কলকাতা: পঞ্চাশতম ছবিতে জুটি বাঁধছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) ও ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna Sengupta)। পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের (Kaushik Ganguly) আগামী ছবি 'অযোগ্য' মুক্তি পাবে ৭ জুন। গতকাল সেই ছবির প্রথম গান আসে প্রকাশ্যে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই গান পোস্ট হতেই নেটিজেনদের একাংশ গানের নামে একটি নির্দিষ্ট বানান নিয়ে আপত্তি তোলেন প্রবল। গানের নাম রাখা হয় 'তুই আমার হোবি না'। এই 'হোবি' বানানেই ওঠে আপত্তি। খানিক সেই বিতর্কের চাপেই শেষ পর্যন্ত বানান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। ব্যবহার করা হল ঊর্ধ্বকমা। ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সে কথা জানান পরিচালক।
বদলে গেল 'হোবি' বানান, রাখা হল 'হ'বি'
সোশ্যাল মিডিয়ায় খানিক তর্কবিতর্ক, ক্ষোভপ্রকাশের পর অবশেষে বদলানো হল 'তুই আমার হোবি না' গানের শিরোনামের বানান। পরিবর্তিত নাম হল 'তুই আমার হ'বি না'। প্রথম বানানের 'যুক্তি' দিয়ে পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় একটি পোস্ট করেছিলেন। আজ নতুন বানান নিয়েও একটি পোস্ট করেন। সেখানে লেখেন, 'উচ্চারণ ধরে বানান নিয়ে কায়দা করতে গিয়ে একটা ভুল হয়ে গেছে আমার। 'দেখ' আর 'দেখো'-র মতো 'হবি'-কে 'হোবি' লিখে বাংলা ভাষা ভালবাসেন, এরকম মানুষদের কষ্ট দিতে চাইনি বিশ্বাস করুন। এটাও বিশ্বাস করবেন যে ‘হবি’ বানানটা আমরা ছোটবেলা থেকে জানি। ছোটবেলায় যখন 'ব্যথা' আর 'ব্যাথা' বানান নিয়ে বিভ্রান্ত হতাম তখন থেকে জানি। বুদ্ধদেব বসু মহাশয় উচ্চারণের অদৃশ্য 'ও'কারের খপ্পর থেকে বাঁচাতে ঊর্ধ্ব কমার প্রয়োগ করেছিলেন। আমারাও প্রথমেই লিখতে পারতাম 'তুই আমার হ’বি না'। তা না করে নিরাকার ঊর্ধ্ব কমাকে 'ও'কার করে, ‘হোবি’ লিখে আমাদের কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষী শ্রোতাকে দুঃখ দিয়ে ফেলেছি। আপনাদের / তোমাদের মতামতকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করলাম। বাংলা আমারও জীবন ও ভাষা। ঠিক বা ভুল যাবতীয় গবেষণার চেষ্টা না করলে 'গাভাস্কার' 'গাওস্কর' হতই না। 'কাহিনী' বদলে 'কাহিনি' হয় না। আপাতত 'অযোগ্য' বানান কাণ্ডে ইতি টানতে ‘হোবি’ বদলে 'হ’বি' করলাম। এবার গানটা শুনুন, শোনান। রবীন্দ্রনাথ ছন্দের খাতিরে লিখেছিলেন, 'বাজিল দীপক রাগিনী', অথচ দীপক একটি রাগ। কবিতার স্বার্থে রসিকজনেরা তাতে গা করেননি। আপনারাও না হয় এ যাত্রায় রাগ সরিয়ে, মার্জনা করে বলুন, 'রাগিনি'। 'অযোগ্য' আসছে ৭ই জুন।'
মঙ্গলবার দুপুরে এই বিষয়ে এই গানের নির্মাতা রণজয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবিপি লাইভ। তিনি বলেন, 'এই ব্যাপারটায় অবাক হয়েছি। হাসিও পাচ্ছে। তবে খুব কম সংখ্যক মানুষই এই গানের বানান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বাকিরা গানটা শুনেছেন। গান নিয়ে আলোচনা হোক, সেটা অন্য বিষয়ে যাতে সরে না যায় তাই বানান বদলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিচালক ও প্রযোজনা সংস্থা। গানটা ভাল লাগল না খারাপ, সেই নিয়ে মানুষ কথা বলুন, এটাই চাই।'
এই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তারকা গায়িকা শ্রেয়া ঘোষাল। প্রথমবার তাঁর সঙ্গে কাজ করলেন রণজয়। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সঙ্গীত পরিচালক বলেন, 'এত উচ্চতায় পৌঁছেও যে একজন শিল্পী হিসেবে এতটা সহযোগী, মাটির মানুষ হতে পারেন সেটা দেখাও খুবই অনুপ্রেরণাদায়ক। শ্রেয়া ঘোষালের সঙ্গে কাজ করে অনুপ্রাণিত হয়েছি। মজার বিষয় যখন এই গানটা তৈরি করেছিলাম, মনে মনে ভয়েস কাস্টিংয়ে ওঁর কথা ভেবেছিলাম। সেটাই বাস্তবায়িত হয়। এপ্রিলে রেকর্ড করি গানটি। ওঁর কণ্ঠ অন্য মাত্রা দিয়েছে গানটিকে।' প্রসঙ্গত, এই গানের মহিলা কণ্ঠে শোনা গেছে শ্রেয়ার গলা। এই গান পুরুষ কণ্ঠেও তৈরি হয়েছে বলে জানান রণজয়।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।