মুম্বই: দেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীত পরিচালক তিনি। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। অস্কারও জিতেছেন। অথচ এই সফল ব্যক্তি এ আর রহমান একটা সময় নিজেকে ব্যর্থ মনে করতেন। এই ধারণা তাঁর মনে এতটাই প্রভাব ফেলেছিল, তিনি আত্মহত্যা করার কথাও ভাবতেন! নিজেই এই কথা জানিয়েছেন।

আত্মজীবনী প্রকাশ অনুষ্ঠানে জীবনের কঠিনতম সময় প্রসঙ্গে রহমান বলেছেন, ‘২৫ বছর বয়স পর্যন্ত আমি আত্মহত্যার কথা ভাবতাম। আমরা বেশিরভাগ মানুষই নিজেদের যথেষ্ট যোগ্য মনে করি না। আমি বাবাকে হারানোর পর শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। সেই সময় আমার জীবনে অনেককিছু ঘটছিল। কিন্তু সেইসব ঘটনাই আমাকে সাহসী করে তোলে। মৃত্যু সবার কাছেই স্থায়ী বিষয়। সব সৃষ্টিরই যখন শেষ আছে, তখন কেন কোনও একটি বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন হব?’

সাফল্যের পথে যাত্রার বিষয়ে এই সঙ্গীত পরিচালক বলেছেন, ‘চেন্নাইয়ে একটি রেকর্ডিং স্টুডিও খোলার পরেই আমার জীবনের মোড় ঘুরে যায়। তার আগে পরিস্থিতি অন্যরকম ছিল। বাবার মৃত্যুর কারণে আমি ৩৫টি ছবিতে কাজ করার অফার পেলেও, মাত্র দু’টিতে কাজ করি। সবাই অবাক হয়ে প্রশ্ন করত, কীভাবে আমি বেঁচে থাকব? সবাই বলত সুযোগ কাজে লাগাতে। আমার তখন ২৫ বছর বয়স। আমি সব অফার গ্রহণ করতে পারিনি। ১২ থেকে ২২ বছর বয়সের মধ্যে আমি গানের বিষয়ে সবকিছু শিখে নিয়েছিলাম। তাই সঙ্গীত পরিচালনা আমার কাছে সাধারণ বিষয় ছিল। আমার একই কাজ করতে ভাল লাগত না।’

১৯৯২ সালে ‘রোজা’ ছবিতে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে রহমানের অভিষেক হয়। এরপর আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি সঙ্গীতে বদল আনেন। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনেও বদল আসে। তিনি সপরিবারে ধর্মান্তরিত হন। এ বিষয়ে রহমান বলেছেন, ‘আমার আসল নাম দিলীপ কুমার কোনওদিনই পছন্দ ছিল না। আমার মনে হত, ওই নামটার সঙ্গে আমার ব্যক্তিত্বের কোনও মিল নেই। আমি অন্য মানুষ হতে চাইতাম। অতীতের সব বোঝা ঝেড়ে ফেলে আমি নতুন মানুষ হতে চাইতাম।’