মুম্বই:তিনি ইসলামে ধর্মান্তরিত না হতে চাওয়ার কারণেই নাকি তাঁর ষোলো বছরের মেয়ে ও নয় বছরের ছেলের উত্তরাধিকার তাঁকে দিতে অস্বীকার করা হচ্ছে। সম্প্রতি এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন প্রয়াত সঙ্গীত পরিচালক ওয়াজিদ খানের স্ত্রী কমলরুখ খান। আর এই ব্যাপারে কমলরুখের পাশে দাঁড়ালেন কঙ্গনা রানাউত। কমলরুখকে এভাবে হেনস্থা করে কার্যক্ষেত্রে পার্সিদের অপমান করা হচ্ছে বলে মনে করছেন কঙ্গনা। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। ঘটনাচক্রে কমলরুখ ধর্মে পার্সি।



কঙ্গনা টুইট করেছেন, আমাদের দেশের সত্যিকারের সংখ্যালঘু পার্সিরা। তাঁরা এই দেশ আক্রমণ করার জন্য আসেননি। এই দেশের সঙ্গে তাঁরা একাত্ম হয়ে গিয়েছেন। এ দেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে, অর্থনীতির উন্নয়নে তাঁদের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। আমার বন্ধুর পার্সি স্ত্রী কমলরুখকে যেন হেনস্থার মুখে আর না পড়তে হয়, সে ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের আবেদন জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে প্রশ্ন করতে চাই, যে সংখ্যালঘুরা সহানুভূতি কুড়োনোর নাটক, মুণ্ডচ্ছেদ, দাঙ্গা, ধর্মবদল করায় না,তাদের সুরক্ষায় কী করা হচ্ছে? পার্সিদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো কমছে।
প্রসঙ্গত, মে মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ওয়াজিদ খানের। ওয়াজিদ ও তাঁর ভাই সাজিদ মিলে জুটিতে বহু ফিল্মে সঙ্গীত পরিচালনার কাজ করেছেন। প্রয়াত সঙ্গীত পরিচালকের স্ত্রী কমলরুখ খান পেশায় একজন হিপনোথেরাপিস্ট। তিনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টে জানিয়েছেন, কলেজে পড়ার সময় থেকেই ওয়াজিদ খানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়। বছর দশেক আগে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট-এ তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের পরও তাঁরা নিজ নিজ ধর্মাচার পালন করবেন, এই বোঝাপড়াতেই তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাঁকে ধর্ম পরিবর্তন করার জন্য চাপ দেওয়া শুরু হয়। তিনি ধর্ম বদলে ইসলাম গ্রহণ করতে না চাওয়ায় তাঁর ও ওয়াজিদের সম্পর্কে অবনতি হতে শুরু করে। কমলরুখ জানিয়েছেন, এমনকী ওয়াজিদের মত্যুর পরও তাঁর পরিবারের তরফে এখনও তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।
কমলরুখের সংযোজন, ১৭ বছরের বিবাহিত জীবনটা কেমন কেটেছে তা বলে বোঝাতে পারব না। এ ভাবে ধর্মান্তকরণের জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকা যে কেমন মানসিক অত্যাচার, তা বলে বোঝাতে পারব না। আর এখন আমার সন্তানদের যেভাবে উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চাওয়া হচ্ছে, সেটাও অন্যায়। আমি বলতে চাই কোনও ধর্মই এটা করতে শেখায় না। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আর এই প্রসঙ্গেই কমলরুখ ধর্মান্তকরণ বিরোধী বিল আনার পক্ষেও মুখ খোলেন।এ বার তার পাশে দাঁড়ালেন কঙ্গনা।