সূত্রের খবর, ৮ জুন রিয়া-সুশান্তর মধ্যে কী হয়েছিল?কেন বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন রিয়া?কেন দু’জনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল? রিয়ার কাছে তা জানতে চাওয়া হবে। পাশাপাশি আর্থিক লেনদেন সম্পর্কেও তথ্য চাওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।
সুশান্তর বাবার আইনজীবী বিকাশ সিংহ বলেছেন, রিয়া যদি তদন্তে সহযোগিতা না করে, তাহলে তাঁকে গ্রেফতার পর্যন্ত করা যেতে পারে।
যদিও, রিয়ার আইনজীবীর দাবি,সিবিআই-এর তরফে কোনও নোটিস তাঁরা এখনও পাননি।তবে, ডাকা হলে রিয়া অবশ্যই হাজিরা দেবেন।
সুশান্ত-মৃত্যু তদন্তে সোমবার অন্ধেরির ওয়াটার স্টোন রিসর্টে যান সিবিআই আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, এই হোটেলে কিছুদিন ছিলেন রিয়া ও সুশান্ত। এখানে সুশান্তর প্রায় দুই মাস চিকিৎসা চলছিল।
গত বছর ২২ ও ২৩ নভেম্বর এই হোটেলে এক আধ্যাত্মিক গুরুর সঙ্গে সুশান্ত দেখা করেন বলেও সূত্রের দাবি।এই তথ্য সিবিআই জানতে পেরেছে সুশান্তর ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট মারফত।
হোটেলের নিরাপত্তা আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি, সেখান থেকে বেশ কিছু নথিও সংগ্রহ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
এই রিসর্টের দৈনিক ভাড়ায় প্রায় ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা। এখানে রয়েছে টেনিস লন থেকে শুরু করে স্পা, পার্সোনাল ট্রেনার, জিম, মেডিটেশন সেন্টার ও যোগ সেন্টারের মতো সুবিধা।
ওই আধ্যাত্মিক গুরু জানিয়েছেন যে, গত বছর তাঁকে রিয়া চক্রবর্তী বলেছিলেন যে, সুশান্ত অবসাদ সক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন। এরপর দুবার সুশান্তর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, গত বছরের ২২ ও ২৩ নভেম্বর ওয়াটার স্টোন রিসর্টে সুশান্তর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। ২২ নভেম্বর আশীর্বাদ করেছিলেন। ২৩ নভেম্বর রিয়া ফোন করে তাঁকে বলেছিলেন যে, সুশান্ত ভালো আছেন। ওই দিন আবার সুশান্তর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। তিনি সুশান্ত ও রিয়ার সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজও সারেন।
ওই আধ্যাত্মিক গুরু বলেছেন, প্রথম সাক্ষাতের সময় সুশান্ত অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। তিনি সুশান্তর চিকিত্সা করেন এবং পরের তিনিই তাঁকে বলা হয় যে, সুশান্ত ৯০ শতাংশ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কীভাবে শুশ্রুষা করেন তিনি, তাও জানিয়েছেন ওই আধ্যাত্মিক গুরু। তিনি জানিয়েছেন, এর জন্য তিনি কোনও ফি নেন না। তবে কেউ কিছু দিতে চাইলে তা তিনি নেন। চিকিত্সার জন্য তিনি কোনও পূজাপাঠ করেন না।
ওই আধ্যাত্মিক গুরুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বান্দ্রা পুলিশ ডেকে পাঠিয়েছিল। তবে তিনি যাননি। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন যে, পুলিশকে বলেছিলেন যে, তাঁর ৭০ বছর বয়স। অ্যাঞ্জিওগ্রাফি হয়েছে। এত দূর তিনি আসতে পারবেন না। যা কিছু করেছি, তার রেকর্ড রয়েছে। সেগুলি পাঠিয়ে দিতে পারি।
সোমবার মুম্বইয়ের কুপার হাসপাতালে গিয়ে সুশান্তের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের বয়ান রেকর্ড করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।
সোমবার ফের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সুশান্তের রুম মেট সিদ্ধার্থ পিঠানি ও দুই পরিচারক নীরজ, দীপেশকে। বয়ান রেকর্ড করা হয় সুশান্তের হিসাবরক্ষকেরও।
সিবিআইয়ের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যেই একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। ৮ জুন রাতে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের।তার ৬ দিন পর, অর্থাৎ ১৪ জুন মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্তের মৃতদেহ! আর ১৭ জুন পর্যন্ত চালু ছিল দিশার মোবাইল। সেখান থেকে একাধিক ফোন ও ইন্টারনেট কলিং করা হয়। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজারের ফোন তৎক্ষহণাৎ কেন ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়নি? এক্ষেত্রে মুম্বই পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ফের প্রশ্ন উঠছে।