নয়াদিল্লি: অভিনয় জীবন আগাগোড়া বিতর্কিত। রাজনীতিতেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। বিতর্কিত মন্তব্য করে ফের খবরের শিরোনামে বিজেপি-র তারকা সাংসদ কঙ্গনা রানাউত। ডেটিং অ্যাপে নাম লেখানো মহিলাদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি। লিভ ইন সম্পর্কেও তীব্র আপত্তি জানালেন কঙ্গনা। (Bollywood News)

Continues below advertisement

বর্তমান দিনে সম্পর্কের যে সমীকরণ, তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন কঙ্গনা। তাঁর মতে ‘ডেটিং’, ‘লিভ ইন’ সম্পর্ক ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী। এসবের জন্যই ভারতীয় সংস্কৃতির অবক্ষয় হচ্ছে বলে দাবি করলেন কঙ্গনার। একটি সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করলেন তিনি। (Kangana Ranaut)

কঙ্গনা কোনও ডেটিং অ্যাপে প্রোফাইল খুলবেন কি না, জানতে চাওয়া হয়। জবাবে নায়িকা-সাংসদ বলেন, “কখনও ডেটিং অ্যাপে নাম লেখাতে চাইনি আমি। ওই সংস্কৃতি আমাদের সংস্কৃতিকে নর্দমায় পরিণত করেছে। প্রত্যেকেরই কিছু চাহিদা আছে, সেটা অর্থনৈতিক হতে পারে, শারীরিক হতে পারে, অন্য কিছুও হতে পারে। প্রত্যেক নারী, প্রত্যেক পুরুষের চাহিদা আছে। কিন্তু সেই সব চাহিদা কী করে পূরণ হবে? সেটা বড় প্রশ্ন।”

Continues below advertisement

কঙ্গনার কথায়, “কী করে চাহিদা মেটাব? রুচিপূর্ণ ভাবে, না কি অশোভনীয় আচরণে? যেমন ধরুন, প্রতি রাতেই কারও খোঁজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়া। আজকাল এটাই ডেটিং। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। আমার জন্য এটা খুবই জঘন্য আচরণ। এই ধরনের লোকজনের ধারেকাছেও যেতে পারব না আমি।”

কিন্তু নিজের মতো করে জীবনযাপনের অধিকার তো সকলের রয়েছে, কঙ্গনাকে পাল্টা যুক্তি দেন সঞ্চালক। এতে কঙ্গনা বলেন, “ট্রোলড হওয়ার ভয়ে এসব বলছেন। নিজের ভাই বা বোন এসব করুক, সেটা কি চাইবেন? আমার মনে হয়,কোনও সমস্যা থাকলে তবেই কেউ ডেটিং অ্যাপে যায়। যারা অন্যের কাছ থেকে বৈধতা চায়, যাদের আত্মবিশ্বাস নেই, তারাই যায়। অফিসে, কলেজে, অথবা মা-বাবার দেখে দেওয়া মানুষের মধ্যেই সঙ্গী পাওয়া যায়।”

জীবনে যাঁরা অসফল, তাঁরা ডেটিং অ্যাপে সঙ্গী খোঁজেন বলেও মত কঙ্গনার। তাঁর বক্তব্য, “আমার মতো কাউকে ডেটিং অ্যাপে পাবেন না। সব লুজ়ারে ভর্তি, যারা দীবনে কিছু করতে পারেনি, কিছু অর্জন করেনি। কোথাও কাউকে না পেলে ডেটিং অ্যাপে হাজির। কেমন চরিত্র ভাবুন।” লিভ ইন সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কঙ্গনা। তাঁর কথায়, “আমাদের সমাজে বিয়ে অত্যন্ত জরুরি। স্ত্রীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকার প্রতিশ্রুতি দেন স্বামী। আজকাল লিভ-ইন সম্পর্কের কথা শোনা যায়। আমার জীবনেও সম্পর্ক এসেছে। অন্যদের লিভ-ইন সম্পর্কে দেখেছি। কিন্তু আমি বলছি শুনুন, এই সব মেয়েদের জন্য ঠিক নয়। গর্ভপাত করানোর সময় কে পাশে থাকবে? লিভ-ইনে গর্ভবতী হয়ে পড়লে, কে খেয়াল রাখবে? পুরুষরা তো শিকারি। গর্ভবতী করে পালিয়ে যাবে।” ভারতের মতো দেশে লিভ-ইন সম্পর্কে আইনি নিষেধাজ্ঞা নেই যদিও। বরং লিভ-ইন সম্পর্ক আইনত বৈধ। সেকথা স্মরণ করালে কঙ্গনা বলেন, “যতই ক্ষমতায়ন হোক না কেন, যতই বই পড়ি, যত সমীক্ষাই হোক, ছেলেদের মতো পৃথকীকরণ করতে পারে না মেয়েরা।” 

তবে সাংসদ কঙ্গনা ডেটিং এবং লিভ-ইনের বিরোধিতা করলেও, তিনি নিজে একসময় লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন। অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির সঙ্গে দীর্ঘদিন একছাদের নীচে বাস করেন তিনি। আদিত্য সেই সময় বিবাহিত ছিলেন, সন্তানও ছিল তাঁর। আদিত্য নিজে সেকথা স্বীকার করেছিলেন। আদিত্য জানান, তিন বছর এক বন্ধুর বাড়িতে কঙ্গনার সঙ্গে লিভ-ইন করেন তিনি। নিজেদের আলাদা বাড়িও তৈরি করছিলেন তিনি। বাড়ি কেনার জন্য কঙ্গনাকে ৫৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন আদিত্য। পরে অন্য অভিনেতার সঙ্গে কঙ্গনার গোপন মেসেজ দেখে তিনি নায়িকার প্রতি হিংস্র আচরণ করেন বলেও মেনে নিয়েছিলেন আদিত্য। কঙ্গনা তাঁর উপর 'কালাজাদু' করেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন নায়িকার আর এক প্রাক্তন অধ্যয়ন সুমনও।