নয়াদিল্লি: করোনা আবহে লকডাউনে বাড়িতে বসে গোটা দেশের প্রায় সমস্ত মানুষ। ঘরে বসে ছোট্ট ভাগ্নির পড়ার বই উল্টেপাল্টে দেখছিলেন এক হৃতিক অনুরাগী। চোখ আটকে যায় একটা পাতায়। ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্য বইয়ের পাতায় প্রিয় নায়কের ছবি! ছোট্ট করে লেখা রয়েছে নায়কের জীবন কাহিনী। বিষয়? আত্মবিশ্বাস।

আপ্লুত হয়ে সেই পাতার ছবি তুলে ট্যুইট করে ফেলেন হৃতিক অনুরাগী অরুণা মাহেন্দ্রণ। লেখেন, ‘বাড়িতে বসে বিরক্ত হচ্ছিলাম বলে ছোট্ট ভাগ্নির পাঠ্য বই পড়ছিলাম। হঠাৎ এটা দেখে অবাক হলাম। এটা ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্য বইয়ের পাতায় ছবি। সত্যিই, হৃতিক রোশনের থেকে ভালো আত্মবিশ্বাসের উদাহরণ আর কেই বা হতে পারেন।’



তামিলনাড়ুর স্কুলের বইয়ের আত্মবিশ্বাসের কাহিনির মধ্যে সত্যিই রয়েছে হৃতিক রোশনের জীবন কাহিনি। ছোটবেলায় কথা বলায় সমস্যা ছিল বলিউডের বর্তমান হার্টর্থবের। কথা বলার সময় তোতলামির সমস্যা ছিল তার। এর জন্য বন্ধুদের কাছে হেনস্থাও হতে হয়েছে তাঁকে। স্কুল থেকে ফিরে হামেশাই কান্নাকাটি করতেন। পরবর্তীকালে বিভিন্ন থেরাপি ও নিজের চেষ্টায় সেই সমস্যা সম্পূর্ন কাটিয়ে ওঠেন নায়ক। দীর্ঘক্ষণ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলা অভ্যাস করতেন তিনি।

এর আগে বেন ব্রুকের ‘স্টোরিজ ফর বয়েজ হু ডেয়ার টু বি ডিফারেন্ট’ বইতে ঋত্বিকের ছোটবেলার সমস্যার কথা লিখেছিলেন। একটি টিভি চ্যানেলের টক-শো তে এসে প্রথম নিজে মুখে নিজের কথা বলার সমস্যা ও তা কাটিয়ে ওঠার গল্প শোনান হৃতিক। তিনি বলেছিলেন, ‘যতক্ষণ না কথা বলা শুরু করছি ততক্ষণ সব ঠিক থাকত। কথা বলা শুরু হলেই ভয় করত, মনে হত সবাই একভাবে আমাকেই দেখছে।’

২০১৮ সালে হৃতিক তাঁর ব্লগে লেখেন তাঁর ভাইয়ের কঠিন সময়ের কথা। তিনি লিখেছিলেন, দিনরাত ভাইকে কথা বলা অভ্যাস করতে দেখেছেন তিনি। ঘন্টার পর ঘন্টা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতেন হৃতিক। ১৩ বছর বয়স থেকে এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য নিরলস পরিশ্রম করতেন নায়ক। ২২ বছর ধরে এই প্রচেষ্টার সাক্ষী থেকেছেন সুনাইনা রোশন নিজে। ব্লগে লিখেছেন সেই অভিজ্ঞতার কথা। ঋত্বিক বলেছিলেন, এটাই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা ছিল।

সম্প্রতি এক প্রফেসারকে এক ছাত্রের তোতলামি নিয়ে অপমান করার ঘটনায় সরব হয়েছিলেন হৃতিক। ট্যুইটারে লিখেছিলেন, ‘এটা কারুর দোষ নয় ও এর জন্য লজ্জিত হওয়ার বিন্দুমাত্র কারণ নেই।’