কলকাতা: লকডাউনের সময় মানুষ কিছুটা বাধ্য হয়েই ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে বেছে নিয়েছিলেন বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে। সেই সময় ইন্ডাস্টির মনে কাজ করত অমোঘ এক আশঙ্কা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের মানুষ প্রেক্ষাগৃহে এসে সিনেমা দেখবেন তো? নাকি বদলে যাবে আমূল অভ্যাসটাই।
স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সব ফিরলেও, মানুষের প্রেক্ষাগৃহে ফিরতে একটু সময় লেগেছে বই কি। তবে মানুষ যে আবার হলমুখী হবে, সেই ইঙ্গিত প্রথম পাওয়া গিয়েছিল হলিউড ছবি 'স্পাইডারম্যান নো ওয়ে হোম' মুক্তির সময় থেকে। মানুষ ভিড় করে দেখেছিলেন সেই ছবি। এরপর অবশ্য বলিউডের পালা। বেশ কয়েকটা বছর ধরে বলিউডে ফ্লপ ছবির ঝুলি ভারি হচ্ছে ধীরে ধীরে। সেই খরায় 'পাঠান' ছিল বৃষ্টিপাত। তুলনামূলকভাবে অনেকটাই ভাল জায়গায় দাঁড়িয়ে স্থানীয় ভাষার ছবি। দক্ষিণী ছবির পরে যে ছবি ধীরে ধীরে বাজারে নিজেদের পদচিহ্ন রাখতে শুরু করেছে, তা বাংলা ছবিই।
শাহরুখ খানের 'পাঠান' ছবি মুক্তির দিন গোটা দেশে বহু হল ফের খুলেছিল। আর বাংলায় সেই ট্রেন্ডই কী তুলে ধরল শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (Shiboproshad Mukherjee) ও নন্দিতা রায়ের (Nandita Roy) প্রযোজনায় তৈরি অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি 'ফাটাফাটি'। আজ এই ছবির হাত ধরেই চন্দনগরে উদ্বোধন হল একটি প্রেক্ষাগৃহের।
আজ সকালেই শহরতলির সেই প্রেক্ষাগৃহ উদ্বোধন করেন 'ফাটাফাটি'-র নায়ক খোদ আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee)। নতুন ছবি মুক্তির দিন নতুন প্রেক্ষাগৃহ উদ্বোধন করে যারপরনাই খুশি তিনি। ছবির সাফল্যের মুকুটে এও যেন এক পালক।
নতুন ছবি নিয়ে গোটা কলকাতা জুড়েই প্রচার করেছে টিম 'ফাটাফাটি'। শহরতলির হৃৎস্পন্দন কী অনুভব করলেন আবির? এবিপি লাইভকে অভিনেতা বলছেন, 'করোনার সময় আমরা সবাই আশঙ্কায় ছিলাম যে আর প্রেক্ষাগৃহ খুলবে কি না। সেইখানে শহরতলিতে নতুন একটি ঝাঁ চকচকে আধুনিক প্লেক্স খুলছে, তাও আবার আমাদের ছবি দিয়ে, এটা সত্যিই বড় পাওয়া। এখনও অনেকে বলেন, বাংলা ছবির দুর্দশার কথা। আমার তো তা মনে হয় না। বাংলা ছবি নিজের জায়গায় উজ্জ্বল। আজ প্রেক্ষগৃহ উদ্বোধন করে, মানুষের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম, এখনও বড়পর্দায় সিনেমার নেশাটা মানুষের মন থেকে মুছে যায়নি।'
'পাঠান' এর পরে বাংলায় 'ফাটাফাটি' হাত ধরে হল খুলল.. প্রশ্ন থামিয়ে আবির বললেন, আমি কোনও তুলনা করতে চাই না। প্রত্য়েকটা ছবি নিজের জায়গায় স্বকীয়। আমার কাছে যখন এই চিত্রনাট্য়টা আসে, তখন আমি ভেবেছিলাম, এমন গল্প বলা দরকার। এবার মানুষের ভাল লাগলেই আমাদের কাজটা সফল হবে। আর হ্যাঁ, মানুষের ছবি দেখার রুচি যেমন বদলেছে, তেমনই বদলেছে প্রেক্ষাগৃহের ধাঁচও। এখন মানুষ উন্নত সাউন্ড, ঝকঝকে ছবিতে আরাম করে বসে সিনেমা দেখতে চায়। দর্শকদের হলমুখী করতে হলেও এই ধরনের সুবিধাগুলো আমাদের পৌঁছে দিতে হবে দর্শকদের কাছে।'
আজ শহরের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে এবিপি লাইভ। বুঝতে চেষ্টা করেছে এই ছবি নিয়ে মানুষের আবেগকে। আর সেখানে অনেকের মুখেই শোনা গেল.. 'আবিরের জন্যই ছবিটা দেখতে এসেছি।' এই খবর আবিরকে জানাতে স্বভাবতই লাজুক হেসে ফেললেন আবির। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, এই ছবিতে সবাই দুর্দান্ত অভিনয় করেছে। ছবিটা আমার একার নয়, গোটা টিমের। ছবি মানুষ যে ছবিটা দেখেছেন, সেটা আমার কাছে বিশাল প্রাপ্তি।'