কলকাতা: মহারাষ্ট্র, দিল্লি-সহ কয়েকটি রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ কমলেও, বাংলা এখনও দাপট দেখিয়ে চলছে করোনা ভাইরাস। রোজ আক্রান্ত হচ্ছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ। প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে শতাধিক। সংক্রমণের চেন ভেঙে, ভয়ঙ্কর এই পরিস্থিতিতে লাগাম টানতে দু-সপ্তাহের জন্য কার্যত লকডাউনের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার।লকডাউন বলে ঘোষণা না করা হলেও এদিন মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে যে বিধিনিষেধ জারি রয়েছে, তাতে আরও কড়াকড়ি করা হয়েছে। রবিবার সকাল ৬টা থেকে ৩০ মে, সন্ধে ৬টা পর্যন্ত কার্যত লকডাউন জারি থাকবে রাজ্যে।


এই পরিস্থিতিতে কাল থেকে শ্যুটিং বন্ধ থাকছে টালিগঞ্জ স্টুডিওপাড়ায়। সরকারি নির্দেশ মেনে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত শ্যুটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেডারেশন। এদিন মুখ্যসচিবের ঘোষণায় সিনেমা-সিরিয়ালের শ্যুটিং নিয়ে সরাসরি কিছু উল্লেখ না হওয়ায় কিছুটা দোলাচল ছিল। পরে ভিডিও কনফারেন্সে প্রোডিউসারদের সঙ্গে বৈঠকের পর শ্যুটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ, সরকারি নির্দেশিকায় শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবাকেই নিয়ন্ত্রণ থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।


গত বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউনের সময়ও স্টুডিও পাড়ায় শ্যুটিং বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। লকডাউন সংক্রান্ত বিধি শিথিল হওয়ার পর ফের শ্যুটিং শুরু হয়েছিল। শ্যুটিং চলাকালে বেশ কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলাকুশলী করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এবার সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে দুই সপ্তাহের জন্য কড়াকড়ি জারি হয়েছে। তাই টালিগঞ্জে শ্যুটিং বন্ধ রাখা হচ্ছে। শ্যুটিং বন্ধ থাকায় গত বছর টেলিভিশন সিরিয়ালগুলির ক্ষেত্রে রিপিট টেলিকাস্ট দেখা গিয়েছিল। কারণ, লকডাউনের মেয়াদ বেশ কয়েকবারই বেড়েছিল। 


এদিনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ৩০ মে পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। জরুরি পরিষেবার দফতর ছাড়া বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস। জরুরি সামগ্রীর উৎপাদন ছাড়া বন্ধ থাকবে কল কারখানা।আগের মতোই বন্ধ থাকবে সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, স্পা বন্ধ থাকবে। করা যাবে না কোনওরকম জমায়েত। বিয়ে বাড়িতে ৫০ জনের বেশি আমন্ত্রণ করা যাবে না।সৎকারে ২০ জনের বেশি থাকতে পারবেন না।জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে বেরনো যাবে না।দু-বেলা নয়, ৩০ মে পর্যন্ত এক বেলাই খোলা থাকবে বাজার হাট। বাজার-হাট, মুদি দোকান, দুধ, রুটি, মাংস, ডিমের দোকান খোলা থাকবে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত।মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।গয়না এবং শাড়ির দোকান খোলা থাকবে বেলা ১২টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত।তবে সাধারণ দিনের মতোই ওষুধ ও চশমার দোকান খোলা থাকবে। ই-কমার্স এবং হোম-ডেলিভারি পরিষেবা চালু থাকবে।