মুম্বই: স্বজনপোষণ বিতর্কে নিজের অবস্থানের সমর্থনে তারকা সন্তানদের রেসের ঘোড়ার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন সেফ আলি খান, যাঁদের জন্মের আগেই বেছে নেওয়া হয় তারকা হওয়ার জন্য। ঠিক একদিন পর কঙ্গনা রানাওয়াতও লিখলেন খোলা চিঠি। তাতে তিনি প্রশ্ন করলেন, রেসের ঘোড়ার সঙ্গে শিল্পীদের তুলনা সত্যিই করা যায় কিনা।

মণিকর্ণিকা: দ্য রানি অফ ঝাঁসির শ্যুটিংয়ে মাথায় চোট পেয়ে কঙ্গনা এই মুহূর্তে সিনেমার বাইরে। স্বজনপোষণ বিতর্কের শুরু করেছেন তিনিই। কফি উইথ কর্ণে কর্ণ জোহরকে তিনি বলিউডে স্বজনপোষণের ধারক বাহক আখ্যা দেন। সেই অপমান কর্ণ ভোলেননি। আইফার মঞ্চে এ নিয়ে তিনি, সেফ আলি খান ও বরুণ ধবন কঙ্গনাকে নিয়ে হাসিঠাট্টায় ফেটে পড়েন। তারপর অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তা নিয়ে তুলকালাম হওয়ায় ক্ষমা চেয়ে নেন বরুণ, কর্ণ। সেফও জানান, কঙ্গনাকে ফোন করে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। কিন্তু এ নিয়ে তিনি একটি খোলা চিঠি লেখেন, তাতে বলেন, বলিউড নয়, স্বজনপোষণের জন্ম দিয়েছে মিডিয়া। তারকাদের সন্তানসন্ততিকে তারা এমনভাবে বারবার তুলে ধরছে, যে তারা সিনেমায় নামা ছাড়া আর কিছু ভাবতেই পারছে না। তাঁর কথায়, তারকা সন্তানরা বড় হয়ে যাতে তারকাই হয়, তাদের জন্ম হয় সে কথা ভেবেই। তাই তারা তুলনীয় রেসের ঘোড়ার সঙ্গে।

জবাবে কঙ্গনার প্রশ্ন, এই তুলনা কী করে সম্ভব! একজন শিল্পীর প্রতিভা, তাঁর কঠোর পরিশ্রম, অভিজ্ঞতা, মনঃসংযোগ, শৃঙ্খলা ও ভালবাসা কী পারিবারিক জিনের মাধ্যমে পাওয়া যায়? তাই যদি হয়, কঙ্গনা নিজে তো হিমাচল প্রদেশের চাষী হতেন। কোন জিন তাঁর মধ্যে নিজের চারপাশকে একাগ্রভাবে লক্ষ্য করা, তাকে নিজের মত করে তুলে ধরা ও নিজের আগ্রহকে বাস্তবায়িত করার অধ্যবসায় যোগাল!

সেফ তাঁর চিঠিতে লিখেছেন ইউজেনিকসের কথা, যার অর্থ চাহিদামত মানবসন্তান পাওয়ার জন্য নিয়ন্ত্রিত প্রজনন। কিন্তু কঙ্গনার বক্তব্য, এমন কোনও ডিএনএর সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি, যা মানুষের মধ্যে বিবেকানন্দ, আইনস্টাইন বা লিওনার্ডো দা ভিঞ্চির মত কালজয়ী প্রতিভার জন্ম দেয়।

সেফ যে বলেছেন, তারকা সন্তানদের নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের আগ্রহও বলিউডে স্বজনপোষণের অন্যতম কারণ, তার জবাবে কঙ্গনা লিখেছেন, একদম ঠিক, ধনী ও বিখ্যাতদের জীবন নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু সে জন্য স্বজনপোষণ মেনে নেওয়া যায় কি? যারা মনে করে এতে তাদের সুবিধে, তারাই মেনে নেয় স্বজনপোষণ। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশে, যেখানে বহু মানুষের খাবার, মাথার ওপর ছাদ, পরনের কাপড় নেই, শিক্ষা নেই, সেখানে এই স্বজনপোষণ মেনে নেওয়া হতাশাজনক ছাড়া কিছু নয়। এই বিশ্ব আদর্শ কোনও জায়গা নয়, তা হয়তো কখনও হবেও না। কিন্তু সে জন্যই তো শিল্প আছে। এক অর্থে আমরাই তো সেই আশার ধারক বাহক।