কলকাতা: তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন বহুদিনের, জলঘোলাও নেহাত কম হয়নি। তবে অবশেষে সব বাধা বিপত্তি, জল্পনা পেরিয়ে এক হয়েছে চার হাত। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভালবাসার দিনেই, আইনি বিয়ে সেরেছেন অভিনেতা বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mallick) ও অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ (Sreemoyee Chattoraj)। তবে সেই খবর প্রকাশ্যে এসেছে ১৯ তারিখ রাত ১২টার পর। নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় রেজিস্ট্রির (Registry Marriage) ছবি শেয়ার করেন অভিনেত্রী। অনুষ্ঠান করে বিয়ের পরিকল্পনা কবে? কী প্ল্যানিং? এবিপি লাইভকে ফোনে জানালেন শ্রীময়ী।
বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী?
রেজিস্ট্রি সেরেছেন ১৪ ফেব্রুয়ারি। শোনা যাচ্ছিল, ৬ মার্চ সোশ্যাল ম্যারেজ, বা যাকে বলে অনুষ্ঠান করে বিয়ে করবেন কাঞ্চন মল্লিক ও শ্রীময়ী চট্টরাজ। এদিন এবিপি লাইভের তরফে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে অভিনেত্রী বলেন, '৬ মার্চ আমরা একটা ছোট করে গেট-টুগেদারের আয়োজন করছি। একটা রিসেপশনের আয়োজন করছি। এত কম সময়ে তো ভেন্যু পাওয়া সেভাবে সম্ভব হয়নি। পুরোটাই কাঞ্চন দেখছে।' আর সাজ-পোশাক? রেজিস্ট্রির দিনে লাল পোশাকে সেজেছিলেন দম্পতি, রিসেপশনে কেমন হবে সাজ? শ্রীময়ীর কথায়, 'এখনও কোনও প্ল্যান নেই। মুম্বই থেকে একজন ডিজাইনারের আসার কথা। বৃহস্পতিবার তিনি পৌঁছবেন। তারপর তিনি যেমন সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই পরব।'
২০১২ সালে 'বাবুসোনা' সিরিয়ালে ক্যামিও চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শ্রীময়ী। সেখানেই কাঞ্চন মল্লিকের সঙ্গে তাঁর প্রথম আলাপ। এরপর এসকে মুভিজের 'খিলাড়ি'তেও কাজ করেছেন। তাঁর সঙ্গে অভিনেতা বিধায়কের সম্পর্ক নিয়ে প্রবল জলঘোলা হয়েছে এর আগে। সেই সব কখনও নেতিবাচকতা আনেনি মনে? প্রভাব ফেলেনি শরীরে বা মনে বা সম্পর্কে? অকপট শ্রীময়ী হাসতে হাসতে বলছেন, 'জলঘোলা তো প্রচুর হয়েছে। উত্তম-সুচিত্রার পর বোধ হয় আমরাই হিট হয়ে গেছি। সম্পর্কে কোনওদিন কোনও প্রভাব ফেলেনি, কারণ দুটো মানুষ যাঁদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তাঁরা যদি জানেন যে নিজেরা ঠিক না ভুল, তাহলে কোনও সমস্যা হয় না। তবে প্রথমদিকে আমার ক্ষেত্রে সত্যিই প্রভাব ফেলেছিল, কারণ পরিবার। আমার পরিবারের কেউই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত নন। আমার দাদু আছেন, দিদা আছেন। তাঁরা যথেষ্ট বয়স্ক। মা খুব কষ্ট পেয়েছিলেন, প্রবল কান্নাকাটি করেছিল। সকলেরই মেয়ে-নাতনিকে নিয়ে চিন্তা হবেই। আসলে প্রথমদিকে তো সম্পর্কের সমীকরণ এমন ছিল না। কারণ যে মানুষটাকে নিয়ে কথা হচ্ছে তাঁকে আমি দশ বারো বছর ধরে চিনি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছবি রয়েছে। আর মানুষের তো দোষ দেওয়া স্বভাব। মানুষের তিনটি হাত, কিছু না হলে অজুহাত বেরিয়ে পড়ে। তখন সাময়িক মনে হয়েছিল আমাকে কেন স্কেপগোট করা হচ্ছে! কিন্তু একটা খুব সত্য কথা, কারও সম্পর্ক তৃতীয় কারও জন্য ভাঙে না। সেটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক হোক বা প্রেমিক-প্রেমিকা বা মা-বাবা হোক বা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হোক। নিজেদের মধ্যে সম্পর্কে গাফিলতি না থাকলে কেউ সম্পর্ক ভাঙতে পারে না। তখনই তৃতীয় ব্যক্তির আগমন ঘটে। আমি তাই মনে করি নিজেদের শক্তিশালী করা উচিত। এখন সত্যি কথা আর কিছু যায় আসে না। এখন যা যা দেখি, তাতে হাসি পায়। মানুষের কাজ তো বলবেই, ভাল করলেও বলবে, খারাপ করলেও বলবে। কিছু মানুষ থাকেন শুভাকাঙ্ক্ষী, কিছু মানুষ খারাপ চান। আমার তাই মনে হয় একেবারে ছেঁকে ফিল্টার করে নেওয়াই উচিত।'
কথায় কথায় জানা গেল প্রচণ্ড খাদ্যরসিক শ্রীময়ী। ক্যামেরার সামনে কাজ হলেও খেতে খুবই ভালবাসেন। রেজিস্ট্রির দিন যেহেতু সরস্বতী পুজো ছিল তাই একেবারে নিরামিষ মেনু ছিল। শ্রীময়ী বলছেন, 'আমি ভীষণ খাদ্যরসিক বাঙালি। আমি তো কাল রাতেও বিরিয়ানি খেয়েছি। ১৪ তারিখ যেহেতু সরস্বতী পুজো ছিল তাই একেবারে নিরামিষ মেনুতে ছিল ফ্রায়েড রাইস, ফুলকপির রসা, পনির বাটার মশলা, চাটনি, পায়েস আর মিষ্টি।' ফলে ৬ মার্চ এলাহি খাওয়া-দাওয়ার আশ মিটিয়ে নেবেন অভিনেত্রী, তা একেবারেই স্পষ্ট। অভিনেত্রী হলেও খাওয়া-দাওয়া নিয়ে বিশেষ রেস্ট্রিকশন তাঁর নেই। বরং যখন যা ইচ্ছা করে তাই খান। তাঁর কথায়, 'মন ভাল থাকলে শরীর এমনিই ফিট থাকবে। মনে যদি নেগেটিভিটি ভর্তি থাকে, তাহলে তার ছাপ মুখে চোখে ফুটে ওঠে।'
কিছুদিন আগেই জানা যায় অভিনেত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে কাঞ্চন মল্লিকের। অতীত ভুলে এখন শ্রীময়ীর হাত ধরে নতুন জীবন শুরু করেছেন তিনি। দুজনেই ব্যস্ত ৬ তারিখের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের রেজিস্ট্রির পোস্ট ভরেছে শুভেচ্ছাবার্তায়।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।