কলকাতা: সম্প্রতি 'ইন্ডিয়ান সুপার লিগ'-এ পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে লিগশিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। ইস্টবেঙ্গল শেষ করেছে ৯ নম্বরে। প্লে অফের দৌড় থেকেও ছিটকে গিয়েছে লাল হলুদ শিবির। বাঙালি জীবনে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান তরজা অতি পরিচিত। এবার সেই নিয়ে মন্তব্য করেই বিপাকে মির্চি অগ্নি (Agnijit Sen) ও সৌরভ পালোধি (Saurav Palodhi)। ইস্টবেঙ্গল জার্সিকে অপমান করেছেন তাঁরা, এমনই অভিযোগে তোলপাড় হল সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media Troll)। অবশেষে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হল তাঁদের। 


'ইস্টবেঙ্গল জার্সিকে অপমান', গুরুতর অভিযোগ অগ্নি-সৌরভের বিরুদ্ধে!


সাধারণত ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান ম্যাচের ক্ষেত্রে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই দলের অনুরাগীদের মধ্যে তরজা থাকে তুঙ্গে। তবে কোনও সংস্থা বা কোনও সঞ্চালকের থেকে কোনও এক বিশেষ দলের জার্সিতে 'বার্নল' লাগানোর ভিডিও, তা মজা করে হলেও, অনেকেই ভালভাবে গ্রহণ করেনি। ISL-এ প্লে অফের দৌড়ে নেই ইস্টবেঙ্গল। অন্যদিকে পয়েন্ট টেবিল শীর্ষে মোহনবাগান। সেই নিয়েই 'মজা' করতে গিয়ে বিপাকেই জড়ালেন অগ্নিজিৎ সেন ওরফে মির্চি অগ্নি ও নাট্যকর্মী সৌরভ পালোধি। নেটিজেনদের রোষের মুখে পড়ে ক্ষমা চাইতেও বাধ্য হলেন তাঁরা।


সম্প্রতি একটি ভিডিও পোস্ট করেন তাঁরা। সেখানে দেখা যায় অগ্নির গালে ও ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে পুড়ে যাওয়ার ওষুধ হিসেবে বার্নল লাগিয়ে দিচ্ছেন মোহনবাগান সমর্থক সৌরভ পালোধি। এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র সমালোচনার শিকার হন তাঁরা। ব্যঙ্গ বিদ্রুপের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা ক্ষোভ উগরে দেন নেটদুনিয়ায়। শুধু তাই নয়, লাল-হলুদ সমর্থকদের পাশে দাঁড়ান মোহনবাগান সমর্থকেরাও। কোনও দলের জার্সির 'অপমান' তাঁরাও মেনে নেননি একেবারেই। তোলপাড় হয় নেট মাধ্যম। অনেক অনুরাগীই তাঁদের 'আনফলো' করার কথাও বলেন সেখানে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফেও। পরিস্থিতি এমনই হয় যে সর্বসমক্ষে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন অগ্নি ও সৌরভ। 


ক্ষমা চাইলেন অগ্নি ও সৌরভ


সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনার শিকার হয়ে মির্চি অগ্নি একটি পোস্ট করেন নিজের পেজে। সেখানে দেখা যাচ্ছে লাল-হলুদ জার্সি পরে আছেন তিনি, তাতে নামও লেখা তাঁর। ক্যাপশনে লেখেন, 'ভুল স্বীকার করায় কোনও লজ্জা আমার কোনওদিনই নেই। সমস্ত সমর্থকদের কাছে এবং সর্বোপরি আমার হৃদয়ের টুকরো দলের কাছে নতমস্তকে ক্ষমা চাইছি (যদিও উদ্দেশ্য ছিল স্রেফ নির্মল মজা)। বারুদ মশালের আগুন আমার কাছেও আবেগ, জার্সি মানে আমার কাছেও লড়াইয়ের প্রতীক। এটুকুই বলতে পারি ভাল, খারাপ নির্বিশেষে লাল হলুদ ছিলাম, আছি, থাকব। জয় ইস্টবেঙ্গল।'


 



আরও পড়ুন: Suchitra Sen: মহানায়িকার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ক্লিকের বিশেষ উদ্যোগ, 'স্মরণে সুচিত্রা'


পোস্টে ক্ষমা চেয়ে নেন সৌরভ পালোধিও। তিনি একটি পোস্ট করে লেখেন, 'আমার আর অগ্নির একটা ভিডিওর প্রোমো নিয়ে সবাই খুব রেগে গেছেন জানি। যদিও ভিডিওটা গোটা দেখতে পেলে মত পাল্টে যেত। তবে সেটা আর আপনাদের এগিয়ে আসার জন্য আপাতত হল না। তবে আমি যদি অসম্মান করে থাকি, আমি অনুতপ্ত। নিছক মজাই ছিল, তবে আবারও বলছি গোটা ভিডিওর একটা অংশ। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে জার্সি নিয়ে মজা করাটা উচিত হয়নি। অনেকেই কষ্ট পেয়েছেন। আমি নিজে হয়তো মোহনবাগান সমর্থক কিন্তু আমি কখনওই মাঠের বাইরে ইস্টবেঙ্গল বিরোধী নই। আমার বাড়ি ভর্তি ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। মাঠের বাইরের এই ঝামেলার চিরকাল বিরোধিতা করেছি। অদ্ভুতভাবে লোটা মাচা করে ঝামেলা কিংবা একে অপরকে নোংরা গালি এতো রোজ দেখতেই পাচ্ছি। এ উভয় দলের সমর্থকরাই করে থাকে। সেটাও ঠিক না। কাঁটাতার বলে মজা করা কিংবা রেফিউজি বলা, এসবের চিরকাল বিরোধিতা করে এসেছি আগামীতেও করব। তবে আমি আবারও বলছি প্রচুর ইস্টবেঙ্গল সমর্থক আমাদের দলের নম্বরে, আমার মেসেঞ্জারে নানান খারাপ কথা লিখছেন, তাঁরা কষ্ট পেয়েছেন বুঝেছি, আমি সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। যাক গে, এরপর থেকে দল নির্বিশেষে খারাপ গালিগালাজের বিরোধিতা করবেন সবাই আশা রাখছি।'


 



তবে এত কিছু সত্ত্বেও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিম বা ট্রোলের বন্যা থামছে না। তাঁদের ক্ষমা চাওয়ার পোস্টেও সমালোচনার ছড়াছড়ি নজরে পড়ার মতো। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।