জয়পুর: প্রয়াত বলিউড অভিনেতা ইরফান খান। বুধবার মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মারণ কর্কটরোগ ও শেষদিকে কোলনের সমস্যায় ভুগছিলেন ৫৪ বছরেনর ইরফান। চোখের ভাষা দিয়ে কী ভাবে অনেক কিছু বুঝিয়ে দেওয়া যায়, তা দেখিয়েছিলেন ইরফান। নিজের অভিনয় জীবনের শুরুটা করেছিলেন রাজস্থানের জয়পুরে।
এক সাক্ষাৎকারে ইরফান বলেছিলেন, আমি একদিন রবীন্দ্র মঞ্চের দফতরে পৌঁছে সেখানে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের বলি, আমি নাটক করতে চাই। জবাবে, ওরা বলেন, এটা তো অফিস। এখানে নাটক হয় না। আপনি নাট্যমণ্ডলীর সঙ্গে দেখা করুন। তখন আমি মণ্ডলীর সঙ্গে যোগাযোগ করি। সেখান থেকেই আমার অভিনয়ের সফর শুরু। অভিনেতা জানিয়েছিলেন, তাঁর অভিনীত প্রথম নাটক ছিল 'জ্বলতা বদন'।
জয়পুরে ইরফান খান প্রাথমিক শিক্ষালাভ করেন। তিনি জানান, প্রথম দিকে পড়াশোনায় মন বসলেও, পরের দিকে অভিনয়ের দিকেই ঢলে পরেছিলেন। প্রয়াত অভিনেতার পরিবার ও বন্ধুরা জানিয়েছেন, ছোটবেলায় ইরফান ভীষণই লাজুক প্রকৃতির ছিলেন। যদিও, বিদ্রোহ মনোভাব চিরকাল তাঁর মধ্যে লুকিয়ে ছিল।
ইরফানের জন্ম জয়পুরের একটি পঠান পরিবারে। যদিও, এই পরিবারের শিকড় ছিল টোঙ্ক প্রদেশে। জয়পুরে নাটকের হাতেখড়ি হওয়ার পর ইরফান চলে আসেন দিল্লিতে। ভর্তি হন ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামাতে। সেখানেই অভিনয়ের কৌশল দুরন্ত রপ্ত করে পোড়খাওয়া অভিনেতায় পরিণত হন তিনি। এবার ইরফানের গন্তব্য ছিল মুম্বই।
অনেকেই জানেন না, ইরফানের ক্রিকেট খেলারও শখ ছিল। জয়পুরের চৌগান স্টেডিয়ামে প্রায়ই ক্রিকেট খেলতে যেতেন। খারাপ খেলতেনও না। এমনকী, সি কে নাইডু ট্রফির জন্য তাঁর নামও নির্বাচিত হয়ে গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও, পরিবারের আপত্তিতে তাঁর ক্রিকেট খেলা হয়ে ওঠেনি। সেই থেকে তিনি ক্রিকেট থেকে দূরে সরে থিয়েটারে ডুব দেন।
ইরফান জানিয়েছিলেন, তাঁর পড়াশোনা নিয়ে বাড়ির পরিবেশ সবসময় গম্ভীর থাকত। ছোটবেলায় কাছে একটি সরকারি স্কুলে পড়তেন ইরফান। মায়ের ইচ্ছায় তাঁকে ভর্তি হতে হয় ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। কিন্তু, কোনওভাবেই ভাষা ঠিকমতো বলতে না পারায়, প্রায়ই তাঁকে শাস্তি পেতে হতো।