ঠানে কবি ও গীতিকার জাভেদ আখতারকে আমন্ত্রণ জানানোর পর সেই অনুষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে তৈরি হল বিতর্ক। পয়লা থেকে তেসরা সেপ্টেম্বর উর্দু অকাদেমির অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল কলামন্দিরে। প্রথম দিন হিন্দি সিনেমায় উর্দুর অবদান শীর্ষক বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। সেই আলোচনায় আমন্ত্রিত ছিলেন কবি ও গীতিকার জাভেদ আখতার। কিন্তু অনুষ্ঠানে জাভেদ আখতারকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে আপত্তি জানায় বেশ কয়েকটি সংগঠন। 

কলকাতার জমিয়েতে উলেমার সম্পাদক জিল্লুর রহমান আরিফ বলছেন, 'জাভেদ আখতার সাহেব ইসলামের নামে এমনকী ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্ম নিয়েও ঠাট্টা করেছেন। এমন মানুষদের পশ্চিমবঙ্গে না ডাকলেই ভাল। আমরা অ্য়াকাডেমিকে চিঠি দিয়েছি। ওরা এই অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে।' তার জেরেই কি পিছিয়ে দেওয়া হল অনুষ্ঠান? তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এই প্রসঙ্গে, উর্দু অকাদেমির ভাইস চেয়ারম্য়ান ও তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। 

১ তারিখ কলামন্দিরে ছিল অনুষ্ঠান, এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের তালিকায় ছিলেন জাভেদ আখতার। সেটা নিয়েই উর্দু অকাদেমির অভ্যন্তরে একটা বিরোধ তৈরি হয়। মূলত জমিয়েতে উলামায়ে হিন্দ-সহ বেশ কিছু কট্টরপন্থী ইসলামিক সংগঠন বেশ কিছু দ্বিমত তৈরি হয়। তাঁদের বক্তব্য, জাভেদ আখতার ইসলামকে সমর্থন করেন না। সেই কারণ দর্শিয়ে তাঁকে এই অনুষ্ঠানে আনার বিরোধিতা করেন। তারপরই দেখা যায়, উর্দু অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, এদিন এই অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হয়েছে।

এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত উর্দু অকাদেমির এই অনুষ্ঠান স্থগিতের সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে  রাজনৈতিক বিতর্ক। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, 'এরা মুক্ত চিন্তা করতে পারে না।' সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ বলেছেন, 'দুইয়ে দুইয়ে চার হয়েছে। মমতার সরকার মৌলবাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যদি জাভেদ আখতারকেও নিরাপত্তা দিতে পারে না।জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। অনুষ্ঠান স্থগিত হওয়া নিয়ে এখন তুঙ্গে বিতর্ক।