কলকাতা: মাদকাসক্তি যে তাঁকে বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে, সে কথা বিলক্ষণ জানতেন। সেই মাদকই কি কাল হল 'ফ্রেন্ডস'-র চ্যান্ডলার বিং ওরফে ম্যাথু পেরির ( Matthew Perry Death )? ৫৪ বছরের অভিনেতার মৃত্যু নিয়ে মেডিক্যাল এগজামিনার যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে সে রকমই ইঙ্গিত। উঠে এসেছে 'কেটামিন' (Ketamine Overdose) নামে এক মাদকের কথা। রিপোর্টে লেখা, দুর্ঘটনাবশত 'কেটামিন'-র ওভারডোজেই প্রাণ হারান ম্যাথু।

  


কী জানা গেল?
গত অক্টোবরে, লস অ্যাঞ্জেলিসে বাড়ির বাথটাবে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া যায় ম্যাথুকে। পরে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। অভিনেতার মৃত্যু-তদন্তে হালে ইতি টানলেন মেডিক্যাল এগজামিনররা। তাঁদের রিপোর্টেই 'কেটামিন ওভারডোজের' কথা উঠে এসেছে। তাঁর যে মাদকাসক্তি এবং তার জেরে নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতা ছিল, সে কথা অজানা নয়। কিন্তু মৃত্য়ুর আগে, প্রায় বছরদুয়েক মাদক থেকে দূরে ছিলেন পর্দার 'চ্যান্ডলার'। সেক্ষেত্রে তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে 'কেটামিন ওভারডোজ'-র বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় গোটা দুনিয়াজুড়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলিস কাউন্টি মেডিক্যাল এগজামিনারের দফতরের তরফে বলা হয়েছে, 'কেটামিনের তীব্র প্রভাবই মৃত্যুর মূল কারণ। তবে, জলে ডুবে যাওয়া, করোনারি আর্টারি ডিজিজ এবং বুপ্রেনরফিনের প্রভাবও কিছুটা দায়ী। সব মিলিয়ে দুর্ঘটনাবশতই মৃত্য়ু হয় তাঁর।' ম্যাথু তাঁর 'মেমোয়া'-তে লিখেছিলেন, মাদকাসক্তির সঙ্গে যখন তুমুল লড়াই করছেন, তখন কী ভাবে এই 'কেটামিন'-র উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। যন্ত্রণা কমানো এবং অবসাদ কাটাতে এই মাদকই ভরসা ছিল অভিনেতার।


কেটামিন কী?
ডাক্তারি শাস্ত্র অনুযায়ী, অ্যানাস্থেশিয়া এবং কিছু ধরনের অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্টের মধ্যে ব্যবহৃত হয় 'কেটামিন'। তবে নিছক আমোদ-আহ্লাদের জন্য এর ব্যবহার বেআইনি। অভিনেতার মৃত্যু নিয়ে যে মেডিক্যাল এগজামিনারের রিপোর্ট বেরিয়েছে, তাতে বলা হচ্ছে, এক দিন বাদে এক দিন, এই নিয়মে কেটামিন ইনফিউশন থেরাপি' করাতেন ম্যাথু। তবে মৃত্য়ুর আগে 'কেটামিন' নেওয়া কমিয়ে দিয়েছিলেন। চিরঘুমে চলে যাওয়ার দেড় সপ্তাহ আগে সম্ভবত শেষ বার নেন এটি। ডাক্তারদের ধারণা, হঠাৎ করে এটির ওভারডোজ ম্যাথুর কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম সহ্য করতে পারেনি। ধাক্কা লাগে শ্বাসযন্ত্রেও। COPD আক্রান্ত অভিনেতার শরীরে অক্সিজেন চলাচল বাধা পায়, শ্বাসকষ্টও শুরু হয়েছিল সম্ভবত। তার পরে...
'কেটামিন' নেওয়ার পরে ঠিক কী রকম লাগত, সে কথা 'মেমোয়া'-য় স্পষ্ট লিখে যান ম্যাথু। বলেছিলেন, 'ওটা নিলে মনে হত, বেলচা নিয়ে কেউ মাথায় মেরেছে। তবে বেলচার আঘাতটা অত্যন্ত আরামদায়ক ছিল। যদিও পরে এতটাই ভয়ঙ্কর হ্যাংওভার হত যে ওই আরামের সব কেটে যেত।'
সাময়িক 'আরাম'-ই কি কাল হল পর্দার সদাহাস্যময় চ্যান্ডলারের? নাকি বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধান না মেনে এগিয়েছিলেন তিনি আর তাতেই বিপদ? হয়তো উত্তর আর মিলবে না। রয়ে যাবে হাসি, স্মৃতি আর অপূর্ণ 'বন্ধুরা'...  


আরও পড়ুন:ধারাবাহিক শেষ হতে না হতেই শ্রুতির 'স্বপ্নপূরণ'.. কী সেই সুখবর?