কলকাতা: তখন অনেকটা রাত হয়েছে। ঘুমোতে যাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ পরিচালক বন্ধুর ফোন। বললেন, সুনীতা হাজরার এভারেন্স (Mount Everest) জয়ের কাহিনী থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ছবি তৈরি হচ্ছে। উচ্ছসিত হয়ে অভিনেত্রী প্রশ্ন করলেন, প্রধান চরিত্র কার? নিজের নাম শুনে এক মুহূর্তের জন্য চমকেও উঠলেন। তারপর সামলে নিয়ে পরিচালককে আশ্বাস দিলেন, 'হাতে ৮-৯ মাস সময় আছে তো? নিজেকে তৈরি করে নেব।' পরিচালক সঙ্গে সঙ্গে বললেন, 'হাতে এক্কেবারে সময় নেই। বড়জোর মাস দেড়েক। তার মধ্যেই তাঁকে পর্দায় সুনীতা হয়ে উঠতে হবে।' সেইদিন সারা রাত ঘুম হল না অভিনেত্রীর। 


পরের দিন সকালেই জিমের ট্রেনারকে ফোন.. 'দেড় মাসে অ্যাথলিট হয়ে উঠতে হবে। কী করব?' ট্রেনার উত্তর দিলেন, 'রোজ জিমে আসতে হবে।' শুরু হল চান্দ্রেয়ী ঘোষ (Chandrayee Ghosh) থেকে পর্দার সুনীতা হাজরা হয়ে ওঠার সফর। এবিপি লাইভের (ABP Live) সঙ্গে সেই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন খোদ অভিনেত্রী। 


আরও পড়ুন: Brahmastra: বলিউডের ভাগ্য ফেরানোর 'ব্রহ্মাস্ত্র'! গোটা বিশ্বে আয় ছুঁল ৩০০ কোটি


জানুয়ারি মাসে শ্যুটিং.. স্পিতি আর লাদাখে তখন তাপমাত্রা মাইনাস ২৪। রোজ ভোর ৪টেয় কলটাইম থাকত আর ৬টার সময় শুরু হল শ্যুটিং। চান্দ্রেয়ী বলছেন, 'ওইসময়ে স্থানীয় মানুষেরা বাড়ির বাইরে বেরোন না। ঘরের মধ্যে আগুনের ধারে বসেই সময় কাটান। আর আমরা ওই তাপমাত্রায় রোজ ১৪ ঘণ্টা করে শ্যুটিং করতাম। একজন পর্বতারোহী যে যে জিনিস ব্যবহার করে আরোহনের সময়, ঠিক সেই সেই জিনিস আমাদেরও ব্যবহার করতে হয়েছিল। ত্রিস্তরীয় পোশাক পড়তে হত, পায়ে একটা জুতোর ওপর আরও একটা জুতো। বরফের ওপর ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পরতে হত লোহার ক্রাম্প অন। পিঠে থাকত অক্সিজেন। সব মিলিয়ে এক একটা পায়ের ওজন হত প্রায় সাত কেজি।'


বরফের মধ্যে মেকআপ নিয়ে শ্যুটিং, সংলাপ মনে রাখা তার ওপর ট্রেকিং.. বিষয়টা শুনতে যতটা সোজা, কাজে করাটা বোধহয় ততটাই কঠিন। চান্দ্রেয়ী বলছেন, 'একটা শট দেওয়ার জন্য ৪০ মিনিট ট্রেক করে ওপরে উঠেছি, ২৭ বার টেক হয়েছে, তারপর ফের নেমে এসেছি। দূরে দাড়িয়ে ইউনিট। আমি তখন চারিদিকে দেখছি স্নো লেপার্ডের পায়ের ছাপ। ঠাণ্ডায় আমার মুখ ফুলে গিয়েছিল। তবে তখন মাত্র দুটো উপায় ছিল, হয় কাজ না করে ফিরে আসা, নাহলে শ্যুটিং বজায় রাখা। আমরা দ্বিতীয়টা বেছেছিলাম।'