কলকাতা: এ যেন কিছুটা'এবিসিডি' (ABCD) ছবির গল্প। একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে আলোয় আসার গল্প, খ্যাতি পাওয়ার গল্প। এই গল্প মানব দাস (Manav Das)-এর। জি বাংলার নাচের রিয়্যালিটি শো 'ডান্স বাংলা ডান্স' (Dance Bangle Dance)-এর প্রতিযোগী আসানসোলের মানব ইতিমধ্যেই জয় করে নিয়েছে দর্শক থেকে শুরু করে বিচারকদের মনও। কিন্তু খুব কী সহজ ছিল মানবের এই মঞ্চ পর্যন্ত আসার গল্পটা? বোধহয় নয়।
আসানসোলের শিবডাঙায় বসবাস মানবের। বাড়ির সদস্য বলতে, বছর ১১-র মানব, তার দাদা ও মা। মানবের বাবা মারা যান কয়েক বছর আগে। সেই থেকে মানবের লড়াই শুরু। ১১ বছরের মানবের দাদা সৌরভ, বাড়ির বড় ছেলে। বাবা নিজেও নাচ করতেন, স্বপ্ন দেখছেন, ছেলেরা নাচ করবে বড় মঞ্চে। সৌরভের সেই স্বপ্নপূরণ হয়নি। তবে ভাইয়ের স্বপ্নে যাতে বাধা না পড়ে, সেজন্য খুব কম বয়স থেকে উপার্জন শুরু করেন সৌরভ। ক্যান্টিনে কাজ করেন মানবের দাদা, সঙ্গে চালিয়ে যান পড়াশোনাও। অন্যদিকে মানব পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যান নাচের অনুশীলনও।
দাদা সৌরভেরও নাচের অনুশীলন নেই কখনও। ইউটিউব দেখে নাচ শেখেন তিনি। তবে কেবল মানব নয়। পাড়ার কচিকাঁচাদেরও নাচ শেখান সৌরভ। যাঁরা অর্থের বিনিময়ে নাচ শিখতে পারেন না, তাদেরই নাচ শেখান সৌরভ। কোনও ক্লাস নেই তাঁর। মন্দিরের চাতালে নাচ শেখান তিনি। সেখানেই নাচের হাতেখড়ি মানবের। অডিশন পেরিয়ে, অনেক পর্ব পেরিয়ে এখন মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে বছর ১১-র এই খুদে।
দাদার কাছেই প্রথম নাচের হাতেখড়ি মানবের। নাচের প্রথাগত শিক্ষা নেই কখনোই। কিন্তু দাদার ও বাবার স্বপ্নপূরণ করতে ডান্স বাংলা ডান্সের মঞ্চে নিজের দক্ষতার পরীক্ষা দিয়ে চলেছে সে। ১১ বছরের মানবের লড়াই জয়ী হওয়ার। বাড়িতে অসুস্থ মা রয়েছে মানবের। বাবা চলে যাওয়ার পর থেকে নিজেকে ঘরবন্দি করে রাখতেন তিনি। অর্থের অভাবে চিকিৎসা হত না সঠিক চিকিৎসাও। মানবের জন্যই তিনি যেন আবার ফিরেছেন জীবনের মূল স্রোতে। মানব চায়, নাচের স্বপ্ন উড়ান দিয়েই একদিন দাদা ও মায়ের অর্থাভাব, কষ্ট দূর করবে সে। বিচারকের আসনের ভালবাসা আর মেন্টরদের শিক্ষাই মানবের পাথেয়... ডানায় ভর করে মানব একদিন পাড়ি দেবে খ্যাতির শিখরে... জিতে আনবে আকাশ জোড়া ভালবাসা আর একটু ভাল দিন। স্বপ্ন দেখছেন মানবের দাদা ও মা।
আরও পড়ুন: Kangana Ranaut: একরত্তি ভামিকাকে ডেটে যাওয়ার প্রস্তাব! 'সারল্য নষ্ট করবেন না' আর্জি কঙ্গনার