কলকাতা: রাস্তায় মাইলের পর মাইল হেঁটে চলেছেন লক্ষাধিক মানুষ। উদ্দেশ্য একটাই, কঠিন সময়ে বাড়ি ফেরা, কাছের মানুষের কাছে যাওয়া। কিন্তু বহু মানুষের পথ ফুরিয়ে গিয়েছে পথেই। বাড়ি ফেরা আর হয়নি। অসুস্থতা, অনাহার অথবা দুর্ঘটনা.. প্রাণ কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য মানুষের। করোনা পরিস্থিতি, লকডাউন আমাদের সামনে তুলে ধরেছিল এক মর্মান্তিক জীবনের ছবি, জীবনধারার ছবি, কড়া বাস্তবের ছবি। পরিযায়ী শ্রমিকদের সেই কঠিন পরিস্থিতি আর লড়াইয়ের গল্পকেই পর্দায় নিয়ে আসছেন অনুভব সিনহা (Anubhav Sinha)।  এই ছবির মুখ্যভূমিকায় রয়েছেন রাজকুমার রাও (Rajkummar Rao), পঙ্কজ ত্রিপাঠি (Pankaj Tripathi), ভূমি পেডনেকর (Bhumi Pednekar) ও দিয়া মির্জা (Dia Mirza)। ছবির নাম 'ভিড়' (Bheed)। 


মাতৃত্বের পরে এই ছবির হাত ধরেই বলিউড ছবিতে ফিরলেন দিয়া। কিন্তু কড়া বাস্তবকে তুলে ধরা এই ছবিতে অভিনয়ের আঁচ ব্যক্তিগত জীবনেও পড়েছিল দিয়ার। বাড়িতে ছোট্ট ছেলেকে ছেড়ে অভিনয়ে আসতের তিনি। এমনকি মুম্বইতে মায়ের কাছে ছেলেকে রেখে সফরও করতে হয়েছিল দিয়াকে। পর্দায় তাঁর চরিত্রে যেমন ফুটিয়ে তুলতে হয়েছিল বিচ্ছেদের যন্ত্রণা, তাকে যেন অন্তর দিয়ে অনুভব করতেন দিয়া। নিজের জীবনেও যদি এমন পরিস্থিতি হয়? ভয় পেতেন অভিনেত্রী। 


দিয়া বলছেন, '৬ মাসের ছোট্ট অভ্যানকে বাড়িতে রেখে আসা আমায় মানসিকভাবে ঠিক সেই পরিস্থিতির মধ্যেই ফেলেছিল, যেটা আমায় পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে হত। এমন লোকেশন বা পরিস্থিতিতে আমরা শ্যুটিং করতাম যেখানে আমার সঙ্গে অভ্যানকে রাখা সম্ভব ছিল নাম। মুম্বইয়ের বাড়িতে মা আর বৈভবের কাছে রেখে এসেছিলাম অভ্যানকে। ৬ মাসের খুদের থেকে এই প্রথম এতদিন দূরে থাকলাম আমি। গোটা পরিস্থিতিটা আমার জন্য মোটেই সহজ ছিল না। বরং বলব, শ্যুটিংয়ে এই কাজটাই সবচেয়ে কঠিন ছিল আমার জন্য।'


আরও পড়ুন: Bheed Trailer: বিতর্ক এড়াতে সিদ্ধান্ত? ইউটিউব থেকে সরল রাজকুমার, পঙ্কজের 'ভিড়'-এর ট্রেলার


দিয়া আরও বলেন, 'জন্মের পরে ২ মাস খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে অভ্যান। একাধিক অস্ত্রোপচার হয় ওর। ওকে বাড়িতে আনার পরে ভেবেছিলাম, প্রত্যেকটা মুহূর্ত অভ্যানের সঙ্গে কাটাব। একাধিক ছবিকে না বলেছিলাম সেসময়ে। কিন্তু 'ভিড়' ছবিটাকে বারণ করতে পারিনি। মনে হয়েছিল এই ছবিটা কেবল বিনোদনের জন্য নয়, তথ্য পরিবেশনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।'


মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কথা বললেন সহ অভিনেতা অভিনেত্রী ও পরিচালকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ দিয়া। তিনি বলছেন, 'সেটের সবাই আমার ভীষণ খেয়াল রাখতেন। এমনকি তাঁদের নজর ছিল আমার মানসিক পরিস্থিতির ওপরও। সেটের সবাই ভীষণ আবেগপ্রবণ ছিলেন। জন্মদিনে আমি যাতে আমার পরিবারকে মিস না করি, তারজন্যও সবরকম ব্যসস্থা করেছিলেন অনুভব, পঙ্কজ, রাজকুমার ও ভূমি।