কলকাতা: প্রায় ৩ মিনিটের ট্রেলার জুড়ে টান টান রহস্য। পাহাড় যেন আরও বেশ কুয়াশায় মোড়া, সেই কুয়াশা কি রহস্যের? আর সেই কুয়াশার অন্ধকারেই 'আলোর দিকে' মোড় নেবে ফেলু মিত্তিরের কেস? মুক্তি পেল নতুন ওয়েব সিরিজ 'ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি (Feludar Goyendagiri)'-র ট্রেলার। আর সেই ট্রেলারে স্বমহিমায় 'ফেলুদা'-র ভূমিকায় নজর কাড়লেন টোটা রায়চৌধুরী (Tota Roychowdhury) আর পাশাপাশি অবশ্যই রইলেন জটায়ু অনির্বাণ চক্রবর্তী  (Anirban Chakraborty) ও তোপসে কল্পন মিত্র (Kolpon Mitra)। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের (Srijit Mukherjee) -র হাত ধরে 'হইচই'-এর ওয়েব প্ল্যাটফর্মে- ১৭ জুন মুক্তি পাবে এই সিরিজ। 


ছবি নিয়ে টোটা বলছেন, 'আর সব বাঙালির মতো ফেলুদা আমার কাছেও আবেগ। পর্দায় ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করে একজন অভিনেতা হিসেবে আমি সম্মানিত বোধ করছি। এই সুযোগের জন্য আমি আমার পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও হইচই -কে ধন্যবাদ দিতে চাই।'


প্রথম যখন জানলেন, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের (Srijit Mukherjee) ফেলুদা আপনি, কেমন ছিল সেইদিনটা? এবিপি লাইভের প্রশ্নের উত্তরে 'ফেলুদা' টোটা বললেন, 'আমি প্রথমে আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম। সৃজিত আমায় টেক্সট করেছিল, তোমার কোনও অডিশান নেব না। আমি তোমায় মনোনীত করলাম, তুমিই আমার ফেলুদা। মেসেজটা পেয়ে আমার চোখ ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। ভাবছিলাম, 'কী লিখেছে? তুমি আমার ফেলুদা নয়? অডিশান নেওয়ারও দরকার নেই? আমি বুঝতে পারিনি... বার্তাটি আত্মস্থ করতে আমার ১০ মিনিট সময় লেগেছিল। মনে আছে, আমি ধপ করে বসে পড়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, জীবনে এই একটা পাওয়া যেটা মন প্রাণ দিয়ে চেয়েছিলাম। সেটা পূরণ হলে যতটা আবেগপ্রবণ হয় মানুষ, ততটাই হয়েছিলাম। তারপর সৃজিতকে ফোন করে বলেছিলাম, তুমি আমার এই চাওয়াটা পূর্ণ করে দিলে, তার জন্য আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।'


আরও পড়ুন: Prithviraj Film Tax-free: 'সম্রাট পৃথ্বীরাজ' ছবিকে করমুক্ত করার ঘোষণা উত্তরাখণ্ড মুখ্যমন্ত্রীর


টলিউড থেকে শুরু করে বলিউড, সৃজিত মুখোপাধ্যায় (Srijit Mukherjee) ব্যস্ত পরিচালক। তবে ফেলুদার ছবির শ্যুটিং করার সময় নাকি সবচেয়ে খুশি থাকেন তিনি। এবিপি লাইভকে পরিচালক বলছেন, 'ফেলুদার শ্যুটিং করার সময় কোনও নেতিবাচক মানসিকতা আমায় স্পর্শ করে না। সে শ্যুটিং হোক বা সোশ্যাল মিডিয়া। কারণ ফেলুদার শ্যুটিং করার সময় আমার পাশে সেই ১০ বছরের ছেলেটা বসে থাকে যে ভবানীপুরের বইয়ের দোকান থেকে পাতলা পাতলা বইগুলো কিনে আনত। নতুন বইয়ের গন্ধের সঙ্গে মিশে থাকত ফেলুদার অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধ, তার বাবার স্মৃতি। সেইসব স্মৃতি যেন তাকে বর্মের মতো আগলে রাখে সমস্ত খারাপ কিছুর থেকে। সব মিলিয়ে ফেলুদার শ্যুটিং এক্কেবারে অন্যরকম অভিজ্ঞতা, অতুলনীয়। তখন মনে হয় পৃথিবীতে আর কিছু নেই, কেবল ফেলুদাই সত্য।'


বাঙালির আবেগের সঙ্গে মিশে রয়েছে 'ফেলুদা'। তাকে পর্দায় তুলে ধরা কতটা গুরুদায়িত্ব? প্রায় প্রশ্নের মাঝখান থেকে সৃজিত বলে উঠলেন, 'দায়িত্বের কথা আমি মাথাতেই রাখি না। সত্যি বলতে ফেলুদা আমি নিজের জন্য বানাই। সেটা যদি মানুষের ভালো লাগে সেটা উপরি পাওনা। কারণ ফেলুদা আমার ছোট থেকে বড় হওয়া, ফিল্মমেকার হয়ে ওঠার হাত ধরছে। ফেলুদা আমার ব্যক্তিগত উদযাপন। আমার মাথায় প্রতিযোগিতা, আরও ভালো করব এসব কাজই করে না।'