নয়াদিল্লি: 'কহো না পেয়ার হ্যায়'-এর (Kaho Naa Pyaar Hai) পর বলিউড অভিনেতা হৃতিক রোশন (Hrithik Roshan) যে পরিমাণ সাফল্য রাতারাতি পেয়েছিলেন তা খুব কম অভিনেতার ভাগ্যেই জোটে। এই ছবির পরই তাঁকে খানেদের সঙ্গে তুলনা করতে শুরু করা হয়, কিন্তু তখনও তিনি মাত্র একটি সিনেমাতেই কাজ করেছেন। নব্বইয়ের দশকে এই অভিনেতার সঙ্গে সিনেপ্রেমীদের যে সম্পর্ক শুরু হয়েছিল তা আজও অব্যাহত রয়েছে, পথে কিছু বাধা আসা সত্ত্বেও। হৃতিক রোশন আজ তাঁর ৪৮ তম জন্মদিন উদযাপন করছেন, এদিন বলিউডে তাঁর লঞ্চের সময় ফিরে দেখা যাক।


'ওয়ার' (War) ছবিটি একটি নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁর সহজ-সরল আকর্ষণ এবং স্বতঃস্ফূর্ততা প্রতিষ্ঠা করার পরে এটি অসম্ভব বলে মনে হতে পারে, কিন্তু এমন একটি সময় ছিল যখন অনেকেই তাঁর ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। বিশেষ করে ২০০২ সালে যখন বক্স অফিসে তাঁর বিশেষ কাজ ছিল না।


এমনকী কেউ কেউ তাঁর চলচ্চিত্র নির্মাতা বাবা রাকেশ রোশনকে (Rakesh Roshan) দায়ী করেন কারণ ২০০৩ সালের 'কোই মিল গয়া' (Koi Mil Gaya) ছবিতে মানসিকভাবে অসুস্থ একটি ছেলের চরিত্রে অভিনয় করান হৃতিককে দিয়ে। তাঁর সেই সিদ্ধান্ত ভুল বলে দাবি করেন অনেকেই। যদিও সেই সকল নেতিবাচক ব্যক্তিদের কথা উপেক্ষা করে নিজের মুকুটে নয়া পালক লাগান হৃতিক। আরও একটা হিট ছবি উপহার দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর অনুরাগীদেরও মন জয় করেন। 


আরও পড়ুন: Vikram Vedha First Look: মুখভর্তি দাড়ি-গোঁফ, অগোছালো চুলে হাজির 'বেদ', জন্মদিনে প্রকাশিত প্রথম লুক


২০১২ সালের 'ফিল্মফেয়ার'-এ রাকেশ রোশন বলেন, 'কারণ হৃতিক আমাকে সময় দেয় তাই আমি নতুন ঘরানা চেষ্টা করতে পারি। নয়তো কেউ কহো না পেয়ার হ্যায়-র পর কোই মিল গয়া করতে রাজি হত না। লোকজন বলেছিল যে আমি হৃতিককে মানসিকভাবে অসুস্থ একটি চরিত্রে অভিনয় করিয়ে ভুল করেছি।'


হৃতিক রোশনের বলিউডে ডেবিউ যেকোনও স্টারকিডের স্বপ্ন। ২০০০ সালে 'কহো না পেয়ার হ্যায়' ছবির মাধ্যমে ছেলেকে লঞ্চ করে প্রমাণ করেন যে শ্রেষ্ঠ ছবিটি ছেলের জন্য রেখে দিয়েছিলেন তিনি। হৃতিক তাঁর প্রথম ছবির পরই একজন সুপারস্টারের তকমা পান। তাঁর ছবি নব্বইয়ের দশকের কালজয়ী ছবি।


কিন্তু প্রথম দিন থেকেই এই 'ফ্যানডম' হৃতিক সামলাতে পারেননি। কখনও কখনও তিনি 'ইন্ডাস্ট্রি থেকে বাদ' পড়ে যাচ্ছেন ভেবেও ভীত হয়েছেন। রাকেশ রোশন বলেন এক সাক্ষাৎকারে, 'একদিন নিজের ঘরে হৃতিক কান্নাকাটি করছিল। আর সমানে বলছিল, আমি এসব সামলাতে পারছি না। আমি কাজ করতে পারছি না। আমি স্টুডিওয় যেতে পারছি না। বাসভর্তি ছেলেমেয়েরা আমার সঙ্গে দেখা করতে আসছে। আমি শেখার, অভিনয় করার বা কাজে মন দেওয়ার সুযোগই পাচ্ছি না। সকলেই খালি আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইছে।'


রাকেশ রোশন আরও বলেন যে তিনি তাঁর ছেলেকে বোঝান এসব যেন সে বোঝা না মনে করে। এই প্রশংসাকে আশীর্বাদ হিসাবে গ্রহণ করতে এবং এতে অভ্যস্ত হতে বলেছিলেন।


পরিচালকের কথায়, 'আমি অভিনেতা হিসেবে অনুত্তীর্ণ। কিন্তু যে কোনও অভিভাবকের মতো আমার ছেলেও নিজের স্বপ্নে বাঁচুক তাই চেয়েছিল। আমি জীবনে যা করতে পারিনি ও তা করেছে। ও আমাকে গর্বিত করেছে।'