কলকাতা: তখন সদ্য মুক্তি পেয়েছে, 'লক্ষ্মী ছেলে'। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের (Kaushik Ganguly)-র পরিচালনায় এই ছবিতে মুখ্যভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তাঁরই পুত্র। উজান গঙ্গোপাধ্যায় (Ujaan Ganguly)। সেই ছবির জন্য সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে, পরিচালক অভিনেতা বাবা কিন্তু ছেলেকে অভিনেতা হিসেবে ন., অনেক বেশি নম্বর দিয়েছিলেন, কাহিনীকার হিসেবে। পরিচালক হিসেবেও। এবিপি লাইভ বাংলা (ABP Live Bangla)-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, উজান নাকি এমন অনেক ভাল ভাল চিত্রনাট্য লিখেছেন, যেগুলো সবার অলক্ষ্যেই রয়েছে। সেগুলি থেকে নাকি দুর্দান্ত ছবি ও হতে পারে। উজান যদি অনুমতি দেন, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় নিজেই উজানের লেখা নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। পরবর্তীতে উজানকে এই কথা বলায়, উজান অবশ্য স্বভবোচিত সলজ্জ ভঙ্গিতেই বলেছিলেন, বিষয়টা তেমন নয়। বাবা বাড়িয়েই বলেছেন। তবে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় যে ছেলেকে চিনতে ভুল করেননি, তার প্রমাণ আজকের খবর।
দীর্ঘদিন থেকেই পরিচালনার কাজে হাত দেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন উজান। ইতিমধ্যেই একটি বাংলা সিনেমার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে ফেলেছেন তিনি। তবে তার আগেই, বলিউডে পা রাখলেন উজান। ‘কুরক্ষেত্র’ নামে একটি সিরিজ় তৈরির ভার তাঁর কাঁধে। তবে কাজটি নতুন নয়, এই কাজের বীজ বপন করা হয়েছিল বছর ৩ আগেই। সেই সময়ে বিদেশে পড়াশোনা করছিলেন উজান। ওটিটি সংস্থাটিই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল কাজের জন্য। অবশেষে সেই কাজ মুক্তি পাচ্ছে ১০ অক্টোবর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর শেয়ার করে, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, 'সন্তান কোনোদিনই বাবা মায়ের কাছে বড় হয় না। তাই ছোটবেলার স্কুলের প্রথম দিনের আবেগ আর গ্র্যাজুয়েশনের ডিগ্রি পাওয়ার আনন্দের কোনো ফারাক পাইনি। আজ সকালে উঠে নেটফ্লিক্স সিরিজ কুরুক্ষেত্রের প্রথম ঘোষণার পোস্টারের নিচে লেখা ‘লিরিক্স গুলজার’ আর তার ঠিক পাশেই ‘রাইটার ডিরেক্টর উজান গঙ্গোপাধ্যায়’ নামটা দেখে বাবা মায়ের মনে যা ঘটতে পারে ঠিক তাই হচ্ছে! আমি, চূর্ণী তো চিত্রনাট্য, পরিচালনা ও অভিনয় করছি; আজ উজানও অভিনয়ের গন্ডি পেরিয়ে চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় তার দক্ষতা যাচাই করার বিরাট সুযোগ পেয়েছে। দীর্ঘ ৩ বছর মুখ বুজে অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল আজকের এই দিনটা। বিশেষ করে বলতে হয় হাই টেক ফিল্ম অ্যান্ড ব্রডকাস্টিং আকাদেমি প্রাইভেট লিমিটেডের কথা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দক্ষ অ্যানিমেটরদের সাথে নিজেদের সুদক্ষ ও প্যাশনেট টিমের নিরলস একাগ্রতার জন্য আজ বাস্তব হলো এই স্বপ্ন। ওরা কলকাতার গর্ব। অ্যানিমেশন হোক বা লাইভ অ্যাকশন ছবি, নেপথ্যে অজস্র মানুষের যৌথ লড়াই থাকে। তাঁদের প্রত্যেককে আমার ও চূর্ণীর তরফ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা উজানকে আশীর্বাদ করুন যাতে ও ওর স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে পারে ও নিজেকে আজীবন উজাড় করে দিতে পারে বিনোদনের কর্মজীবনে।'