মুম্বই: দুরারোগ্য ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে ৫৪ বছর বয়সে চলে গেলেন ইরফান খান। হয়তো অনেক কষ্ট, যন্ত্রণা নিয়েই চিরবিদায় নিলেন পৃথিবী থেকে।  ভুগছিলেন কোলন ক্যান্সারে। নিউরোএনডোক্রাইন টিউমার হয়েছিল। তবে সেই কষ্টের চেয়েও নিঃসন্দেহে বেশি  কষ্ট পেয়েছিলেন  দিনকয়েক আগে ৯০ পেরনো মায়ের মৃত্যুর পর তাঁকে শেষবারের মতো দেখতে না পেরে।  লকডাউনের জন্য নিজে মুম্বইয়ে আটকে পড়ে থাকতে পারেননি মায়ের শেষকৃত্যে। মা  চলে যাওয়ার পরপরই শারীরিক কষ্ট বেড়ে যাওয়ায় ভর্তি হন মুম্বইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই অম্বানি হাসপাতালে। সেখানেই আজ শেষ নিঃশ্বাস পড়ল।


ইরফানের মৃত্যুর ব্যাপারে তাঁর পরিবার সরকারিভাবে যে বিবৃতি প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে, ‘আমার স্থির বিশ্বাস, আমি আত্মসমর্পণ করেছি।’

২০১৮ সালে নিজের ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইয়ের কথা প্রথম প্রকাশ করে যে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া বার্তা দিয়েছিলেন, তাতে এই কথাটাই বলেছিলেন নামী অভিনেতা। কম কথার মানুষ, নীরবে ভিতরের কথা প্রকাশ করার ক্ষমতাধারী অভিনেতা ছিলেন। গভীর চোখের ভাষায়, স্ক্রিনে স্মরণীয় অ্যাকশনে ফুটিয়ে তুলতেন ছবির গল্প। এটা খুবই বেদনার দিন, ওঁর চলে যাওয়ার খবর দিতে হচ্ছে। ইরফান ছিলেন এক জোরালো সত্ত্বার অধিকারী, একেবারে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতেন, সবসময় ওঁর কাছে আসা লোকজনকে অনুপ্রেরণা দিতেন।

২০১৮য় বিরল ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার খবর চমকে দিয়েছিল ওঁকে,  কিন্তু তারপর জীবনকে সহজভাবেই গ্রহণ করেছিলেন, কঠিন লড়াই চালিয়েছিলেন। অস্তিত্বের সঙ্গী ছিল সেই লড়াই। যে পরিবারের সবচেয়ে বেশি খেয়াল রাখতেন, তার ভালবাসায় ঘিরে থাকা বন্ধন ছেড়ে অন্য দুনিয়ায় চলে  গেলেন, পিছনে রেখে গেলেন এমন এক ঐতিহ্য, যা  সত্যিই তাঁর নিজের। উনি চিরশান্তিতে ঘুমোন, এই প্রার্থনা করি। ওঁর মুখের  কথারই প্রতিধ্বনি করে বলি, আমি যেন জীবনের স্বাদ প্রথমবার নিচ্ছি, এটাই তার ম্যাজিক।