কলকাতা:এই গল্পের ট্রেলার দেখে অনেকেরই মনে পড়েছিল 'পঞ্চায়েত' (Panchayat)-এর কথা। কিন্তু বাংলার এই ওয়েব সিরিজ সহজ সুতোয় গাঁথা কিছু সরল মানুষের গল্প, প্রেমেরও। 'হাগদা' গ্রামের এক সহজ সরল জীবনের গল্প বলেছে সদ্য মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ 'ডাকঘর' (Daakghor)। 


বর্ধমান থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের ওড়গ্রামই হয়ে উঠেছিল গল্পের হাগদা গ্রাম। ৪০ ডিগ্রির প্রবল গরম, খারাপ রাস্তাঘাট.. অনেক সময় ছিল না মেকআপ ভ্যানও! এবিপি লাইভের সঙ্গে 'ডাকঘর'-এর শ্যুটিংয়ের খুঁটিনাটি থেকে শুরু করে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন পর্দার মঞ্জরী ওরফে দিতিপ্রিয়া রায় (Ditipriya Roy)। 


দিতিপ্রিয়ার ভাষায়, 'ডাকঘর'-এর শ্যুটিং একটা 'রোলার কোস্টার রাইড'। অভিনেত্রী বলছেন, 'অনেক ছোট ছোট অভিজ্ঞতা, স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এই ছবিটার সঙ্গে। সবার প্রথমে যেটা বলব, 'ডাকঘর' আমায় কিছু ভাল বন্ধু দিল। ইন্ডাস্ট্রিতে আমার বন্ধুবৃত্ত ভীষণ সীমিত। পার্টিতে যেতে ভালবাসি না। 'ডাকঘর' করতে গিয়ে অনেক বন্ধু হয়েছে। আসলে আমরা যেভাবে শ্যুটিং করেছি..গ্রামের খারাপ রাস্তার দরুন মেকআপ ভ্যান যেতে পারেনি অনেক জায়গায়। অথচ দেখলাম সবাই কী উৎসাহের সঙ্গে সমস্ত কাজটা করলেন। আসলে কাজটা ভাল হলে কী পেলাম, কী পেলাম না সেটা আর মনে থাকে না। গোটা শ্যুটিংয়ে প্রচুর প্রতিকূলতা হয়েছে, কখনও গরম, কখনও বৃষ্টি, জল কাদায় পরিকল্পনামাফিক শট নেওয়া যায়নি। সব মিলিয়ে যাই হয়ে থাকুক না কেন.. তা এখন দর্শকদের দরবারে। মানুষ ভালবাসছেন এটাই পাওনা।'


তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, প্রশংসার বন্যায় ভাসছেন দিতিপ্রিয়া, সুহোত্র, কাঞ্চনেরা। অভিনেত্রী বলছেন, 'আমার সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। অনেকে লিখেছেন, দিতিপ্রিয়াকে এত সাদামাটা লুকে দেখে ভাল লাগছে। সুহোত্রর অভিব্যক্তি নিয়ে কথা হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, কাঞ্চা (কাঞ্চন মল্লিক), সুহোত্র, দিতিপ্রিয়া সবাই নিজের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছে। প্রশংসা সবসময়েই ভাল কাজ করতে উজ্জীবিত করে।'


অনেকেই বলেছেন, 'ডাকঘর'-এ মঞ্জরীর লুক মনে করিয়ে দিচ্ছে 'আয় খুকু আয়'-এর দিতিপ্রিয়াকে। এই দুটো চরিত্র কতটা আলাদা অভিনেত্রীর কাছে? দিতিপ্রিয়া বলছেন, 'বুড়ি আর মঞ্জরীর লুকের মিল রয়েছে। তবে দুজনের কথা বলার ধরণ আলাদা, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও আলাদা। তবে মঞ্জরী অনেকটা বড়, কলেজে পড়ে। সে নিজের পছন্দ-অপছন্দ সবই স্পষ্টভাবে বলতে পারে। খুকু অভিমানী, অনেক কম পরিণত। এদিক থেকে দুটো চরিত্রে এক্কেবারে আলাদা।'


আরও পড়ুন: Samantha Ruth Prabhu: অ্য়াকশন দৃশ্য়ের শ্য়ুটিং-এ গুরুতর আহত সামান্থা, এখন কেমন আছেন?


যে রাস্তায় মেকআপ ভ্যান নিয়ে যাওয়া গেল না, সেই রাস্তায় সাইকেল চালাতে হয় পর্দার মঞ্জরীকে! হেসে ফেলে দিতিপ্রিয়া বললেন, 'সাইকেলটা আমি চালাতে জানি। খুব ঘুরতে ভালবাসি আমি... আমাদের গ্রামে অনেক চেনাজানা মানুষও রয়েছেন। সেখানে গিয়ে গ্রামের রাস্তায় সাইকেল চালিয়েছি, বেগুন চুরি করেছি। তাই এটা আমার কাছে নতুন নয়।'


ছবির প্রচার শুরুর জন্য যে ছবি প্রকাশ পেয়েছিল, সেটা দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন, দিতিপ্রিয়া আর সুহোত্র প্রেম করছে। প্রেমটা সত্যি না হলেও বন্ধুত্বটা তো সত্যি? দিতিপ্রিয়া বললেন, 'একেবারেই। যাঁরা আমায় খুব ঘনিষ্ঠভাবে চেনেন, তাঁরা জানেন, ইন্ডাস্ট্রিতে দিতিপ্রিয়াকে পার্টিতে দেখা যায় না, বন্ধুর সংখ্যাও খুব কম। হাতে গোনা কয়েকজনের সঙ্গে আমি ঘনিষ্ঠ। এদের মধ্যে সুহোত্র একজন।'