মুম্বই: ‘আমি কখনও আমার গান শুনি না। এর কারণ শুনলেই আমার গাওয়ায় ১০০টা ভুল ধরা পড়বে আমার কানে, যেটা আমি চাই না। তাই একবার রেকর্ডিং হয়ে গেলে আর সেই গানের প্রতি আমার কোনও আগ্রহ থাকে না,‘। তাঁর ৯১ তম জন্মদিনে একটি সাক্ষাৎকারে এ কথা বললেন প্রবাদপ্রতিম সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর। তাঁর অনুরাগীদের মতে, লতার কোনও বিকল্প নেই। তাঁর মতামত জানতে চাওয়া হলে লতা বলেন, তিনি সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেন এ ব্যাপারে। লতার মতে সুগায়িকা তাঁর আগেও ছিলেন। নুরজাহান, শামশাদ বেগম বা গীতা দত্ত-রা সর্বকালের সেরা। তাঁর বোন আশা ভোঁসলেকেও সেরাদের মধ্যে অন্যতম হিসাবে উল্লেখ করেছেন তিনি। এই প্রজন্মের অলকা যাজ্ঞিক, শ্রেয়া ঘোষাল বা সুনিধি চৌহানও প্রতিভায় কোনও অংশে কম নন, এমনটাই মনে করেন লতাজি।
তিনি আরও বলেন, ৭৫ বছর ধরে শ্রোতারা যেভাবে তাঁর গান ভালেবেসেছেন, তাতে তিনি অভিভূত। তাঁর এই সাঙ্গীতিক সফরে তিনি দেখেছেন, বহু শিল্পী হারিয়ে গিয়েছেন কেবলমাত্র অহংকারের কারণে। তাই বরাবর তিনি মাটির কাছাকাছি থাকার, বিনয়ী থাকার চেষ্টা করেছেন। আজ তিনি যা, তাঁকে ঈশ্বরের এবং তাঁর মা-বাবার আশীর্বাদ বলে মনে করেন লতা।
নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে লতা বলেন, স্বকীয়তা থাকা জরুরি। তাঁর গান বা তাঁর সতীর্থদের গান গাইলেও সেই গায়কিতে যেন নিজস্বতা থাকে। স্বর্ণযুগের এইসব গানই এখনও মানুষ শুনতে পছন্দ করেন। একটা সময়ের পর এই নবাগত প্রতিভাদের নিজস্ব গানও নিশ্চয়ই জনপ্রিয় হতে শুরু করবে। আশা যদি না নিজস্ব গায়কি রপ্ত করত, তাহলে হয়তো তাঁরও নিজস্বতা তৈরি হত না। লতার ছায়া হয়ে তিনি থাকেননি। আশা হয়ে উঠতে পারেন নবাগতদের কাছে এক বিরাট দৃষ্টান্ত যে, প্রতিভা আর নিজস্ব গায়নশৈলীর জোরে কত দূর যাওয়া যায়।
ইন্দৌরে জন্মগ্রহণ করেন লতা মঙ্গেশকর। ১৯৪২ সালে একটি মরাঠি ছবির জন্য প্রথম গান রেকর্ড করেন তিনি। তাঁর জন্মদিনে সোশ্য়াল মিডিয়ায় শুভেচ্ছাবার্তা দেন আশা ভোঁসলে, কঙ্গনা রানাওয়াত সহ বহু সেলেব্রিটি।